কাজ শুরু করে দিলেন প্রশান্ত কিশোর। তৃণমূল সূত্রের খবর, দলের একাধিক সাংসদ, সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে পরাজিত কয়েকজন প্রার্থী, একাধিক মুখপাত্র-সহ বেশ কিছু নেতার সঙ্গে বুধবার বৈঠক করেছেন ওই নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজিস্ট। লোকসভা নির্বাচনে কোন বিষয়গুলি তৃণমূলের বিপক্ষে গিয়েছে, তা নিয়ে আলোচনা করেছেন তিনি। প্রসঙ্গত, রাজ্যের বিজেপি-র উত্থানের প্রেক্ষিতে নীতিশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেডের সহ-সভাপতি প্রশান্তকে নিয়োগ করেছে তৃণমূল।
লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় অপ্রত্যাশিত ভাল ফল করেছে বিজেপি। মোট ৪২টি আসনের মধ্যে ১৮টি গিয়েছে গেরুয়া শিবিরের দখলে। তৃণমূলের আসন ৩৪ থেকে কমে হয়েছে ২২। দুই দলের প্রাপ্ত ভোটের ফারাক মাত্র ৩ শতাংশ।
তৃণমূল সূত্রের খবর, প্রশান্তের সঙ্গে বুধবারের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, উত্তর কলকাতার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়. দমদমের সাংসদ সৌগত রায়, কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র, হাওড়ার সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, বারাসতের সাংসদ কাকলী ঘোষ দস্তিদার-সহ একঝাঁক নেতা। রাজ্যসভায় তৃণমূল দলনেতা ডেরেক ও'ব্রায়েনও উপস্থিত ছিলেন বৈঠকে।
আরও পড়ুন, টিডিপি থেকে পদ্ম শিবিরে, দুই সাংসদের বিরুদ্ধে আয়কর দফতর, সিবিআই-এর তদন্ত
যদিও প্রকাশ্যে বৈঠকের বিষয়টি স্বীকার করতে চাননি তৃণমূল নেতৃত্ব। ডেরেক দাবি করেন, কোনও বৈঠক হয় নি। কাকলী জানান, তিনি ছেলের সঙ্গে ডিনার করতে গিয়েছিলেন।
তৃণমূলের এক সূত্রের কথায়, লোকসভা নির্বাচনে দলের বিপর্যয়ের নির্দিষ্ট কিছু কারণ রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক ভাষণেও তার উল্লেখ রয়েছে। সাংসদ ও প্রাক্তন সাংসদদের সঙ্গে প্রথম বৈঠকে কিশোর বুঝতে চেয়েছেন ঠিক কোন জায়গা থেকে তিনি শুরু করবেন। বৈঠকে উপস্থিত প্রত্যেককে কঠোরভাবে গোপনীয়তা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।
সূত্রের খবর, কয়েকজন সদ্য নির্বাচিত সাংসদকে উদ্দেশ্যেপ্রণোদিতভাবেই বৈঠকে ডাকা হয়নি। কারণ দলীয় নেতৃত্বের মতে, তাঁরা বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনের পরই তৃণমূল ছেড়ে জনপ্রতিনিধিদের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার হিড়িক পড়েছে। এর নেপথ্যে প্রধান ভূমিকা মুকুল রায়ের।
লোকসভা নির্বাচনে বিপর্যয়ের পর তৃণমূল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দলীয় মুখপাত্রের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হবে। জাতীয় স্তরে এই দায়িত্ব পালন করবেন মহুয়া মৈত্র, কাকলী, সৌগত রায়, এবং সুদীপ। রাজ্যস্তরে দায়িত্বে থাকবেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, ব্রাত্য বসু, শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়েরা।
সম্প্রতি নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন প্রশান্ত। সদ্যসমাপ্ত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে তিনি অন্ধ্রপ্রদেশে ওয়াই এস আর কংগ্রেসের হয়ে কাজ করেছিলেন। সেখানে বিপুল সাফল্য পেয়েছে ওয়াই এস জগনমোহন রেড্ডির দল। চন্দ্রবাবু নাইডুকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন জগন।
Read the full story in English