8,000‑crore booth outreach project:মহারণ ২০২৬। দরজায় কড়া নাড়ছে ফের একটা বিধানসভা নির্বাচন। বিহার অভিযানের মধ্যেই "টার্গেট বঙ্গ" শুরু করে দিয়েছে BJP। ইতিমধ্যেই দু'বার রাজ্যে জনসভা করে গিয়েছেন বিজেপির শীর্ষ সেনাপতি নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী। তবে বসে নেই তৃণমূল কংগ্রেসও। BJP শাসিত রাজ্যগুলিতে বাঙালি বিদ্বেষের অভিযোগ তুলে সোচ্চার হয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই নির্বাচনে বাঙালি বিদ্বেষ বড় ইস্যু হতে চলছে। এসবের মধ্যে রাজ্যে সরকারের নয়া প্রকল্প, "আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান"। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, এই প্রকল্পে বাজিমাত করতে চায় ঘাসফুল শিবির। সেদিকেই মূল লক্ষ্য তৃণমূলের।
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে মহিলা ভোট বড় ধরনের ফ্যাক্টর হয়েছিল। এখন ভোট ব্যাংকের নানা রূপ। শুধু মুসলিম, হিন্দু, আদিবাসী, মতুয়া ভোট ব্যাংকে আটকে নেই। মহিলা ভোট ব্যাংকও বড় ফ্যাক্টর। যা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। ভোটের সময় এমনও শোনা গিয়েছে কোনও কোনও ক্ষেত্রে স্বামীদের কথা না শুনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছে মহিলারা।একুশে জুলাই আসা মহিলাদের একাংশ লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা আরও বাড়াতে আবেদন জানিয়েছেন। এমনকী বিরোধীরাও ভোটবাক্সে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের 'মাহাত্ম্য' স্বীকার করে নিয়েছে। আগামী ভোটেও মহিলা ভোট ধরে রাখতে মরিয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী হিন্দু ভোট ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিজেপিকে দেওয়ার আবেদন জানিয়ে আসছেন। মুসলিম ভোট ব্যাংকের সমর্থন এই রাজ্যে পুরোপুরি তৃণমূলের ওপর। দিঘায় জগন্নাথ মন্দির করেছে রাজ্য। মূল উদ্যোক্তাই মুখ্যমন্ত্রী। রাজনৈতিক মহলের ধারনা, এই মন্দির নির্মানে নানা উদ্দেশ্য থাকতেই পারে। তবে দলের হিন্দু ভোট বেঁধে রাখাও অন্যতম কারণ। মাত্র কয়েক শতাংশ হিন্দু ভোটের সমর্থন বিগড়ে গেলেই তৃণমূলের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়তে বাধ্য।
আরও পড়ুন- TMC:তৃণমূল কাউন্সিলরদের আকচাআকচির মাশুল গুণছেন শহরবাসী, শতবর্ষ প্রাচীন পুরসভার অচলাবস্থা কাটছেই না
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় বড় সাফল্য পেয়েছিল বিজেপি। একলাফে ১৮টি আসন পেয়েছিল মোদী-শাহের দল। সেই সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন টার্গেট করেছিল বিজেপি। কিন্তু লোকসভায় খারাপ ফলের পর জনসংযোগ বৃদ্ধির ওপর জোর দেয় তৃণমূল। সাংসদ, বিধায়ক, নেতানেত্রীরা কর্মীদের বাড়িতে থাকার কর্মসূচি নেয়। শহর সহ প্রত্যন্ত গ্রামে যেতে শুরু করে তৃণমূলের নেতৃত্ব। হাতেনাতে তার সুফল পায় বিগত বিধানসভা নির্বাচনে।
আরও পড়ুন- West Bengal News LIVE Updates:সময় বেঁধে দিয়েছিলেন মোদী-শাহ? হুমকির মুখে পদত্যাগ ধনখড়ের? বিস্ফোরক দাবি কল্যাণের
এদিকে আরজি কর কাণ্ড, কসবা 'ল কলেজ কাণ্ড, তার আগে শেখ শাহজাহানদের 'কীর্তি', গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, খুন, শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতি, খাদ্য দফতরে দুর্নীতি, একাধিক মন্ত্রী ও নেতাদের গ্রেফতারি, সর্বোপরি প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর চাকরি হারানো, যাদের বেশিরভাগই যোগ্য শিক্ষক, এইসব ইস্যুর চাপে প্রায় 'ল্যাজেগোবরে' অবস্থা তৃণমূলের। এরই মধ্যে চাপ কাটাতে 'আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান' প্রকল্প শুরু করতে চলেছে রাজ্য সরকার। এর ঢালাও প্রচার শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। বুথ ভিত্তিক এই উন্নয়ন প্রকল্পে বাজিমাত করতে মরিয়া তৃণমূল। তবে এই নয়া পরিকল্পনা কতটা সহজে বাস্তবায়িত হবে তাও দেখার। দুয়ারে সরকার, দুয়ারে রেশন, এবার দুয়ারে উন্নয়ন। তবে ২০২৬-এ বিজেপি তৃণমূলকে একা 'খেলতে' দেবে না বলে ঘোষণা করেছে। তাদের নেতারাও বলছে 'খেলা হবে'।
আরও পড়ুন- Bengali harassment:'বাপ-দাদার ভাষা রক্ষার আন্দোলন চলবে, বাঙালিকে কোণঠাসার চেষ্টা মানব না', সোচ্চার তৃণমূলের ঋতব্রত