East Bengal FC: চলতি কলকাতা ফুটবল লিগে (CFL 2025-26) ইস্টবেঙ্গল এফসি যথেষ্ট ভাল পারফরম্যান্স করছিল। কলকাতা ডার্বিতে মোহনবাগানকে ৩-২ গোলে তারা হারানোর পর বেহালা এসএস-কেও ৬-০ গোলে পরাস্ত করেছিল। কিন্তু, রবিবার তারা পুলিশ অ্যাথলেটিক ক্লাবের বিরুদ্ধে হেরে যায়। আর এই পরাজয়ের পরই লাল-হলুদ সমর্থকরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। কোচ বিনো জর্জকেও তাঁরা অকথ্য ভাষায় গালাগালি দিতে শুরু করেন।
এই ম্য়াচে শুরু থেকেই ইস্টবেঙ্গল দলকে যথেষ্ট নিষ্প্রভ দেখাচ্ছিল। পুলিশ এসি-র ফুটবলাররা যেভাবে একের পর এক আক্রমণ তুলে আনছিল, তাতে লাল-হলুদ ডিফেন্স একেবারে দিশেহারা হয়ে পড়েছিল। অবশেষে ১১ মিনিটে পেনাল্টি অর্জন করে পুলিশ। সেখান থেকে দলকে লিড এনে দেন মহম্মদ আমিল নঈম।
আর দ্বিতীয়ার্ধের ৭৫ মিনিটে ব্যবধান বাড়লেন মৃণ্ময় মহাপাত্র। কিন্তু, সবথেকে দূর্ভাগ্যজনক ঘটনা হল এই যে ইস্টবেঙ্গল কিন্তু গোল করার একাধিক সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু, ফিনিশিংয়ের অভাবে তারা একটাও গোল করতে পারল না। গত মরশুমে যে সমস্যা লাল-হলুদ ব্রিগেডের গলায় কাঁটার মতো আটকে ছিল, এবারও পুলিশের বিরুদ্ধে সেই একই সমস্য়া দেখতে পাওয়া গেল। আগের দুটো ম্য়াচে ইস্টবেঙ্গলকে যেমন অপ্রতিরোধ্য বলে মনে হয়েছিল, এই ম্য়াচে সেই পারফরম্য়ান্সের ছিটেফোঁটাও দেখতে পাওয়া গেল না।
কলকাতা ফুটবল লিগে পুলিশের বিরুদ্ধে হেরে গেল ইস্টবেঙ্গল এফসি
আর এমন হতাশাজনক পারফরম্য়ান্স দেখার পর লাল-হলুদ সমর্থকরা ক্ষেপে ওঠেন। কয়েকজন সমর্থক ফেন্সিংয়ের কাছে চলে আসেন। তারপর বিনো জর্জকে উদ্দেশ্য করে তাঁরা অকখ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে শুরু করেন। বিনো জর্জ নিজে এগিয়ে এসে সমর্থকদের শান্ত করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু, কাজের কাজ কিছু হয়নি। শালীনতা বজায় রাখার কারণে সেই ভিডিও এই প্রতিবেদনে দেওয়া গেল না।
এখানেই শেষ নয়। খেলার শেষে ইস্টবেঙ্গল দল যখন ড্রেসিংরুমে ফিরছিল, সেইসময়ও বিনো জর্জকে উদ্দেশ্য করে লাল-হলুদ সমর্থকরা অশ্রাব্য গালাগালি দিতে শুরু করেন। সঙ্গে উঠতে শুরু করে 'গো ব্যাক বিনো' স্লোগানও। অনেকেই এই ঘটনার সঙ্গে ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন কোচ ট্রেভর জেমস মরগ্যানে তুলনা টেনেছেন। মরগ্যান ইস্টবেঙ্গলকে কম সাফল্য এনে দেননি। কিন্তু, তারপরও লাল-হলুদ সমর্থকদের রোষের মুখে তাঁকে পড়তে হয়েছিল।
যাইহোক, ব্যারাকপুর স্টেডিয়ামে নিরাপত্তারক্ষীরা যথেষ্ট তৎপর ছিলেন। পরিস্থিতি হাতের বাইরে যাওয়ার আগেই তাঁরা গ্যালারিতে চলে যান। লাঠি উঁচিয়ে সমর্থকদের শান্ত হওয়ার নির্দেশ দেন। অবশেষে গোটা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। কলকাতা ফুটবল ময়দানে এমন দৃশ্য একেবারে নতুন নয়। তবে ফুটবলের স্বার্থে এমন দৃশ্য যে যথেষ্ট লজ্জাজনক, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।