Bihar voter list revision: বিহারের ভোটার তালিকায় 'বড় ভুল' হওয়ার আশঙ্কা! আসাদুদ্দিন ওয়াইসির সতর্কবার্তা- 'কোটি কোটি মানুষের নাম বাদ পড়তে পারে'।
এআইএমআইএম সভাপতি আসাদুদ্দিন ওয়াইসি বিহারে দ্রুত গতিতে ভোটার তালিকা আপডেট করার নির্বাচন কমিশনের 'পরিকল্পনা' নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, 'স্বল্প সময়ের মধ্যে ভোটার তালিকা আপডেট করার মাধ্যমে, বিহারের কোটি কোটি অভিবাসী এবং দরিদ্র মানুষের নাম তালিকা থেকে মুছে ফেলা হতে পারে'। তবে ওয়াইসি একা নন। কমিশনের এই পদক্ষেপে প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস সহ একাধিক বিরোধী দল।
সামনেই বিহারে বিধানসভা ভোট। তার আগে ভোটার তালিকাঊ 'বিশেষ নিবিড় সংশোধন' নিয়ে নানান প্রশ্ন উঠছে। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ভোটার তালিকায় থাকা বাংলাদেশ, নেপাল ও মায়নামারের অবৈধ অনুপ্রকবেশকারীদের নাম বাদ দিতে এই 'নিবিড় সংশোধনের' কাজ করা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন দাবি করেছে, বিহারে ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধন সফলভাবে শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রায় ৭৮ হাজার বুথ পর্যায়ের কর্মীকে এই কাজে নিয়োগ করা হয়েছে। আরও ২০ হাজার কর্মীকে নিয়োগ করা হবে। বিহারের পর পশ্চিমবঙ্গ সহ আরও পাঁচ রাজ্যে ভোটার তালিকার নিবিড় সমীক্ষার কাজ চালানো হবে বলে কমিশন সূত্রে খবর। নির্বাচন কমিশন ঠিক করেছে, ২০০৩ সালের পর থেকে যার নাম ভোটার তালিকায় উঠেছে, তাদের ও তাদের বাবা-মা-র নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হবে। সেগুলি খতিয়ে দেখা হবে। আর যাদের নাম ২০০৩ সালের আগে ভোটার তালিকায় উঠেছে, তাদের শুধু একটা ফর্ম পুরণ এবং তা জমা করতে হবে। কমিশন জানিয়েছে, ১ অগাস্ট খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হবে। তা নিয়ে আপত্তি থাকলে ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জানাতে হবে। তারপর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করবে কমিশন।
কমিশনের এই পদক্ষেপ নিয়েই আপত্তি জানিয়েছে বিরোধী দলগুলি। আরজেডি নেতা মনোজ ঝা বলেছেন, 'বিহারে ভোটার তালিকা থেকে ৩৭ শতাংশ মানুষের নাম বাদ দেয়ার জন্য এই কাজ করা হচ্ছে। বিহারের ৩৭ শতাংশ ভোটদাতা পরিযায়ী শ্রমিক যারা ভিন রাজ্যে থাকেন। তারা উৎসবের সময় বাড়িতে আসেন। এখন তাদের পরিবারের মানুষকে বার্থ সার্টিফিকেট দিয়ে প্রমাণ করতে হবে, তারা ভারতীয়। এই সব মানুষরা অধিকাংশই সংখ্যালঘু, দলিত, অনগ্রসর গরিব মানুষ। জন্মের সার্টিফিকেট কী তারা রেখে দিয়েছেন বাড়িতে?'
এআইএমআইএম নেতা আসাদুদ্দিন ওয়েইসি বলেছেন, যে সব কারণ দেখিয়ে নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধন করছে, সেই একই কারণে ২০০৩ সালে তালিকা সংশোধিত হয়েছে। এখন ভোটার তালিকায় নাম তুলতে গেলে নিজের ও বাবা-মার জন্মের সার্টিফিকেট দেখাতে হবে।
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ওব্রায়েন বলেছেন, আসলে এইভাবে ঘুরপথে এনআরসি চালু করতে চাইছে সরকার। চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের তৃণমূল প্রতিনিধিদল মঙ্গলবার মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে তাদের আপত্তির কথা জানিয়েছে।কংগ্রেসও বলেছে, এর ফলে ভোটদাতাদের নাম বাদ দেয়ার একটা সুযোগ তৈরি হচ্ছে।
কংগ্রেস, আরজেডি, সিপিআই(এম) এবং সমাজবাদী পার্টি সহ ১১টি দলের নেতারা নির্বাচন কমিশনের সাথে দেখা করে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কংগ্রেস নেতা অভিষেক সিংভি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে এই প্রক্রিয়ায় কমপক্ষে দুই কোটি মানুষ ভোটদান থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। তিনি বলেন যে বিহারের প্রায় আট কোটি ভোটারের মধ্যে অনেকেই দরিদ্র, দলিত, উপজাতি এবং পরিযায়ী শ্রমিক। এত অল্প সময়ের মধ্যে তাদের নিজস্ব বা তাদের পিতামাতার জন্ম শংসাপত্রের মতো নথি তৈরি করা তাদের পক্ষে খুব কঠিন।
বিরোধীদের দাবি, ভোটার তালিকায় এই আপডেট করার ফলে বিহারের সাধারণ নাগরিকরা, বিশেষ করে দরিদ্র এবং অভিবাসীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এবং তারা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।