Air pollution is increasing in Kolkata: দূষণ নিয়ে জোর চর্চায় কলকাতা থেকে দিল্লি। দূষণে দিল্লিকে টক্কর দিতে চলেছে কলকাতা? কলকাতার পরিবেশ দূষণ নিয়ে উদ্বিগ্ন বিজ্ঞানীরা। বায়ুদূষণ, শব্দ দূষণ কমার কোনও লক্ষণ আপাতত দেখা যাচ্ছে না। কেন ভয়ঙ্কর দূষণের কবলে কলকাতা ও শহরতলী? রাজ্য সরকার ও পুরসভা এসব জানে না, এমন নয়। কিন্তু এ বিষয়ে তেমন কোনও উদ্যোগ চোখে পড়ে না বলে মনে করছেন অভিজ্ঞমহল। বিশিষ্ট পরিবেশ বিজ্ঞানী স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে এই দূষণের একাধিক কারণ জানিয়েছেন। সেই কারণগুলি নিয়েই বিস্তারিত এই প্রতিবেদন। মূলত ১০টি কারণ উল্লেখ করেছেন এই পরিবেশ গবেষক।
১. শহরে যানবাহনের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। যার ফলে বাতাসে কার্বন মনোক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড এবং সূক্ষ্ম ধূলিকণার পরিমাণ বাড়ছে।
২. কলকাতা শহরকে কেন্দ্র করে আশপাশে অনেকগুলো ইটভাটা গড়ে উঠেছে। ইটভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়া গ্রামীণ ও শহরতলির বায়ুকে দূষিত করছে।
৩. অতিরিক্ত যানজট এবং যাত্রীবাহী গাড়ির টানা হর্ন বাজানো শব্দ দূষণের বড় কারণ।
৪. অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও সবুজায়ন হ্রাস, গাছ কাটার কারণে শহরের সবুজ স্থান কমে গিয়েছে। যা পরিবেশকে ভারসাম্যহীন করে তুলছে।
৫. অপরিকল্পিত নির্মাণ কাজ ধূলিকণা ও বর্জ্য সৃষ্টির প্রধান উৎস।
৬. কলকাতায় বৃক্ষ রোপনের জায়গায় এমনিতেই কম। গাছগুলোর শিকড় মাটির গভীরে যেতে পারছে না। তাই অল্পবিস্তর ঝড় বৃষ্টি হলেই উপড়ে যাচ্ছে। গাছ কাটার কারণে শহরের সবুজ স্থান কমে গিয়েছে, যা পরিবেশকে ভারসাম্যহীন করে তুলছে।
৭. কলকাতার মতো শহরে প্রতিদিন প্রচুর ইলেকট্রনিক বর্জ্য জমা হচ্ছে। মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে ওঠেনি। ইলেকট্রনিক বর্জ্য পরিবেশ দূষণের অন্যতম প্রধান কারণ।
আরও পড়ুন- Kolkata Pollution: রাজধানী দিল্লির সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে কলকাতা! মহানগরীর দূষণ নিয়ে উদ্বেগ এবার চরমে
৮. পূর্ব কলকাতার জলাশয় মহানগরের কিডনি। এই অঞ্চলে অবৈধ নির্মাণ ক্রমশ বাড়ছে। শহরে কৃত্রিমভাবে ওয়াটার রিচার্জিং পলিসি এখনও তৈরি করা যায়নি। ভূগর্ভস্থ জল ক্রমশ কমে যাচ্ছে।
৯. প্রচুর পরিমাণে প্লাস্টিক ব্যবহার হচ্ছে, কম মাইক্রোনের প্লাস্টিক এখনও প্রচুর পরিমাণে বাজারগুলিতে পাওয়া যাচ্ছে। প্লাস্টিক এবং ইলেকট্রনিক বর্জ্য সঠিকভাবে নিষ্পত্তি না হওয়ায় মাটি ও জল দূষিত হচ্ছে। পাশাপাশি গঙ্গা এবং অন্যান্য জলাশয়ে শিল্প ও গৃহস্থালির বর্জ্য ফেলা অব্যাহত।
১০. গবেষণার লক্ষ্য এই মেগাসিটিতে বর্তমান বায়ু দূষণ পরিস্থিতি চিত্রিত করা। কারণ, এটি সাসপেন্ডেড পার্টিকুলেট ম্যাটার (SPM), NO2 এবং SO2 এর মতো বিভিন্ন বায়ু দূষণকারীর বর্তমান স্তর বিশ্লেষণ করে। বিশ্লেষণের ফলাফল শহরের বিভিন্ন অংশে বায়ু দূষণকারী বিশেষ করে SPM এবং NO2 এর গুরুতর স্তর দেখায়। জাতীয় পরিবেশ প্রযুক্তি গবেষণা সংস্থা বা ‘নিরি’র সমীক্ষা অনুযায়ী রাস্তার ধারে খাবারের দোকানে ব্যবহৃত কয়লার উনুনের ধোঁয়াই শহরের বায়ু সবচেয়ে বেশি বিষিয়ে দিচ্ছে।
পরিবেশ দূষণ রোধে মাঝে-মধ্যে সচেতনতার কথা বলা হয়। অভিজ্ঞ মহলের বক্তব্য, সরকারও এব্যাপারে খুব একটা উদ্যোগী নয়। একইসঙ্গে সাধারণ মানুষের একাংশ নির্বাকার চিত্তে দূষণ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে চলছে। কলকাতা ভবিষ্যতে কতটা মানুষের বাসযোগ্য থাকবে সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।