Air India Plane Crash: আমেদাবাদ থেকে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়া AI 171বিমানে ভয়াবহ দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। ভারতের এয়ারক্রাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোর (AAIB) ১৫ পাতার রিপোর্টে বলা হয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত বোয়িং ৭৮৭ বিমানের ফুয়েল সুইচ “Run” থেকে “Cutoff” অবস্থায় চলে যায়, যার ফলে ইঞ্জিনে ফুয়েল সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়, বিমানটি মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ভেঙে পড়ে।
এই প্রসঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভিজ্ঞ বিমান দুর্ঘটনা তদন্তকারী এবং আইনজীবী মেরি শিয়াভো দাবি করেছেন, ঠিক এমন ঘটনা ২০১৯ সালেও ঘটেছিল একটি অল নিপ্পন এয়ারওয়েজ (ANA) বিমানে — সেখানেও বোয়িং ৭৮৭-এর ফুয়েল কাট-অফ সুইচ পাইলটদের কোন রকম হস্তক্ষেপ ছাড়াই নিজে থেকেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
AAIB রিপোর্টে উল্লেখ, দুর্ঘটনার ঠিক আগে ককপিটে ক্যাপ্টেন সুমিত সাবরওয়াল এবং ফার্স্ট অফিসার ক্লাইভ কুন্ডারের মধ্যে কথোপকথন হয়, যেখানে একজন অপরজনকে জিজ্ঞেস করেন কে ইঞ্জিনের ফুয়েল বন্ধ করেছিল। উত্তরে অপর পাইলট বলেন, “আমি করিনি।” এরপরই ‘Mayday’ বার্তা পাঠানো হয় ATC-কে এবং মাত্র ১৫ সেকেন্ডের মধ্যে বিমানটি মেডিকেল স্টুডেন্ট হোস্টেলের উপর ভেঙে পড়ে।
মার্কিন বিশেষজ্ঞ শিয়াভো জানিয়েছেন, ২০১৯ সালে টোকিও থেকে ওসাকা যাওয়ার পথে ANA-এর একটি বোয়িং ৭৮৭ বিমানও একই সমস্যায় পড়েছিল। দুর্ঘটনার চার সপ্তাহ আগে, UK Civil Aviation Authority (CAA) বোয়িং-এর বেশ কয়েকটি মডেলে ফুয়েল সিস্টেম সংক্রান্ত সম্ভাব্য ঝুঁকির কথা উল্লেখ করে সতর্কতা জারি করেছিল। সেই তালিকায় বোয়িং ৭৮৭-এর পাশাপাশি ছিল B737, B757, B767 এবং B777-এর মতো বিমানও।
AI 171 বিমানে আগেই TCM পরিবর্তন হলেও, লকিং ব্যবস্থা পরীক্ষা করা হয়নি
জানা গেছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত AI 171 বিমানে ২০১৯ ও ২০২৩ সালে Throttle Control Module (TCM) পরিবর্তন করা হয়েছিল। তবে ২০১৮ সালে মার্কিন FAA যে পরামর্শমূলক বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল, তার ভিত্তিতে লকিং মেকানিজম পরীক্ষা করা হয়নি — কারণ সেটি বাধ্যতামূলক ছিল না। শিয়াভোর দাবি, “বোয়িং ৭৮৭ একটি ইঞ্জিনে ওড়ার ক্ষমতা রাখে, কিন্তু AI 171-এর ক্ষেত্রে দুটো ইঞ্জিনেরই ফুয়েল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে, পুনরায় ইঞ্জিন চালু করার জন্য পর্যাপ্ত সময় বা উচ্চতা ছিল না।” RAT (Ram Air Turbine) বিমানের ইমার্জেন্সি পাওয়ার সিস্টেম। এই ক্ষেত্রে সেটিও সঠিকভাবে কাজ করেনি। শিয়াভোর মতে, এটা “বিমানের সফটওয়্যারের একটি বিপজ্জনক সমস্যা, যেটা আগে ঘটেছে এবং আবার ঘটতে পারে।”
Kolkata Rain Forecast: ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস আজও, বেলা গড়াতেই আবহাওয়ায় বড় বদল কোন কোন জেলায়?
তিনি আরও বলেন,“এই রিপোর্টে যদি বোয়িং-এর সফটওয়্যারকে ক্লিন চিট দেওয়া হয়ে থাকে, তা হলে সেটা আন্তর্জাতিক তদন্ত নীতিমালার গুরুতর লঙ্ঘন। প্রথম দুর্ঘটনায় দোষ চাপানো হয়েছিল পাইলটদের উপর। কিন্তু গোপন সফটওয়্যার ত্রুটিগুলি তখন রয়ে গিয়েছিল। আর তাই দ্বিতীয়বারের মতো প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটেছে।”
এই ঘটনায়, আন্তর্জাতিক মহলে বোয়িং ৭৮৭ মডেলের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। তদন্ত এখনো চলছে, তবে এই ধরণের সফটওয়্যার ত্রুটি যদি নিশ্চিত হয়, তবে গোটা বিমান শিল্পেই তা বড়সড় ধাক্কা দিতে পারে।
AAIB-এর প্রাথমিক রিপোর্ট কী বলছে?
Aircraft Accident Investigation Bureau (AAIB)-এর প্রকাশিত প্রাথমিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার বিমানের ফুয়েল কন্ট্রোল সুইচ “Run” থেকে “Cutoff”-এ চলে যায় এক সেকেন্ডের ব্যবধানে। এই সুইচগুলো ইঞ্জিনে ফুয়েল প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে। তবে রিপোর্টে এটি স্পষ্ট করা হয়নি—সুইচগুলো কোন পাইলটের দ্বারা সরানো হয়েছিল কি না। কেবল উল্লেখ রয়েছে, এক পাইলট অপরজনকে প্রশ্ন করেন কেন ইঞ্জিনের ফুয়েল বন্ধ করা হয়েছে, আর উত্তরে তিনি বলেন—“আমি করিনি।”
সামগ্রিক প্রযুক্তি ত্রুটি নিয়ে তদন্ত
The Indian Express-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, AI 171 বিমানে ইলেকট্রিক্যাল বা সফটওয়্যার কম্পোনেন্টে ত্রুটির কারণে ফুয়েল সুইচ নিজে থেকেই “Cutoff” অবস্থায় চলে গিয়েছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সরকারের বার্তা: “সিদ্ধান্তে পৌঁছাবেন না এখনই”
ভারত সরকার স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, এটি একটি প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট এবং পূর্ণাঙ্গ ও চূড়ান্ত তদন্ত রিপোর্ট আসতে আরও সময় লাগবে। ততদিন পর্যন্ত জনসাধারণ ও সংবাদমাধ্যমকে অনুমান-ভিত্তিক সিদ্ধান্তে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে সরকার।
West Bengal news Live Updates:নতুন করে হিংসায় উত্তাল বাংলাদেশ, গোপালগঞ্জে আগুনে সংঘর্ষ, ভাঙচুর, নিহত ৪, জারি কার্ফু
উল্লেখ্য গত মাসে অ্যামেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে টেকঅফের কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে লন্ডনগামী AI 171 বিমানটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এটি BJ মেডিক্যাল কলেজের হোস্টেল বিল্ডিংয়ে আছড়ে পড়ে। ঘটনায় বিমানে থাকা ২৪১ জন যাত্রী ও কর্মীসহ মোট ২৬০ জন প্রাণ হারান।