Glowing eyes at night: কিছু প্রাণীর চোখ রাতেও জ্বলে, কারণটা জানলে অবাক হবেন!

Glowing eyes at night: রাতে বিড়াল, কুকুর, হরিণের চোখ কেন টর্চের আলোয় জ্বলজ্বলে দেখায়? এর পিছনে আছে এক বিশেষ কারণ। জেনে নিন সেই বিজ্ঞানসম্মত কারণ কী।

Glowing eyes at night: রাতে বিড়াল, কুকুর, হরিণের চোখ কেন টর্চের আলোয় জ্বলজ্বলে দেখায়? এর পিছনে আছে এক বিশেষ কারণ। জেনে নিন সেই বিজ্ঞানসম্মত কারণ কী।

author-image
IE Bangla Lifestyle Desk
New Update
Glowing eyes at night

Glowing eyes at night: এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা অনুসারে, ট্যাপেটাম লুসিডাম হল টিস্যুর একটি প্রতিফলিত স্তর, যা অনেক মেরুদণ্ডী প্রাণীর চোখে পাওয়া যায়। (সূত্র: উইকিমিডিয়া কমন্স)

Glowing eyes at night: আপনি কি কখনও রাতে হাঁটার সময় টর্চ ফেলতেই অন্ধকার থেকে দুটি সবুজ বা সোনালি চোখ জ্বলজ্বল করে উঠতে দেখেছেন? এই দৃশ্য ভয়ংকর হলেও আসলে এর পিছনে রয়েছে এক আশ্চর্য বৈজ্ঞানিক কারণ। নিশাচর প্রাণীদের চোখে থাকে একটি বিশেষ প্রতিফলিত স্তর, যাকে বলে ট্যাপেটাম লুসিডাম (Tapetum lucidum)। ল্যাটিন এই শব্দটির অর্থ হল, 'উজ্জ্বল স্তর'।

Advertisment

এটি চোখের রেটিনার পিছনে থাকা প্রতিফলক স্তর। যখন চোখে আলো পড়ে, তখন এটি ওই স্তর থেকে প্রতিফলিত হয়ে আবার রেটিনায় ফিরে আসে। ফলে আলো ফোটোরিসেপ্টর কোষে দ্বিতীয়বার আঘাত হানে, যা কম আলোতেও প্রাণীদের ভালোভাবে দেখতে সাহায্য করে। এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা এবং ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের তথ্য অনুযায়ী, এই প্রতিফলন ক্ষমতা প্রাণীদের রাতের দৃষ্টি প্রায় ৫০% পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়।

আরও পড়ুন- এই পুজোয় খুশি হন শ্রীকৃষ্ণ, রক্ষা করেন ভক্তকে, কবে গোবর্ধন পূজা?

Advertisment

বেশিরভাগ নিশাচর প্রাণীর চোখে এই স্তর থাকে। যেমন— বিড়াল ও কুকুর। এদের চোখের দীপ্তি সাধারণত সবুজ-হলুদ বা নীল হয়। হরিণ ও র‍্যাকুন, এদের চোখে সোনালি বা উজ্জ্বল সাদা আভা দেখা যায়। অ্যালিগেটর, এদের চোখ থেকে লালচে বা কমলা আভা বেরোয়, যা অন্ধকারে আরও ভয়ংকর দেখায়। তবে আশ্চর্যের বিষয় হল, সব রাতজাগা প্রাণীর চোখে এই স্তর নেই। উদাহরণস্বরূপ, পেঁচা অন্ধকারে দারুণ দেখতে পেলেও তাদের চোখে ট্যাপেটাম লুসিডাম নেই। তাদের দৃষ্টি শক্তিশালী হয় বড় চোখ ও আলোকগ্রাহী বিশেষ কোষের জন্য।

আরও পড়ুন- বাঁশের এই ৮টি আশ্চর্যজনক তথ্য জানতেন? শুনলে চমকে যান অনেকেই

রাতে বা কম আলোতে শিকার করা, বিপদ এড়ানো কিংবা অন্ধকারে চলাফেরা করার জন্য প্রাণীদের এই ক্ষমতা থাকা অত্যন্ত জরুরি। ট্যাপেটাম লুসিডাম আলোকে ধরার 'দ্বিতীয় সুযোগ' দেয় এই সব প্রাণীদের। যা তাদের বেঁচে থাকার কৌশলের অংশ। 

মানুষের চোখে কেন নেই?

মানুষের চোখে এই স্তর নেই, তাই আমাদের চোখ রাতে জ্বলে ওঠে না। তবে ফ্ল্যাশ দিয়ে ছবি তুললে মানুষের চোখ লাল হয়ে যায়। এর কারণ ভিন্ন। ক্যামেরার ফ্ল্যাশ রেটিনার পিছনের রক্তনালিতে প্রতিফলিত হয়, ফলে চোখে লাল রং দেখা যায়। এটাকে বলে রেড-আই এফেক্ট (red-eye effect)। প্রাণীর প্রজাতি ও চোখের রাসায়নিক গঠনের ভেদে ট্যাপেটাম লুসিডাম থেকে বের হওয়া আলো ভিন্ন ভিন্ন রং ধারণ করে। কেউ সবুজ, কেউ নীল, কেউ লালচে আভা তৈরি করে।

আরও পড়ুন- দুর্ভাগ্য কমাতে, এই টিপসে সামাল দিন!

এই রংগুলোই রাতে ওই সব প্রাণীদের চোখ জ্বলজ্বল করার ভৌতিক পরিস্থিতি তৈরি করে। এই দীপ্তি বৈজ্ঞানিক ও ব্যবহারিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। যেমন— বন্যপ্রাণীর ফটোগ্রাফিতে আই-শাইন (eye-shine) ব্যবহার হয়। রাতে প্রাণী ট্র্যাক করার ক্ষেত্রে শিকারি ও গবেষকদের জন্য এই দীপ্তি সহায়ক। পোষা প্রাণীর চোখের দীপ্তি থেকে অনেক সময় তাদের স্বাস্থ্যের অবস্থা বোঝা যায়।

আরও পড়ুন- পুজোর উপহার! পাশে গুগল, ইচ্ছেমতো বানান ছবি

বিজ্ঞানীদের মতে, ট্যাপেটাম লুসিডাম এক চমৎকার জৈবিক অভিযোজন, যা প্রাণীদের রাতের অন্ধকারে স্পষ্টভাবে দেখতে সাহায্য করে। এই বৈশিষ্ট্যের জন্যই বিড়াল, কুকুর বা হরিণের চোখে রাতে জ্বলজ্বল আলো দেখা যায়। মানুষের চোখে না থাকলেও, এটি প্রকৃতির এক দুর্দান্ত বিস্ময়।

Glowing eyes