East Bengal FC: চলতি ডুরান্ড কাপের (Durand Cup 2025) ইস্টবেঙ্গল এফসি কার্যত অশ্বমেধের ঘোড়ার মতো দৌড়চ্ছে। রবিবার তারা গ্রুপ পর্বের শেষ ম্য়াচ খেলতে নেমেছিল। কলকাতার কিশোর ভারতী স্টেডিয়ামে আয়োজিত এই ম্য়াচে তারা ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স এফটি-কে ৬-১ গোলে কার্যত গুঁড়িয়ে দিল। ইস্টবেঙ্গলের হয়ে একটি করে গোল করলেন হামিদ আহদাদ (Hamid Ahadad), বিপিন সিং (Bipin Singh), আনোয়ার আলি (Anwar Ali), মহম্মদ রশিদ (Mohammad Rashid) , সল ক্রেসপো এবং ডেভিড। অন্যদিকে, এয়ার ফোর্সের হয়ে একমাত্র গোলটি করলেন আমন খান। এই ম্য়াচে বিপক্ষকে নিয়ে ইস্টবেঙ্গল যে কার্যত ছিনিমিনি খেলল, তা বলা যেতেই পারে।
শনিবার এই ম্য়াচের আগে একটি সাংবাদিক বৈঠক করতে এসেছিলেন ইস্টবেঙ্গল দলের হেড কোচ অস্কার ব্রুজোঁ। তিনি বলেছিলেন, গ্রুপ পর্বে অপরাজেয় থেকেই তিনি নকআউটে যেতে চান। এর ফলে দলের আত্মবিশ্বাস অনেকটাই উপরে থাকবে। আর হেড স্যারের প্রত্যেকটা কথা যেন অক্ষরে-অক্ষরে পালন করলেন লাল-হলুদ ছাত্ররা। প্রথমার্ধের শেষে যখন ইস্টবেঙ্গল এফসি মাঠ ছাড়ছিল, সেইসময় স্কোর বোর্ডটা ২-১ ব্যবধানে জ্বলজ্বল করছিল। যদিও অস্কারের মুখ দেখে কিছুটা হলেও চিন্তিত মনে হল। কারণ, ওই এক গোল হজমটা তিনি বোধহয় মানতে পারছিলেন না।
তৃতীয় গোলটি করলেন আনোয়ার আলি
দ্বিতীয়ার্ধে যখন ইস্টবেঙ্গল ড্রেসিংরুম থেকে বেরিয়ে এল, তখন এক অন্য লাল-হলুদ ব্রিগেডকে দেখতে পাওয়া গেল। আরও বেশি আক্রমণের ঝড় তুলে তারা গোটা মাঠ দাপিয়ে বেড়াতে লাগল। ইতিমধ্যে ৬৪ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে ব্যবধান বাড়ালেন আনোয়ার আলি। এর আগে বেশ কয়েকটা সুযোগ তারা তৈরি করলেও, শেষপর্যন্ত গোলের দরজা খোলেনি। অবশেষে আনোয়ারের পা থেকেই বেরিয়ে আসে তৃতীয় গোলটি। ফ্রি-কিক থেকে দামাসেনোর একটা অপূর্ব ক্রস বক্সের মধ্যে আসে। এই বলটার অপেক্ষাতেই যেন ছিলেন আনোয়ার আলি। তিনি সবথেকে উপরে লাফ দিয়ে বলটা বায়ুসেনার জালে পাঠিয়ে দেন। শুভজিতের হাত বলটা স্পর্শ করলেও, শেষপর্যন্ত তা আটকাতে পারেনি।
Mohun Bagan Super Giant Win: পাঁচ গোলের মালা মোহনবাগানের, উড়ে গেল ডায়মন্ড হারবার এফসি
রশিদের পা থেকে এল চতুর্থ গোল
তৃতীয় গোলের ধাক্কা হজম করতে না করতেই ৫ মিনিটের মধ্যে আবারও গোল। কর্নার কিক থেকে উড়ে আসা একটি বল ক্লিয়ার করতে পারল না ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্স। বলটা সোজা রশিদের পায়ের কাছে এসে পড়ে। বেশ খানিকটা দুর থেকেই প্যালেস্তাইনের এই মিডফিল্ডার জোরাল শট মারেন। অসাধারণ একটা ফিনিশ বলতে যা বোঝায়, এটা যেন ঠিক তাই। রশিদের শট বিপক্ষ ডিফেন্ডারের গায়ে সামান্য প্রতিহত হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু তাতে কোনও অসুবিধে হয়নি। বরং বলটা কামানের গোলার মতো তেকাঠির মধ্যে আছড়ে পড়ে। ৬৯ মিনিটে ইস্টবেঙ্গল ৪-১ গোলে এগিয়ে যায়। এরপর লাল-হলুদ ব্রিগেডের জয় ছিল নেহাতই সময়ের অপেক্ষা।
East Bengal FC: কালীঘাটের বিরুদ্ধে আগুন জয়, পয়েন্ট টেবিলে উথাল-পাতাল ইস্টবেঙ্গলের
পঞ্চম গোলটি করলেন সল ক্রেসপো
এবার ছিল সল ক্রেসপোর পালা। ডান প্রান্ত থেকে এডমান্ডের একটি বাঁকানো ক্রস বক্সের মধ্যে ঢোকে। শুভজিৎ বলটাকে ব্লক করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, বলটা তাঁর হাতে প্রতিহত হয়ে একেবারে সল ক্রেসপোর সামনে চলে আসে। এরপর ক্রেসপো কোনও ভুল করেননি। ঠাণ্ডা মাথায় ইস্টবেঙ্গলকে ৫-১ গোলে তিনি এগিয়ে দিলেন।
East Bengal FC Today Match: ইস্টবেঙ্গল এফসি-কে নিয়ে বড় খবর, চরম সিদ্ধান্ত নিলেন অস্কার ব্রুজোঁ
অন্তিম গোলের মালিক ডেভিড
রবিবার ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্সের বিরুদ্ধে ইস্টবেঙ্গল এফসি ৬-১ গোলে জয়লাভ করল। আর ষষ্ঠ তথা অন্তিম গোলটি করলেন ডেভিড। রেগুলেশন টাইমের পর আরও ৪ মিনিট অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়েছিল। আর তখন আসেই ষষ্ঠ গোলটি। বাঁ-প্রান্ত থেকে সল ক্রেসপো একটি ক্রস বাড়িয়েছিলেন। শুভজিৎ বলটাকে ঘুঁসি মেরে বিপদমুক্ত করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু, তাঁর হাতের মুঠোয় খুব বেশি জোর ছিল না। বলটা কার্যত উপহার হিসেবে ডেভিডের কাছে চলে আসেন। তিনি শেষপর্যন্ত হেড দিয়ে সেটাকে সঠিক ঠিকানায় পৌঁছে দিলেন। আর সেইসঙ্গে লাল-হলুদ মশাল আরও উদ্দীপ্ত হয়ে উঠল।