/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/14/soni-2025-10-14-10-45-19.jpg)
Chhindwara doctor arrested: ডাঃ প্রবীণ সোনির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল।
Coldrif cough syrup deaths:মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়ারা জেলায় একাধিক শিশুমৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া চিকিৎসক ড. প্রবীণ সোনির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। রাজ্য পুলিশের তদন্তে জানা গেছে, তিনি শিশুদের জন্য যে কোল্ডরিফ (Coldrif) নামে কফ সিরাপটি লিখে দিতেন, সেই ওষুধের জন্য তিনি প্রস্তুতকারক সংস্থার কাছ থেকে ১০ শতাংশ কমিশন পেতেন।
ওই সিরাপটি উৎপাদন করত স্রেসান ফার্মাসিউটিক্যাল ম্যানুফ্যাকচারার (Sresan Pharmaceutical Manufacturer) নামের একটি তামিলনাড়ু-ভিত্তিক ওষুধ কোম্পানি, যার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই নকল ও বিষাক্ত ওষুধ তৈরির অভিযোগ উঠেছে। তামিলনাড়ু সরকার কোম্পানিটির লাইসেন্স বাতিল করে উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে, পাশাপাশি ইডি (Enforcement Directorate) সংস্থার বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চালিয়েছে।
এই মামলায় সোমবার পারাসিয়া আদালতের অতিরিক্ত সেশন বিচারক গৌতম কুমার গুজর ড. সোনির জামিন আবেদন খারিজ করেন। আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, “সরকারের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও ড. সোনি জেনেশুনে বিপজ্জনক ওষুধ শিশুদের প্রেসক্রাইব করেছেন, যার ফলে একাধিক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।”
আরও পড়ুন- লুধিয়ানায় আজতকের অঞ্জনা ওম কাশ্যপ, আরুণ পুরি ও ইন্ডিয়া টুডে গ্রুপের বিরুদ্ধে মামলা
তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর ভারতের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ হেলথ সার্ভিসেস (DGHS) নির্দেশ জারি করে জানায় — চার বছরের কম বয়সি শিশুদের জন্য Fixed Dose Combination (FDC) ওষুধ ব্যবহার করা যাবে না। তবুও ড. সোনি কোল্ডরিফ সিরাপ প্রেসক্রাইব চালিয়ে যান, যদিও জানা ছিল যে এই ওষুধ শিশুদের মূত্রনালীর জটিলতা ও কিডনি বিকল ঘটাচ্ছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, “ড. সোনির চিকিৎসাধীন অবস্থায় এখন পর্যন্ত ১৫ জন শিশু মারা গেছে, এবং তিনি কোম্পানির কাছ থেকে প্রেসক্রিপশন বাবদ ১০ শতাংশ কমিশন পেয়েছেন।”
ড. সোনির দাবি, তিনি নির্দোষ। ড. সোনির আইনজীবী পবন কুমার শুক্লা আদালতে বলেন, “তিনি একজন সরকারি চিকিৎসক। রোগীদের চিকিৎসার সময় শুধুমাত্র ওষুধ প্রেসক্রাইব করেছেন। ওষুধের গুণমান পরীক্ষার দায়িত্ব ওষুধ নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের, তাঁর নয়।” তাঁর আরও দাবি,“ড. সোনি ৩৫–৪০ বছর ধরে চিকিৎসা পেশায় রয়েছেন, তিনি জেনেশুনে কোনও ক্ষতিকর ওষুধ লেখেননি।”
আরও পড়ুন-Dipak Sarkar passes away:বঙ্গ রাজনীতিতে শোকের ছায়া! প্রয়াত বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা দীপক সরকার
এদিকে, পুলিশ জানিয়েছে, ড. সোনির আত্মীয়স্বজনের মালিকানাধীন একটি মেডিকেল স্টোর তাঁর বেসরকারি ক্লিনিকের পাশেই রয়েছে, যেখানে বিপজ্জনক ওই কাফ সিরাপের স্টক মিলেছে। তদন্ত এখন সেই দোকান ও বিতরণকারী সংস্থাগুলির দিকে বিস্তৃত করা হয়েছে।
একজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “স্রেসান ফার্মাসিউটিক্যালের মালিক রঙ্গনাথনকে তামিলনাড়ুতে নিয়ে গিয়ে রাজ্য এসআইটি (SIT) আরও জিজ্ঞাসাবাদ করছে।”
ড. সোনি, স্রেসান ফার্মাসিউটিক্যালের পরিচালক ও জবলপুরের এক ওষুধ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ৪ অক্টোবর এফআইআর দায়ের করা হয়। অভিযোগে বলা হয়েছে, ওই কোল্ডরিফ কফ সিরাপ–এ ডাইইথিলিন গ্লাইকোল (Diethylene Glycol) নামের বিষাক্ত রাসায়নিক মেশানো ছিল, যা শিশু মৃত্যুর কারণ হয়েছে।
এই ওষুধ খাওয়ার পর চার বছরের কম বয়সী অনেক শিশু প্রস্রাবে সমস্যা, রক্তে ক্রিয়াটিনিন ও ইউরিয়া বেড়ে যাওয়া, কিডনি বিকল হওয়া–র মতো উপসর্গে আক্রান্ত হয়। বেশ কয়েকজনকে নাগপুরে স্থানান্তর করা হলেও, তারা সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে মারা যায়।