Vinay Basu: অগ্নিযুগের বিপ্লবী! বিবাদী বাগের বি তাঁর নামের আদ্যক্ষর থেকেই নেওয়া

Vinay Basu: ১৯০৮ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর মুন্সিগঞ্জ জেলার রোহিতভোগ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ঢাকায় হেমচন্দ্র ঘোষের মুক্তি সঙ্ঘ এবং পরে নেতাজির বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সের সদস্য ছিলেন।

Vinay Basu: ১৯০৮ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর মুন্সিগঞ্জ জেলার রোহিতভোগ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ঢাকায় হেমচন্দ্র ঘোষের মুক্তি সঙ্ঘ এবং পরে নেতাজির বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সের সদস্য ছিলেন।

author-image
IE Bangla Lifestyle Desk
New Update
Vinay Basu

Vinay Basu: বিপ্লবী বিনয়কৃষ্ণ বসু।

Freedom Movement: ১৯৩০ সালের ২৯ আগস্ট। ঠিক ৯৫ বছর আগের কথা। দিনটা ছিল শুক্রবার। সকাল তখন প্রায় নয়টা। ঢাকা মিটফোর্ড মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে চারপাশে ব্যস্ত পরিবেশ। রোগীদের ভিড়, স্ট্রেচারে করে এক ওয়ার্ড থেকে অন্য ওয়ার্ডে রোগী সরানো—সবই যেন প্রতিদিনের মতোই ছিল। তবে সেদিনের নিরাপত্তা ছিল অস্বাভাবিকভাবে কড়া। কারণ, পুলিশের আইজি মিস্টার লোম্যান এবং তাঁর সহকারি মিস্টার হাডসনের নৌ-বিভাগের অসুস্থ পুলিশ সুপার বার্ডকে দেখতে আসার কথা ছিল। ব্রিটিশ প্রশাসন কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি ছিল না। 

লোম্যান হত্যাকাণ্ড: মিটফোর্ড হাসপাতালের গুলির ঝড়

Advertisment

ঠিক সকাল ৯টার সময় লোম্যান হাসপাতালে পৌঁছন। মিনিট বিশেক কুশল বিনিময়ের পর তিনি বেরিয়ে আসেন বার্ডের ঘর থেকে। নামবেন বলে সিঁড়ির কাছে আসতেই হঠাৎ উপস্থিত হন এক তরুণ—সাদাসিধে ফতুয়া আর ধুতি পরা। মুহূর্তের মধ্যে ঝলসে ওঠে তাঁর রিভলভার। প্রথম গুলি লক্ষ্যভেদ করে লোম্যানকে মাটিতে ফেলে দেয়। দ্বিতীয় গুলি হাডসনের গায়ে লাগে, তিনি কাঁধ চেপে বসে পড়েন।

আরও পড়ুন- এভাবে ফ্রিজে রসুন রাখুন, সহজে নষ্ট হবে না, সতেজ থাকবে দীর্ঘদিন

Advertisment

ব্রিটিশ পুলিশের আতঙ্কের মধ্যে তরুণটি দৌড়ে পালান। তিনি ছিলেন ঢাকার মেডিক্যাল কলেজের মেধাবী ছাত্র বিনয়কৃষ্ণ বসু। হাসপাতালের প্রতিটি গলি ও ছাদ ছিল তাঁর চেনা। সুকৌশলে তিনি হাসপাতালের বাইরে বেরিয়ে যান। এক গৃহস্থের বাড়ি পেরিয়ে সদর রাস্তায় উঠে একটি ঘোড়ার গাড়িতে চেপে বক্সিবাজারের দিকে চলে যান।

আরও পড়ুন- পুজো স্পেশাল রেসিপি! বাসন্তী পোলাওয়ের সঙ্গে চিকেন কষা বানান সহজে

ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব হয়ে যায় ব্রিটিশ প্রশাসন। সংবাদ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের কন্ট্রাক্টর সত্যেন সেন তাঁকে চিনে ফেলায় শীঘ্রই বিনয়ের ছবি ছাপিয়ে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়—প্রথমে ৫,০০০ টাকা, পরে তা বাড়িয়ে ১০,০০০ টাকা। কিন্তু বিনয় ছিলেন পুলিশের নাগালের বাইরে।

আরও পড়ুন- মেহেন্দি লাগবে না, এই বীজগুলো চায়ের সঙ্গে মিশিয়ে লাগান, চুল কালো হয়ে যাবে

ঘটনার খবর শুনে কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন— 'ধন্যি ছেলে, দেখিয়ে গেছে আমরাও জবাব দিতে জানি।'
এই প্রশংসাই বুঝিয়ে দেয়, বিপ্লবীদের সাহস কেমনভাবে সমকালীন সমাজকে নাড়া দিয়েছিল। এরপর বিপ্লবীদের পরবর্তী লক্ষ্য ছিলেন কারা কর্তৃপক্ষের কুখ্যাত ইন্সপেক্টর জেনারেল কর্নেল এন. এস. সিম্পসন। তিনি বন্দিদের ওপর ভয়ংকর নির্যাতন চালাতেন। তাঁকে হত্যার সঙ্গে সঙ্গেই ব্রিটিশ সরকারের অন্তরে ত্রাস সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল—সিম্পসনকে গুলি করা হবে কলকাতার সচিবালয়, রাইটার্স বিল্ডিং-এ। 

আরও পড়ুন- এই ৫ জিনিস কাছে থাকলে, কয়েক দিনের মধ্যেই খুশকি হবে দূর!

১৯৩০ সালের ৮ ডিসেম্বর। বিনয় বসু, বাদল গুপ্ত ও দীনেশ গুপ্ত ইউরোপীয় বেশে রাইটার্স বিল্ডিং-এ প্রবেশ করেন। মুহূর্তের মধ্যেই সিম্পসন গুলিতে নিহত হন। সঙ্গে সঙ্গেই টেগার্টের নেতৃত্বে পুলিশ গুলি চালায়। সংঘর্ষে কয়েকজন অফিসার আহত হলেও তিন বিপ্লবী কোণঠাসা হয়ে পড়েন। বাদল গুপ্ত পটাশিয়াম সায়ানাইড খেয়ে আত্মহত্যা করেন। বিনয় ও দীনেশ আত্মঘাতী গুলিতে আহত হন। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বিনয় ও দীনেশকে ভর্তি করা হয়েছিল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। তখনও বিনয়ের চেতনা ছিল প্রবল। সিআইডি তারমধ্যেই জেরা চালাচ্ছিল। জানতে চাইছিল—কোথায় ছিলেন, অস্ত্র পেলেন কোথা থেকে? জবাবে বিনয় বলেছিলেন—'আমি আপনাদের ৫,০০০ টাকা বাঁচিয়ে দিলাম, তার চেয়ে বেশি আর কী চাইতে পারেন আমার কাছ থেকে?'

ব্রিটিশরা আশা করেছিল তিনি সুস্থ হলে তথ্য দেবেন। কিন্তু বিনয় নিজের ক্ষতকে ইচ্ছাকৃতভাবে সংক্রমিত করে তোলেন। ব্যান্ডেজ আলগা করে ক্ষতস্থানে আঙুল ঢুকিয়ে দেন, ফলে ক্ষত সেপটিক হয়ে যায়। কয়েকদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে ১৯৩০ সালের ১৩ ডিসেম্বর এই অকুতোভয় বিপ্লবী শহিদ হন। 

freedom Movement