/indian-express-bangla/media/media_files/2025/08/28/space-food-2025-08-28-15-27-58.jpg)
Space Food: মহাকাশে প্রথম খাবার।
Space Food: মানুষের মহাকাশযাত্রা সবসময়ই কৌতূহল এবং বিস্ময়ের একটি বিষয়। কিন্তু মহাকাশে শুধু ভ্রমণ নয়, সেখানে বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় খাবারের বিষয়টিও সমান গুরুত্বপূর্ণ। আজ আমরা জেনে নেব প্রথমবারের মত মানুষ মহাকাশে কী খেয়েছিল এবং সেটি কেমন অভিজ্ঞতা ছিল।
সোভিয়েত ইউনিয়নের মহাকাশচারী ইউরি গ্যাগারিন
১৯৬১ সালের ১২ এপ্রিল, সোভিয়েত ইউনিয়নের মহাকাশচারী ইউরি গ্যাগারিন ভোস্টক ১ মহাকাশযানে পৃথিবীর কক্ষপথে পা রাখেন। মাত্র ১০৮ মিনিটের সেই ভ্রমণ ইতিহাসে প্রথম মানব মহাকাশযাত্রা হিসেবে পরিচিত। এই যাত্রাতেই মানুষ প্রথমবারের মত মহাকাশে খাবার খাওয়ার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিল।
আরও পড়ুন- ভুল UPI আইডিতে টাকা ট্রান্সফার হয়েছে? কীভাবে ফেরত পাবেন জানেন?
মহাকাশে খাবার খাওয়া পৃথিবীর মত সহজ নয়। শূন্য মাধ্যাকর্ষণে সাধারণ খাবার টুকরো হয়ে ভেসে যেতে পারে এবং শ্বাসনালীতে ঢুকে বিপদ ঘটাতে পারে। তাই বিজ্ঞানীরা খাবারকে বিশেষভাবে তৈরি করেছিলেন। ইউরি গ্যাগারিনের জন্য দুটি টিউব প্যাকেট দেওয়া হয়েছিল, একটি টিউবে ছিল গরুর মাংস ও লিভারের পেস্ট। আরেকটি টিউবে ছিল চকোলেট সস। এই টিউবগুলো অনেকটা টুথপেস্ট টিউবের মত ছিল, যেখানে চাপ দিয়ে সরাসরি মুখে খাবার নিতে হত।
আরও পড়ুন- বিদেশযাত্রা এখন আর ঝামেলা নয়, ঘরে বসেই অনলাইনে করুন পাসপোর্টের আবেদন
শূন্য মাধ্যাকর্ষণে খাবার খাওয়ার সময় বড় সমস্যা ছিল ফুড পার্টিকলস ভেসে যাওয়া। যদি খাবারের টুকরো ভেসে গিয়ে মেশিনে ঢুকে পড়ে বা মহাকাশচারীর নাকে-মুখে চলে যায় তবে তা প্রাণঘাতী হতে পারত। তাই খাবারকে তরল বা পেস্ট আকারে মহাকাশে রাখা হত। ইউরি গ্যাগারিন জানিয়েছিলেন যে খাবারের স্বাদ একদম স্বাভাবিক ছিল। খাওয়ার সময় কোনও বিশেষ অসুবিধা হয়নি। তবে খাওয়ার প্রক্রিয়াটি ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। মুখে চাপ দিয়ে টিউব থেকে খাবার বের করে খেতে হয়েছিল।
আরও পড়ুন- স্মার্টফোন আপনাকে বয়সের আগেই বৃদ্ধ করে দেবে, গবেষণায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য
এই প্রথম সফল প্রচেষ্টার মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হন যে মহাকাশেও মানুষ খাবার খেতে সক্ষম। এরপর থেকে মহাকাশে খাবার খাওয়ার ধরন ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হতে থাকে। আজকের দিনে মহাকাশচারীরা শুধু পেস্ট জাতীয় খাবার নয়, বরং ফ্রিজে শুকানো খাবার, ফল, বাদাম, রুটি, এমনকী পিৎজা এবং আইসক্রিম পর্যন্ত খেতে পারেন। প্রযুক্তির উন্নতির কারণে এখন মহাকাশের খাবার অনেক বৈচিত্র্যময় হয়ে উঠেছে।
ইউরি গ্যাগারিনের সেই ছোট্ট খাবার টিউব আসলে ছিল মহাকাশ খাদ্যযাত্রার প্রথম ধাপ। তার অভিজ্ঞতা প্রমাণ করেছে, মানুষ শুধু পৃথিবীতেই নয়, মহাকাশেও খাবার খেয়ে টিকে থাকতে পারে। আজকের মহাকাশ গবেষণার সাফল্যের পথে এটি একটি বড় পদক্ষেপ।