/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/11/yashasvi-jaiswal-run-out-drama-2025-10-11-12-18-38.jpg)
Yashasvi Jaiswal Run Out Drama: বিতর্কিত সেই মুহূর্ত।
Yashasvi Jaiswal Run Out Drama: দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলায় দ্বিতীয় (Cricket) টেস্টের দ্বিতীয় দিনে ঘটে গেল এক নাটকীয় ঘটনা। ভারত বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের এই ম্যাচে যশস্বী জয়সওয়াল, সকালেই রানের খাতায় মাত্র ২ যোগ করেই ভয়ংকরভাবে রানআউট হয়ে ফিরলেন। যশস্বী আগের দিন দুরন্ত ব্যাটিং করে ১৭৩ রানে অপরাজিত ছিলেন।
রানআউট বিতর্ক
তবে ঘটনাটি শুধুমাত্র এক সাধারণ রানআউট নয়— এর উত্তাপ বাড়িয়েছে ভারতীয় অধিনায়ক শুভমন গিল আর যশস্বী জয়সওয়ালের ভুল বোঝাবুঝি বিতর্কও। সকালের অষ্টম বলেই বিপত্তিটা ঘটে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার জেডেন সিলস এক ফুল লেংথ ডেলিভারি দেন, যেটি মিড-অফে চলে যায়। যশস্বী মনে করেন এটি সহজ সিঙ্গেল, দৌড় শুরু করেন। কিন্তু অপর প্রান্তে গিল তেমন আগ্রহ দেখাননি।
আরও পড়ুন- মারাত্মক দুর্ঘটনার কবলে শুভমান! কী হয়েছে জানেন?
গিল সঙ্গে সঙ্গেই পিছনে তাকিয়ে ‘না’ বলে দেন, কিন্তু ততক্ষণে যশস্বী অনেক দূর চলে এসেছেন। ট্যাগনারিন চন্দরপল দ্রুত বল কুড়িয়ে ছুড়ে দেন, কিপার টেভিন ইমলাক স্টাম্প ভেঙে দেন। বল হাত থেকে ফসকাতে গিয়েও ঠিক সময়েই কিপারের হাতে চলে এসেছিল। আর, যশস্বী বিতর্কহীন ভাবে আউট হয়ে যান। আউট হওয়ার পর যশস্বীর মুখভঙ্গি দেখে বোঝাই যাচ্ছিল তিনি ক্ষুব্ধ। তিনি গিলের দিকে হাত নেড়ে বলেন, 'মেরা কল হ্যায়!' অর্থাৎ, 'এটা আমার কল ছিল।'
আরও পড়ুন- অল্পের জন্য হাতছাড়া সেঞ্চুরি, তবু 'বিশাল রেকর্ড' সুদর্শনের
দু'বার তিনি একই কথা পুনরাবৃত্তি করেন, আর গিলকে দেখা যায় চুপ করে আছেন। আর, যশস্বীকে দেখেও মনে হচ্ছিল যেন তিনি ভুলেই গেছেন যে আউট হয়েছেন। বাধ্য হয়েই অনফিল্ড আম্পায়ার রিচার্ড ইলিংওয়ার্থ তাঁকে ইঙ্গিত করেন মাঠ ছাড়ার জন্য, কিন্তু তারপরও কয়েক সেকেন্ড পর্যন্ত যশস্বী জায়গা ছেড়ে নড়েননি। শেষ পর্যন্ত আম্পায়ারের নির্দেশে তিনি অনিচ্ছাসত্ত্বেও মাঠ ছাড়েন। ড্রেসিংরুমে পৌঁছে রিপ্লে দেখে আরও হতাশ প্রকাশ করেন ভারতীয় ব্যাটার।
আরও পড়ুন- ঝরঝরে বাংলায় লাল-হলুদ সমর্থকদের মেসেজ! কী বললেন হিরোশি?
রিপ্লেতে দেখা যায়, রানআউটটি খুবই ক্লোজ কল ছিল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আম্পায়ার চাইলে তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে রিভিউ পাঠাতে পারতেন। প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক অনিল কুম্বলে টেলিভিশন কমেন্ট্রিতে বলেন, 'এমন ইনিংসের পর একজন ব্যাটার এইভাবে ফিরে গেলে মন ভেঙে যাবেই।'
আরও পড়ুন- সিঙ্গাপুরের বিরুদ্ধে ড্র, এবার কীভাবে এএফসি এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জন করবে ভারত?
যাই হোক, ১৭৫ রানের ইনিংস খেলে যশস্বী দেখিয়ে দিয়েছেন কেন তাঁকে ভারতের ভবিষ্যৎ বলা হয়। পুরো প্রথম দিন তিনি ক্রিজে টিকেছিলেন, সাবলীল স্ট্রোকপ্লে ও ধৈর্যের নিদর্শন রেখে গেছেন। তিনি একটিও ছয় মারেননি, তবু ২২টি চার মেরে দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন। এই ইনিংসের মাধ্যমে যশস্বী ২৪ বছরের আগে ৭ম টেস্ট সেঞ্চুরির মালিক হলেন। গ্রেম স্মিথ-এর রেকর্ড স্পর্শ করলেন। বিরাট কোহলির মতই ভারতের মাটিতে একদিনে দু'বার ১৫০-র বেশি রান করার কৃতিত্ব অর্জন করলেন।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ড্রেসিংরুমে ফিরে যশস্বী রবীন্দ্র জাডেজা-র সঙ্গে কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, 'কল আমার ছিল'। তবে একথা মেনে নেন যে, এমন ভুল বোঝাবুঝি দলে হলে তা থেকে শেখা উচিত। শুভমন গিল পরে প্রেস কনফারেন্সে বলেন, 'ক্রিকেটে এই ধরনের মিক্স-আপ হয়েই থাকে। আমরা দুজনেই পরেরবার আরও সতর্ক থাকব।' ভারত দ্বিতীয় দিনের সকালে ৩৮৭/৩ রানে ছিল, এরপর গিল ও আইয়ারের জুটি ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যায়। যশস্বীর রানআউট হয়তো ম্যাচের গতিপথ বদলায়নি, কিন্তু মুহূর্তটি হয়ে রইল দিনের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা।
এদিন দিল্লির মাঠটাও আলো ঝলমলে হয়ে উঠেছিল যশস্বীর ব্যাটে —দুর্ভাগ্যবশত এক ভুল বোঝাবুঝিই সেই উজ্জ্বল ইনিংসের পরিসমাপ্তি ঘটাল। তবু তাঁর লড়াই ও মনোভাব প্রমাণ করে দিল যে, ভারতীয় ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ সত্যিই উজ্জ্বল।