Dankuni khatal eviction: আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে সমস্ত খাটাল উচ্ছেদ করে দিতে হবে। গত ৭ জুলাই জাতীয় পরিবেশ আদালত এরকমই নির্দেশ দিয়েছিল। আর সেই নির্দেশ মোতাবেক মঙ্গলবার থেকে ডানকুনিতে শুরু হল খাটাল উচ্ছেদের কাজ। কিন্তু ডানকুনিতে এতো খাটাল কেন? আর উচ্ছেদই বা কেন? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে গেলে বেশ কয়েক বছর পেছনে ফিরে যেতে হবে।
২০০৮ সালে কলকাতায় খাটাল উচ্ছেদ করা হয়েছিল। তখন প্রায় ১৫০ টি খাটাল মালিক তাঁদের গবাদী পশু (গরু, মহিষ, ছাগল) নিয়ে কলকাতার উপকণ্ঠে ডানকুনিতে খালপাড় ধরে ছড়িয়ে পড়েন। ক্রমশ ডানকুনি খালপাড় এর দুধারে গজিয়ে ওঠে অসংখ্য খাটাল। এই খাটাল থেকেই দুধ যায় কলকাতায়। কিন্তু খাটাল গড়ে তুললেও খাটাল মালিকেরা গবাদী পশুর বর্জ্যর জন্য আলাদা কোনো ব্যবস্থা করেননি।
ডানকুনি খালেই ফেলে দেওয়া হতো। এর ফলে ক্রমশ খাল বুজে যাওয়ায় বর্ষায় জল নিকাশিতে সমস্যা সৃষ্টি হয়। ফলে শহরবাসী পড়তেন চরম দুর্দশাতে। পাশাপাশি এলাকাও ক্রমশঃ দূষিত হয়ে পড়ে। রাজ্যের সেচ দপ্তর ১৮ কোটি টাকা খরচ করে মাত্র দেড় বছর আগে বৈদ্যবাটি থেকে ডানকুনি পর্যন্ত ১৫ কিমি খালের আমূল সংস্কার করে। বেশ কিছুদিন পরিষ্কার থাকলেও আবার গোববের চাপে মুখ ঢাকে ডানকুনি খাল।
ডানকুনি পুরসভা খাটাল মালিকদের বারংবার উঠে যেতে বললেও তারা গড়িমসি করে। জাতীয় পরিবেশ আদালতে এই নিয়ে মামলা ওঠে। এরপরই আদালতের নির্দেশ যায় খাটাল মালিকদের বিপক্ষে। বেশ কিছুদিন ধরে পুরসভার পক্ষ থেকে বারবার মাইকিং করে খাটাল মালিকদের নিজে থেকে গবাদিপশু ও খাটাল সরিয়ে দেওয়ার আবেদন করেছিল প্রশাসন। কর্ণপাত না করেনি বেশ কিছু খাটাল মালিক।
এদিন সকাল থেকেই জেসিবি দিয়ে শুরু হয় খাটাল উচ্ছেদের কাজ। প্রথমে খাটাল থেকে গরু, মোষ গুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে দেওয়া হয়। কেটে দেয়া হয় বিদ্যুৎ সংযোগ। তারপর শুরু হয় কাঠামো ভাঙার কাজ। উচ্ছেদ অভিযানে মোতায়েন র্যাফ সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী । নেতৃত্বে ডানকুনি থানার আইসি শান্তনু সরকার। এছাড়া পুরসভার কর্মী, বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মী, পরিবহন দপ্তরের আধিকারিক সহ বিভিন্ন দপ্তরের নজরদারিতে চলে খাটাল উচ্ছেদ অভিযান। গোটা উচ্ছেদ প্রক্রিয়ার ভিডিওগ্রাফি করা হয়। আকাশপথে ড্রোনের মাধ্যমে চলে নজরদারি। খাটাল মালিকরা পুনরায় কিছুদিন সময় দেওয়ার আবেদন রাখেন প্রশাসনের কাছে। খাটাল মালিকদের দাবি খাটাল ভেঙে দিলে যেমন বহু মানুষ কর্মহারা হবে তেমনি রাজ্যজুড়ে দুধের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সব কিছু হচ্ছে। তাই আর কোনভাবেই এখানে খাটাল রাখা যাবেনা।