/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/07/animal-print-fashion-2025-10-07-18-15-44.jpg)
Animal Print Fashion: টলি থেকে হলি, পোশাকের ফ্যাশনে চিতাবাঘ, চিতা আর জাগুয়ারের ছোপ দাগটা সর্বত্রই দেখা যায়।
Animal Print Fashion: ফ্যাশনের জগতে কিছু জিনিস কখনও পুরোনো হয় না। তারই একটি হল অ্যানিমাল প্রিন্ট ফ্যাশন (Animal Print Fashion)। চিতাবাঘের মসৃণ দাগ, চিতার মিনি স্পট বা জাগুয়ারের বড় গোলাপি রোসেট— প্রতিটি প্রিন্টের মধ্যেই আছে এক আলাদা স্টাইল, ব্যক্তিত্ব এবং সাহসিকতার ছোঁয়া। গত শতাব্দীগুলিতে পশুর ছাপ শুধু পোশাক নয়, ছিল ক্ষমতার প্রতীক। আফ্রিকান রাজা বা ইউরোপীয় শিকারি— সবাই চিতাবাঘের চামড়া পরতেন নিজের মর্যাদা ও আধিপত্য বোঝাতে।
হলিউড থেকে র্যাম্প – Animal Print এর গ্ল্যামারাস ইতিহাস
১৯৫০-এর দশকে এলিজাবেথ টেলর বা মেরিলিন মনরোর মতো তারকারা যখন লেপার্ড প্রিন্ট কোট পরে পর্দায় হাজির হলেন, তখন থেকেই পশুর ছাপ গ্ল্যামারের সমার্থক হয়ে ওঠে। পরে রবার্তো ক্যাভালি, ডলস অ্যান্ড গাব্বানা বা গুচ্চি-র মতো ডিজাইনাররা এই প্রিন্টকে তাঁদের ফ্যাশনের অংশ বানিয়ে ফেলেন। তাঁদের হাত ধরেই অ্যানিমাল প্রিন্ট (Animal Print) পরিণত হয় আধুনিক নারীসত্তার আত্মবিশ্বাসী প্রকাশে। যা বোল্ড, ওয়াইল্ড এবং এলিগ্যান্ট (bold, wild, yet elegant)।
আরও পড়ুন- চশমাকে বিদায় জানান, এই কায়দায় পরিষ্কার দৃষ্টি ফিরে পান সহজেই
চিতাবাঘ (Leopard): মার্জিত ও বহুমুখী
চিতাবাঘের ছাপ দেখতে গোলাপের মতো, কিন্তু মাঝখানে কোনও কালো বিন্দু নেই। এই ডিজাইন পোশাকে আনে এক ধরণের সৌন্দর্য ও পরিশীলতা। স্কার্ট, ব্যাগ, সিল্ক শার্ট, হাই হিলে এই ডিজাইন দেখা যায়। যা এলিগেন্ট ও ক্লাসি লাগে। চিতাবাঘ প্রিন্টের সঙ্গে সাদা বা কালো সলিড কালার বেছে নেন অনেকেই।
আরও পড়ুন- রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী চিন্ময় চট্টোপাধ্যায়, ৯৬তম জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি
চিতা (Cheetah): সরল ও আধুনিক
চিতার ছাপগুলো ঘন কালো দাগের মতো, সমান ব্যবধানে সাজানো। এগুলো দেয় এক তরুণ ও স্পোর্টি ভাইব। টি-শার্ট, স্নিকার্স, জ্যাকেটে ক্যাজুয়াল, কুল ও অ্যাক্টিভ লাগে এই ডিজাইনে। চিতা প্রিন্ট টপের সঙ্গে ডেনিম বা নিউট্রাল বটম পরলে অনেককেই দারুণ লাগে।
আরও পড়ুন- সামান্য এই টিপসেই বাজিমাত, দূর করুন আপনার দুর্ভাগ্য!
জাগুয়ার (Jaguar): সাহসী ও নাটকীয়
জাগুয়ার প্রিন্ট এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সাহসী ও নাটকীয়। প্রতিটি রোসেটে থাকে কেন্দ্রীয় বিন্দু, যা তৈরি করে পাওয়ারফুল স্টেটমেন্ট লুক (Powerful Statement Look)। লং কোট, ইভনিং গাউন, লাল-গালিচা ফ্যাশনে এই ডিজাইন লাগে বোল্ড এবং গ্ল্যামারাস। অতিরিক্ত অ্যাকসেসরিজ না নিয়ে শুধু জাগুয়ার প্রিন্টই তাই হয়ে ওঠে অনেকের স্টাইল স্টেটমেন্ট।
আরও পড়ুন- দিঘার পথেই দুর্গ! পশ্চিম মেদিনীপুরের রহস্যঘেরা কুরুম্বেরা ফোর্টের ইতিহাস শুনলে অবাক হয়ে যাবেন
একসময় অ্যানিমাল প্রিন্ট (Animal Print) ছিল বিলাসিতার প্রতীক, কিন্তু আজ তা হাই স্ট্রিট (High Street) থেকে অনলাইন স্টোরস (Online Stores)— সব জায়গায় পাওয়া যায়। ফাস্ট ফ্যাশন (Fast Fashion) ব্র্যান্ডগুলো এই প্রিন্টকে সাধারণের কাছে নিয়ে এসেছে, আর সোশ্যাল মিডিয়া দেখিয়েছে, কত সহজে এগুলো স্টাইলে ব্যবহার করা যায়। আজকাল লেপার্ড স্লিপ ড্রেস বা চিতা প্রিন্ট স্নিকার্স (Leopard Slip Dress বা Cheetah Print Sneakers) সাধারণ ক্রেতাদের ফ্যাশন লিস্টেও জায়গা করে নিয়েছে।
আরও পড়ুন- পুজোর ছুটিতে ঘুরে আসুন ঝান্ডি, মোহময়ী দৃশ্য আর কাঞ্চনজঙ্ঘা মন ভরাবেই
অন্য প্রাণীর ছাপের জনপ্রিয়তাও বাড়ছে ফ্যাশনে। সাপের চামড়া বা কুমিরের টেক্সচারযুক্ত ব্যাগ ও বুট এখনও লাক্সারি ট্রেন্ডে আছে। জেব্রা প্রিন্টস (Zebra Prints) এনে দিচ্ছে সাদা-কালোর গ্রাফিক কনট্রাস্ট, আবার কাউ প্রিন্টস (Cow Prints) তাদের কৌতুকপূর্ণ আবেদন দিয়ে জেন-জেড (Gen-Z)-এর ফ্যাশনে নতুন ট্রেন্ড তৈরি করেছে। এভাবে অ্যানিমাল প্রিন্ট কেবল একটি ফ্যাশন নয় — এটি একধরনের সেল্ফ এক্সপ্রেশন হয়ে উঠেছে। এ যেন আত্মবিশ্বাস, স্বাধীনতা এবং বন্যতার ছোঁয়া দেয়। সময়, প্রজন্ম বা দেশ বদলালেও এই প্রিন্টের আবেদন কমে না। চিতাবাঘ, চিতা বা জাগুয়ার— যে প্রিন্টই বেছে নিন, মনে রাখবেন যে- এগুলো শুধু কাপড় নয়, একধরনের স্টেটমেন্ট। যা বলে 'আই অ্যাম বোল্ড, আই অ্যাম ফিয়ার্স, আই অ্যাম মি!'