লোকসভা ভোট মেটার পর সারদা-নারদকাণ্ডে বাংলায় জোর তৎপরতা শুরু করেছে সিবিআই-ইডি। এই প্রেক্ষাপটে এবার চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করলেন বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা। ‘‘এক মাসের মধ্যে সারদা-নারদকাণ্ডে চিটফান্ডের নায়কদের জেলে যেতে হবে’’, এ ভাষাতেই হুঁশিয়ারি দিলেন রাহুল। তবে ‘চিটফান্ডের নায়ক’ বলতে রাহুল ঠিক কাদের বোঝাতে চেয়েছেন সে ব্যাপারে অবশ্য স্পষ্ট করে কিছু বলেননি।
আরও পড়ুন: নারদকাণ্ডে শোভনের প্রাক্তন ওএসডি-সহ ৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ সিবিআইয়ের
ঠিক কী বলেছেন রাহুল সিনহা?
রাহুল সিনহা বলেন, ‘‘একমাসের মধ্যে সারদা, নারদা-সহ বিভিন্ন চিটফান্ডের নায়কদের জেলে যেতে হবে, কারাবাস করতে হবে, যারা সাধারণ মানুষের টাকা, সরকারের টাকা আত্মসাৎ করেছে, তাদের কোনওভাবেই রেহাই দেওয়া যাবে না। মোদীজির সরকারে যতদূর করার করা হবে, ততক্ষণে মমতার সরকার চলে যাবে’’।
আরও পড়ুন: নারদকাণ্ডে এবার পঞ্চায়েত ও পরিবহণ দফতরে সিবিআই নোটিস
তৃণমূল নেতাদের উদ্দেশেই রাহুলের এই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। উল্লেখ্য, সারদা-নারদ-রোজভ্যালির মতো একাধিক চিটফান্ড মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল তৃণমূলের বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট নেতাদের। যে তালিকায় ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন পরিবহণ মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা মদন মিত্র, কুণাল ঘোষ, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, তাপস পালরা। অন্যদিকে, সম্প্রতি সারদা-নারদ-রোজভ্যালি মামলায় ফের সক্রিয় সিবিআই-ইডি। ক’দিন আগে রোজভ্যালি মামলায় মদন মিত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি। সেইসঙ্গে সারদা মামলায় তৃণমূলের আরেক সাংসদ শতাব্দী রায়কে তলব করা হয়েছে। পাশাপাশি নারদ মামলায় পুরসভা, পঞ্চায়েত ও পরিবহণ দফতরে নোটিস দিয়েছে সিবিআই। এই প্রেক্ষিতে রাহুল সিনহার মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
আরও পড়ুন: প্রসেনজিৎকে তলব ইডির, রোজভ্যালিকাণ্ডে নাম জড়াল নায়কের
অন্যদিকে, সম্প্রতি রোজভ্যালি মামলায় টলিউডের দুই প্রথম সারির নায়ক-নায়িকা প্রসেনজিৎ ও ঋতুপর্ণাকে তলব করেছে ইডি। রাহুলের এদিনের মন্তব্য টলি তারকাদের দিকে ইঙ্গিত করেই বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের আরেক অংশ।
এদিকে, সারদা-নারদকাণ্ডে সিবিআইয়ের নজরদারি নিয়ে এর আগে বিজেপির বিরুদ্ধে বহুবার সরব হয়েছিল তৃণমূল। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই সিবিআইকে বিজেপি কাজে লাগাচ্ছে বলেও অভিযোগ করে এসেছে বিরোধীরা। এ অভিযোগ নিয়ে বহুবার সরব হতে দেখা গিয়েছে খোদ তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। সারদাকাণ্ডে কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাড়িতে সিবিআই হানা নিয়ে ধর্নায় বসেছিলেন মমতা। যা নিয়ে উত্তাল হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। এই প্রেক্ষিতে এদিন রাহুল সিনহার এই বক্তব্য ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।