/indian-express-bangla/media/media_files/2025/08/21/dream-11-2025-08-21-17-54-30.jpg)
Dream 11: অনলাইন গেমিং বিল ২০২৫।
Online game, Dream 11: সংসদে একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। অনলাইন গেমিং বিল ২০২৫ লোকসভা এবং রাজ্যসভা উভয় কক্ষেই পাস হয়েছে। এই বিলের মাধ্যমে দেশের দ্রুত বর্ধনশীল গেমিং ইন্ডাস্ট্রিতে এক বড় পরিবর্তন আসতে চলেছে।
রিয়েল-মানি গেমিং এবং অনলাইন বেটিং
সবচেয়ে বড় ব্যাপার হল— রিয়েল-মানি গেমিং এবং অনলাইন বেটিং এখন থেকে ভারতে আর অনুমোদিত নয়। এই সিদ্ধান্তে সরাসরি ধাক্কা খাবে Dream11, MPL, My11Circle, Howzat, PokerBaazi, Junglee Games, GamesKraft-এর মত জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম। এরা এতদিন খেলোয়াড়দের বাস্তব অর্থ দিয়ে খেলার সুযোগ দিত। কিন্তু এখন এই ধরনের গেম সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ।
আরও পড়ুন- TCS কয়েক দফায় কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে, আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠনের দ্বারস্থ ইউনিয়ন, গন্ডগোলের আশঙ্কা
কেবল ফ্যান্টাসি স্পোর্টসই নয়, পোকার, রামি, অনলাইন লটারি এবং ক্যাসিনো গেম-ও নতুন আইনের আওতায় এসেছে। আইন ভঙ্গ করলে হতে পারে সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা জরিমানা। সর্বোচ্চ ৩ বছরের জেল। শুধু তাই নয়, ব্যাংক এবং পেমেন্ট কোম্পানিগুলোকেও এই গেমে অর্থ প্রবাহ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন- অভিষেকের এক সিদ্ধান্তেই 'ভোলবদল' ডায়মন্ড হারবার এফসি-র! ফাইনালে উঠতেই ফাঁস গোপন কথা
এর ফলে বড় কোম্পানিগুলোর ভবিষ্যৎ সংকটে। তার মধ্যে Dream11 ভারতের অন্যতম মূল্যবান স্টার্টআপ, প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যের কোম্পানি এটা। প্রধান রাজস্ব উৎস চলে গেলে ব্যবসায়িক মডেল বদলাতে হবে এই কোম্পানিকে। MPL প্রায় ২.৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের প্রতিষ্ঠান, তারাও বড় ক্ষতির মুখে। My11Circle, Howzat, WinZO, Games24x7– সবাইকেই এখন বিকল্প খুঁজতে হবে। বিনিয়োগকারীরা ইতিমধ্যেই আতঙ্কিত। তার মধ্যেই বাজারে তালিকাভুক্ত গেমিং কোম্পানি Nazara Technologies-এর শেয়ার দু'দিনে প্রায় ২৩% পড়ে গেছে।
আরও পড়ুন- হারতেই নাকেকান্না ইস্টবেঙ্গলের, রেফারির সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ অস্কার ব্রুজোঁ!
ইলেকট্রনিক্স ও আইটি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব সংসদে বলেছেন, অনেক মানুষই অনলাইন গেমে আসক্ত হয়ে সঞ্চয় হারিয়েছেন। কিছু প্ল্যাটফর্মকে অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসবাদে অর্থদানের দায়েও অভিযুক্ত করা হয়েছে। তাই এই বিল আনার মূল লক্ষ্য হল নাগরিকদের সুরক্ষা। তবে সবটাই খারাপ নয়। নতুন আইন অনুযায়ী ই-স্পোর্টস এখন ভারতে আনুষ্ঠানিকভাবে খেলা হিসেবে স্বীকৃত। শিক্ষামূলক ও নৈমিত্তিক গেমিং (যেখানে আসল টাকার লগ্নি নেই), তারা সরকারের কাছ থেকে উৎসাহ পাবে।
আরও পড়ুন- 'কোন ক্লাবের জার্সি পরে কী খেলছে...', কার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন রহিম নবি?
এর ফলে নিরাপদ এবং দক্ষতা-ভিত্তিক গেমিং-এর নতুন দিগন্তও খুলে গেল। এই বিল অনুযায়ী একটি জাতীয় অনলাইন গেমিং অথরিটি গঠন হবে, যা সব অ্যাপকে রেজিস্ট্রেশন দেবে, অভিযোগ সামলাবে, আইন মেনে চলছে কি না, সেই ব্যাপারে নজর রাখবে। এতে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের বিভ্রান্তিকর আইনগুলির জায়গায় একক জাতীয় কাঠামো তৈরি হবে। বর্তমানে ভারতের অনলাইন গেমিং ইন্ডাস্ট্রির বাজার মূল্য ৩.৬ বিলিয়ন ডলার। আশা করা হচ্ছে ২০২৯ সালের মধ্যে এটি আরও কয়েকগুণ বাড়বে। যদিও রিয়েল-মানি গেমিং ধাক্কা খেল, তবে ই-স্পোর্টস, ক্যাজুয়াল গেমিং ও শিক্ষামূলক গেম ভবিষ্যতের বড় চালিকাশক্তি হতে পারে।
অনলাইন গেমিং বিল ২০২৫ ভারতের গেমিং ইন্ডাস্ট্রির জন্য এক বড় মোড়। রিয়েল-মানি গেমের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ হলেও ই-স্পোর্টস ও নিরাপদ গেমিংকে উৎসাহ দেওয়ায় এটি নতুন দিগন্ত খুলতে পারে।