Dilip Ghosh Delhi Visit: ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছিল বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষের। প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনে গেলে তাঁর উদ্দেশ্যে নানা কটূক্তি ছুঁড়ে দিতে ছাড়েনি দলের তাবড় নেতারাও। তাঁকে ঘিরে কর্মীরা বিক্ষোভও দেখিয়েছে। এমনকী ২১ জুলাই তাঁর তৃণমূল যোগ নিয়েও জল্পনা চলছিল। এসবের মধ্যে মঙ্গলবার দলের নয়া রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের সঙ্গে দেখা করে বুধবার সকালে দিল্লি গেলেন খড়্গপুরের প্রাক্তন সাংসদ। তাহলে কি ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের আগে নতুন দায়িত্ব পাচ্ছেন দিলীপ ঘোষ? তা নিয়ে জোর গুঞ্জন ছড়িয়ে রাজ্য় রাজনীতিতে।
২১ জুলাই কোনও না কোনও মঞ্চে দিলীপ ঘোষ থাকবেন। এই জল্পনার প্রশ্নে নেতাজি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দিল্লি যাওয়ার পথে দিলীপ ঘোষ বলেন, "আমার বন্ধুরা খুব কষ্টের মধ্যে আছেন, যাঁরা আমাকে তৃণমূলে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। যারা নতুন পার্টি করে নাম দিয়ে আমার নামে চালিয়ে দিচ্ছেন। দেখি কাল থেকে আবার কি গল্প হয়। গল্প তৈরি করতে করতে ওরা ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছেন। মাথা ব্যথা হয়ে যাচ্ছে। কাল রাত থেকে মিটিং বসে গিয়েছে। কি ফান্ডা বের করা যায়, আমি অপেক্ষা করছি আপনারাও অপেক্ষা করুন।" এদিন তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন দলের সঙ্গে ২০২১ সাল থেকে তাঁর দূরত্ব রয়েছে।
দিলীপ ঘোষ বলেন, "দলের সঙ্গে আমার তেমন সম্পর্ক নেই। পার্টি পলিটিক্স অনেকে অনেকরকম করে। কারও কাছে পেশা, আমাদের কাছে মিশন। পার্টিকে দিতে এসেছি। পার্টি বড় দায়িত্ব দিয়েছে। কাজ করার চেষ্টা করেছি। প্রথমে কর্মীরা বিশ্বাস করেছেন। সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করেছে বলে দল এগিয়েছে। ২৬ আমাদের কাছে মাইলস্টোন। সবাইকে নিয়ে চলবে। পুরনো কর্মীরাও চাইছে দিনরাত। পার্টি কি দিল ভাবিনি, আমি কি দিতে পারছি পার্টিকে সেটাই ভাবছি। সেটাই দেওয়ার আছে।"
২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী করা নিয়ে আদি ও নতুনদের নিয়ে দলে বিবাদ শুরু হয়েছে। পরবর্তীতে নতুন কমিটি হওয়ার পর তা আরও বেড়ে যায়। পদ্মশিবিরের বহু নেতা-কর্মী এখনও পার্টির কর্মসূচিতে থাকেন না। এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, "পুরনোদের গুরুত্ব থাকা উচিত। সবাই আদর্শ নিয়ে আসে তেমন নয়, কেউ কেউ লক্ষ্য় নিয়ে আসে। নিতে হবে সবাইকে। যোগ্যতা অনুযায়ী, তাঁর ক্ষমতা অনুযায়ী কাজ দিতে হবে। পজেটিভ পরিবেশ দিতে হবে। এটা এবার হয়ে যাবে। আমি তো অনেককেই জয়েন করিয়েছি। কাউকে অসম্মান করেছি, অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছি কি? পার্টি যখন গুরুত্ব দেয়নি তখন পার্টি থেকে সরে গিয়েছি। আজ নয়, ২১ সাল থেকে এটা শুরু হয়েছে। আমি পুরনোদের সঙ্গে আছি। ডাকা হলে যাব। নাহলে দূর থেকে পার্টির সেবা করব। ১৯ -হাফ, ২১ সাফ, হাফ হয়ে গিয়েছে। এবার কর্মীরা কাল বলছিল ১০০ আসন চাই। সেটা প্রাণ দিয়ে লড়াই করে পার্টিকে পাইয়ে দেব।"
কাল শমীক ভট্টাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ, তারপরের দিনই দিল্ল যাত্রা। সেখানে শীর্ষ নেতৃত্বের তলব। দলের মধ্যে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। তাহলে কি ফের কোনও বড় দায়িত্ব পেতে চলেছেন দিলীপ ঘোষ। দিল্লি যাওয়া নিয়ে তিনি বলেছেন, দিল্লি যাওয়াটা রাজনীতির ফ্যাসনের মধ্যে পড়ে। আমি সেই ফ্যাসান অনুকরণ করি না। কিন্তু অনেক পুরন কার্যকর্তা, পুরনো সাংসদ ও পার্টির নেতারা আছেন। যখন সাংসদ ছিলাম না তখনও যেতাম। ওখানে যত বাঙালি বস্তি আছে সেখানে দেখা করতে যেতাম নির্বাচনে যেতাম। কোনও অফিসিয়াল ট্যুরে আমি যাচ্ছি নাা। পরক্ষণেই এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "কেউ না কেউ তো ডেকেছেন, তাঁদের সঙ্গে দেখা করব।" "তাঁরা পার্টির বড় নেতা", বলেও জানিয়ে দেন দিলীপ।