/indian-express-bangla/media/media_files/2025/09/03/satyajit-pujo-2025-09-03-12-18-57.jpg)
দুর্গাপুজোর স্মৃতি শেয়ার করলেন সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়
Durga Puja 2025: হাতে বাকি আর মাত্র কয়েকটা দিন। দুর্গাপুজোর গন্ধ ইতিমধ্যেই শরতের আকাশে ভাসতে শুরু করেছে। এই পুজো যে বাঙালিদের কাছে একটা অন্যতম আবেগ, সেটা আর নতুন করে বলে দেওয়ার দরকার পড়ে না। তবে ছোটবেলায় পুজোর স্মৃতি সবসময়ই খুব নস্ট্যালজিক হয়ে থাকে। সেই নস্ট্যালজিয়ার কথাই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার সঙ্গে শেয়ার করে নিলেন ভারতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Satyajit Chatterjee)। এও জানালেন, এই দুর্গাপুজোর কারণেই তিনি একবার জাতীয় শিবিরেও অংশগ্রহণ করেননি। স্মৃতির সিন্দুক থেকে বেরিয়ে এন নানা মণিমুক্তো।
ছোটবেলার স্মৃতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায় বললেন, 'তখন যে আনন্দটা ছিল, সেটা ভাষায় ব্যক্ত করা যাবে না। পুজো আসাটাই ছিল আমার কাছে সবথেকে বেশি আনন্দের। তখন তো অত পোশাক বৈচিত্র্য ছিল না। পুজোর সময় একটা জামা-প্যান্ট হত। বাড়িতে একটু ভাল রান্না-বান্না হত। নতুন তেল, সাবান, সুগন্ধী অনেককিছুই বাড়িতে আসত। ওই পাঁচটা দিন বাড়িতে একটা আলাদা পরিবেশ তৈরি হত।'
Robson Robinho Mohun Bagan: কলকাতায় পা রাখলেন রবসন, উচ্ছ্বসিত মোহনবাগান সমর্থকরা
তাঁর কথায়, 'সেইসময় এত পুজো হত না। পাড়ায় দু'একটা পুজোই হত। আর সেখানে দাঁড়িয়ে প্যান্ডেল তৈরি করা দেখতাম। কখনও বিকেলবেলা খেলার সময় ওই প্যান্ডেলের উপর চড়েও বসে থাকতাম। এটা এক অনাবিল আনন্দ ছিল। এরপর ঠাকুর যেখানে তৈরি করা হত, সেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতাম। পুজোর চারটে দিন যে কোথা দিয়ে বেরিয়ে যেত, সেটা আর মনে থাকত না। তখনও প্যান্ডেলে-প্যান্ডেলে খাওয়ার প্রচলন হয়নি। দিনের কোনও একটা সময় বাড়িতে খেতে আসতাম। তারপর বাকি সময়টা বাড়ির বাইরে বন্ধুদের সঙ্গে আনন্দ করে কাটিয়ে দিতাম।'
Mohun Bagan Super Giant: বাগানে ফের ফুটল ফুল, পাঠচক্রের বিরুদ্ধে দুরন্ত জয় মেরিনার্সদের
এই প্রসঙ্গে আপনাদের জানিয়ে রাখি, মোহনবাগান অ্যাথলেটিক ক্লাবের পাশাপাশি ভারতীয় ফুটবল দলের হয়েও যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছেন সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়। ১৯৮৭ সালে সাউথ এশিয়ান গেমসে জয় করেছেন সোনার পদক। ১৯৮৯ সালে ব্রোঞ্জ পদক। আর এই সাফল্যের পুরস্কার হিসেবে ১৯৯১ সালে তাঁকে ভারতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক নির্বাচন করা হয়েছিল। কিন্তু, পুজোর সময় যদি জাতীয় ফুটবল দলের শিবির ডাকা হয়, তাহলে আর কোন বাঙালির মন টেকে? ব্যতিক্রম ছিলেন না সত্যজিতও। সেই গোপন কথাও শেয়ার করলেন তিনি।
Mohun Bagan Super Giant: বেহালায় বাজল বিষাদের সুর, পাঁচ গোলের মালা পরিয়ে জয় মোহনবাগানের
পুজোর জন্য ছেড়েছিলেন জাতীয় শিবিরও
বললেন, 'মনে আছে বেঙ্গালুরুতে একবার জাতীয় ফুটবল দলের শিবির চলছিল। সেইসময় এই পুজোর টানেই আমি ভারতীয় ফুটবল শিবির ছেড়ে চলে এসেছিলাম। এমনকী, একটা ক্যাম্পে তো আমি যাইওনি। চিঠি লিখে জানিয়ে দিয়েছিলাম, আমার ব্যক্তিগত কাজ আছে। সেকারণে যেতে পারব না। পুজোর সময় বরাবরই বাড়িতে থাকার চেষ্টা করেছি। হয়ত দু'একবার খেলার জন্য় আমাকে বাইরে যেতে হয়েছিল। ফুটবল খেলা আমার কাছে সবকিছু। সেটা ঠিক আছে। ওটাই আমার জীবনে সব। কিন্তু, দুর্গাপুজোয় খেলা কিংবা প্র্যাকটিস কোনওটাই ভাল লাগত না। পুজোর আবেগটা একেবারেই আলাদা।'
Mohun Bagan Super Giant: 'সিগন্যাল এবার মানতে হবে...', বাঘা ডিফেন্ডার আসতেই উচ্ছ্বাস বাগান শিবিরে
শেষকালে মোহনবাগানের এই প্রাক্তন ফুটবলার বললেন, 'এখন বয়স বেড়েছে। আগেকার সেই উচ্ছ্বাসটা থাকলেও, বর্তমানে প্রকাশটা অনেকটাই কম। এখন উচ্ছ্বাস প্রকাশের থেকেও বাকীদের দেখতে ভাল লাগে। বাচ্চা-বাচ্চা ছেলেমেয়েরা যেভাবে সেজেগুজে বেরোচ্ছে, এটা দেখতে ভাল লাগে। আমার একটা কথা খুবই মনে হয়। দুর্গাপুজোয় গরীব এবং বড়লোকের মধ্যে কোনও ভেদাভেদ থাকে না। এটাই আমাকে সবথেকে বেশি আনন্দ দেয়।'