একটানা প্রায় চার দশক ধরে কালীপুজো করে চলেছেন এক মুসলিম মহিলা। তাঁরই উদ্যোগে দশকের পর দশক ধরে জনপ্রয়িতা বেড়েই চলেছে মালদহের হবিবপুরের কেন্দুয়ার এই কালীপুজোর। পুজোকে কেন্দ্র করে সম্প্রীতির নজির গড়েছেন হবিবপুরের শেফালী বেওয়া। তাঁর এই উদ্যোগে পাশে দাঁড়িয়েছেন এলাকাবাসীও।
Advertisment
প্রায় চার দশক ধরে নিষ্ঠার সঙ্গে কালীপুজো করে চলেছেন এক মুসলিম মহিলা। মালদহের হবিবপুরে কেন্দুয়ার শেফালী বেওয়ার হাতেই পূজিত হন শ্যামা। এলাকায় শেফালী বেওয়ার কালীপুজো যথেষ্ট জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। গোটা হবিবপুর তো বটেই শেফালী বেওয়ার কালীপুজো থেকে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত ঢল নামে দর্শনার্থীদের। বয়স ৭০ ছুঁয়েছে। এখন অবশ্য আগের মতো নিজে হাতে পুজোর জোগাড়ের সবটা করে উঠতে পারেন না বৃদ্ধা। তবে নজর থাকে সব দিকেই। শেফালী বেওয়াকে পুজোয় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
কালীপুজোর জোগাড় থেকে শুরু করে আর্থিকভাবেও এই পুজোকে আরও বড় করে তুলতে এলাকাবাসীদের অনন্য প্রয়াস প্রশংসনীয়। প্রতি বছর শেফালী বেওয়ার কালীপুজো দেখতে রীতিমতো ভিড় জমে যায়। হবিবপুরের কেন্দুয়া এলাকাটিতে মূলত আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন বাস করেন।
কেন্দুয়া গ্রামের রেল ব্রিজের কাছেই প্রতি বছর ধুমধাম করে পালিত হয় শেফালী বেওয়ার হাতে শুরু এই এই কালীপুজো। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রায় চল্লিশ বছর আগে এলাকার বাসিন্দা শেফালী বেওয়া নিজের উদ্যোগে এই কালী পুজো শুরু করেছিলেন। শেফালী বেওয়ার স্বামী দীর্ঘদিন আগেই প্রয়াত হয়েছেন। তাঁর দুই ছেলে দিনমজুরের কাজ করেন।
মুসলিম পরিবারে বড় হয়ে কেন কালীপুজো শুরু করলেন? বৃদ্ধা শেফালী বললেন, '৪০ বছর আগে স্বপ্নাদেশ পেয়ে কালীমাতার পুজো শুরু করি। হিন্দু শাস্ত্র-মতে এই পুজোর নিয়ম-নীতি কিছুই জানা ছিল না। তবে ধীরে-ধীরে সবই শিখে ফেলেছি। এখন ভক্ত ও গ্রামবাসীদের সাহায্যে কালী মায়ের পাকা থান তৈরি করা হয়েছে। পুজোর আয়োজনে গ্রামবাসীরা সাহায্য করে থাকেন। গ্রামের মঙ্গল কামনায় কালী মাতার পুজো করে চলেছি।' কেন্দুয়া গ্রামে বছরের পর বছর ধরে ধুমধাম করে পালিত হয়ে আসছে শেফালী বেওয়ার হাতে শুরু এই কালীপুজো। এবারও পুজোর তোড়জোড় শুরু। গোটা গ্রামে উৎসবের মেজাজ।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন