Anger is increasing as water supply system is not started in several areas under Jal Jeevan Mission project in east burdwan: জাতীয় 'জল জীবন মিশন' (Jal Jeevan Mission) প্রকল্পে বাড়ি-বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে পাইপ। তাতে কল লাগিয়ে দিয়ে তার 'জিও ট্যাগিং' পর্যন্ত করা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও ওই কল দিয়ে পড়ছে না জল। বিষয়টি নিয়ে যারপরনাই ক্ষুব্ধ পূর্ব বর্ধমান জেলার জামালপুর সহ বিভিন্ন ব্লকের বহু গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁদের কথায়, জল জীবন মিশন প্রকল্প থাকলেও জীবনে বাঁচার জলের আকাল এখনও রয়েই গিয়েছে।
ভারতের প্রত্যেক গ্রামীণ এলাকার বাড়ি বাড়ি প্রতিদিন পরিষ্কার ও নিরাপদ পানীয় জল পৌঁছে দেওয়াই হল, এই প্রকল্পের মুখ্য উদ্দেশ্য। ভারত সরকারের জলশক্তি মন্ত্রক ২০১৯ সালে 'জল জীবন মিশন' প্রকল্পের কাজের সূচনা করে। ২০২৪ সালের মধ্যে প্রকল্পের কাজ যথাযথ ভাবে সম্পূর্ণ করার সময়সীমা নির্দিষ্ট করা হয়েছিল। সেই সময়সীমা পেরিয়ে গিয়ে ক্যালেন্ডার স্বাগত জানিয়ে দিয়েছে ২০২৫ সালকে। কিন্তু বঙ্গের অন্যান্য জেলার মতো পূর্ব বর্ধমান জেলাতেও প্রকল্পের কাজ এখনও সম্পূর্ণতাই পায়নি।
সর্বশেষ পাওয়া তথ্য (ড্যাশবোর্ড প্রাপ্ত) অনুযায়ী, জল জীবন মিশন প্রকল্পে বাড়ি-বাড়ি পাইপ লাইনে পৌঁছে দেওয়ার কাজ পশ্চিমবঙ্গে ৫৪ শতাংশ সম্পূর্ণ হয়েছে। রাজ্যের জেলাগুলির নিরিখে এই কাজের অগ্রগতিতে শীর্ষে রয়েছে পশ্চিম বর্ধমান (Purba Bardhaman)। কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে ৭০.৭৬ শতাংশ। সব থেকে পিছিয়ে রয়েছে পুরুলিয়া জেলা। এই জেলায় কাজ হয়েছে মাত্র ৩২.৪৫ শতাংশ। জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের (পূর্ব বর্ধমান) দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী পূর্ব বর্ধমান জেলায় ৭০ শতাংশ কাজ সম্পূর্ণ করে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী, “পূর্ব বর্ধমান জেলার ২৩টি ব্লকের ২১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ২১৬৮ টি গ্রামের মোট জন সংখ্যা ৪২,৭৬,৬৫৫ জন, বাড়ির সংখ্যা ১১,২১,৫৮২টি। তার মধ্যে ৭,৮৩,০০৬ টি বাড়িতে এখনও পর্যন্ত জল জীবন মিশন প্রকল্পের পাইপ লাইন সংযোগ পৌছে দেওয়া গিয়েছে।
আরও পড়ুন- RG Kar Case: সুপ্রিম কোর্টে পিছল আরজি কর শুনানি, ফের মামলা শোনার দিন জানাল প্রধান বিচারপিতর বেঞ্চ
শুধু তাই নয় ,জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর দাবি করেছে, “প্রকল্পের কাজের অগ্রগতিতে জেলার শীর্ষে রয়েছে পূর্বস্থলী ২ নম্বর ব্লক। এই ব্লকের ৯২.২৮ বাড়িতেই নাকি পাইপ সংযোগ পৌঁছে গিয়েছে। সব থেকে পিছিয়ে রয়েছে জেলার গলসি ১ নম্বর ব্লক। এই ব্লকের মাত্র ২৮.২৮ শতাংশ বাড়িতে পাইপ সংযোগ পৌঁছেছে। তবে যতটুকু কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে, তা নিয়েও অভিযোগ ওঠার শেষ নেই। কারণ, বাড়ি বাড়ি পাইপ পৌঁছোলেও তা থেকে জল মেলে না।
আরও পড়ুন-West Bengal News LIVE: স্যালাইন কাণ্ডে রক্ষাকবচ চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ জুনিয়র ডাক্তার
সম্প্রতি নবান্নের বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “বাড়ি-বাড়ি পানীয় জল পৌঁছে দিতে প্রশাসন দায়বদ্ধ। শুধু বাড়ি-বাড়ি পাইপ লাইন সংযোগ পৌঁছে দেওয়া মানেই কাজ শেষ নয়। ওই পাইপ দিয়ে নিয়মিত জল পড়ছে, সেটা নিশ্চিত করতেই হবে।"
আরও পড়ুন-Cyber Crime: ফেসবুকের বিজ্ঞাপনে বিপুল মুনাফার 'টোপ'! লক্ষাধিক টাকা খুইয়ে পুলিশের দ্বারস্থ প্রতারিত
মুখ্যমন্ত্রী পাইপ লাইন দিয়ে নিয়মিত জল পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার কথা বলেও বাস্তবে সেটাই হয় না অভিযোগ করেছেন পূর্ব বর্ধমান জেলার জামালপুর ব্লকের একাধিক পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা। ব্লকের চকদিঘি পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান গৌরসুন্দর মণ্ডল বলেন, “জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তর দাবি করেছে, বাড়ি বাড়ি পাইপ লাইন সংযোগ দেওয়ার কাজ জামালপুর ব্লকে ৯০.৬৬ শতাংশ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। জেলা প্রশাসন জামালপুর ব্লকের আবুজহাটি দুই নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতকে জল জীবন মিশন প্রকল্পে জেলার ’সজল গ্রাম পঞ্চায়েতের’ স্বীকৃতি দিয়েছে। অথচ একই ব্লকের বাকি ১২ টি পঞ্চায়েতের অনেক গ্রামের বাড়িতে বহুদিন আগে ’জল জীবন মিশন’ প্রকল্পের পাইপ পৌঁছোলেও জল আজও মেলে না।"
আরও পড়ুন-North 24 Parganas News: ফেলে মার ছেলের, সীমাহীন অত্যাচার বউমারও, নিদারুণ যন্ত্রণায় আত্মহত্যা বৃদ্ধের
এই অভিযোগের বিষয় নিয়ে জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) আয়েষা রাণী বলেন,“পাইপ সংযোগ পৌঁছে যাওয়া বাড়িগুলিতে জল পৌঁছে দেওয়া নিশ্চিত করার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেটা করার চেষ্টা আমরাও চালিয়ে যাচ্ছি। কিছু কিছু জায়গায় সমস্যা এখনও রয়েছে। আস্তে আস্তে সমস্যার সমাধান হচ্ছে।"