Yunus Sends Mangoes To PM Modi: ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে উত্তেজনা আবহে এবার ইউনূস সরকার ভারতে ১০০০ কেজি আম পাঠাচ্ছে। আজ সোমবার ৬০টি কার্টুনে এই বিশাল পরিমাণ আম দিল্লিতে এসে পৌঁছাবে। পাশাপাশি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার জন্যও বিশেষ প্রজাতির 'সুস্বাদু আম' পাঠাচ্ছে ইউনূস সরকার। কূটনৈতিক মহলের প্রশ্ন 'আমের মিষ্টতা' কি তবে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে তিক্ততা দূর করবে?
ভারত-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েনের মাঝেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্য ১,০০০ কেজি বিখ্যাত 'হাড়িভাঙ্গা' আম পাঠাচ্ছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনূস। ঢাকা মনে করছে, এই 'আম কূটনীতি'-র মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে 'সম্পর্কের মিষ্টতা' ফেরানো সম্ভব। ঢাকা ট্রিবিউনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই বিশেষ আম পাঠানোর উদ্যোগ নিজেই নিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মহম্মদ ইউনূস। ৬০টি কার্টুনে প্যাক করা এই আম গত ১০ জুলাই আখাউড়া স্থলবন্দর হয়ে ভারতে রওনা দেয় এবং ১৪ জুলাই, তা দিল্লিতে পৌঁছানোর কথা।
শুধু প্রধানমন্ত্রী মোদীই নন, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহাকেও এই আম 'উপহার' হিসেবে পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ। উল্লেখ্য, ‘আম কূটনীতি’-র সূচনা করেছিলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রতি বছর ভারতের জন্য উপহারস্বরূপ আম পাঠানোর রীতি সেই সময় থেকেই চলে আসছে। এবার ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার সেই ঐতিহ্যই বজায় রাখার পথে হাঁটল। যদিও এই মুহূর্তে 'ভারত-বাংলাদেশ' সম্পর্ক বেশ টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
গত বছরের ছাত্র আন্দোলনের জেরে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হয় এবং তড়িঘড়ি ভারতে আশ্রয় নেন। এরপর থেকে বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা চরমে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার চিন ও পাকিস্তানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর পথে হাঁটছে। তাতে করে ভারত-বাংলাদেশ 'উত্তেজনা' অব্যাহত। 'আম কূটনীতির' মাধ্যমে এই সম্পর্ক কিছুটা হলে তিক্ততা দূর করবে বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। চলতি বছরের এপ্রিলে ব্যাংককে BIMSTEC শীর্ষ সম্মেলনের সময় প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং মহম্মদ ইউনূস মুখোমুখি হন। সেখানে মোদী ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে ইউনূসকে সরাসরি বার্তা দেন।
অতীতে বাংলাদেশ থেকে আম কূটনীতির পালটা ত্রিপুরা উপহার হিসেবে বাংলাদেশে পাঠায় 'কুইন' প্রজাতির আনারস। বহু বছর ধরেই দুই দেশের মধ্যে এই ‘মৌসুমি উপহার বিনিময়’ চলে আসছে।
প্রাক্তন এক বাংলাদেশি কূটনীতিক বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'আম' নিছকই উপহারের মাধ্যম নয়। আমের মিষ্টতায় যদি সম্পর্কের তিক্ততা কিছুটা প্রশমিত হয়, তবে সেটি কূটনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবেই ধরা উচিত।”
বর্তমানে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের দাবি ও অবৈধ বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানো নিয়ে দুই দেশের মধ্যে টানাপোড়েন রয়েছে। এর মধ্যেই ঢাকার এই পদক্ষেপকে অনেকেই সম্পর্কের 'বরফ গলানোর ইঙ্গিত' হিসেবেই দেখছেন। হাড়িভাঙ্গা আমের মিষ্টতা সত্যিই কি দু’দেশের সম্পর্কের তিক্ততা কমাবে, তা সময়ই বলবে। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের এই ‘আম কূটনীতি’ নিঃসন্দেহে ভারতের দিক থেকে এক শুভেচ্ছাবার্তা হিসেবেই ধরা হচ্ছে।