charu seth mela: কাঠের আসবাবপত্র কেনা থেকে শুরু করে দারুণ স্বাদের হরেক মিষ্টি, গ্রামীণ এই মেলার জুড়ি মেলা ভার। তিন টাকার লাল মিষ্টি থেকে ১০০ টাকার বাহারি গোল্লাও বিকোচ্ছে দেদার। রসকদম্ব, কানসাট, পান্তুয়া, জিলিপি, মিহিদানা, সন্দেশ তো আছেই। প্রায় ১০০ রকমের মিষ্টির পসরা সাজিয়ে মেলায় এসেছেন বিক্রেতারা।
জেলার বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি বিহার, ঝাড়খণ্ড এমনকী উত্তরপ্রদেশ থেকেও মিষ্টি এবং কাঠের আসবাবের ব্যবসায়ীরা আসেন এই মেলায়। চেয়ার, টেবিল, চৌকি, খাট, ফুলদানি থেকে শুরু করে নানা সামগ্রী বিক্রি হয় মেলাতে। অন্যান্য প্রসাধনী সামগ্রীর দোকান থাকলেও এই মেলা যেন মিষ্টি আর কাঠের সামগ্রীর জন্যই বিখ্যাত। মেলায় ঢুকেই প্রথমে মিষ্টির দোকানে ছুটছেন ক্রেতাদের একটি বড় অংশ। অনেকে যাচ্ছেন কাঠের সামগ্রী দোকানে।
পুরাতন মালদা পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মোগলটুলি এলাকায় চারু শেঠের মেলা নামেই এটি প্রসিদ্ধ। দীর্ঘদিন আগে সংশ্লিষ্ট এলাকার জমিদার চারুবাবুর হাত ধরেই শুরু হয়েছিল এই মেলা। বর্তমানে সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দা এবং কাউন্সিলরের উদ্যোগেই পরিচালিত হয়ে আসছে চারুবাবুর ঐতিহ্যবাহী এই মেলা। লক্ষ্মীপুজোর সাত দিন পর কার্তিক মাস শুরু হতেই শুরু হয় এই মেলা। চলে ১০ দিন পর্যন্ত। যারা মিষ্টিপ্রেমী মানুষ তাঁদের জন্য উল্লেখযোগ্য চারু শেঠের এই মেলা।
আরও পড়ুন- Kali Puja 2024: মায়ের চক্ষুদানের সাক্ষী থাকলেই মানত হয় পূর্ণ! দেবীর স্বপ্নাদেশে শুরু এই কালীপুজো
মেলা কমিটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রতি বছরই এই মেলায় দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষ আসেন। রেকর্ড ভিড় হয়। আগামী বৃহস্পতিবার অর্থাৎ কালীপুজোর (Kali Puja 2024) থেকে এই মেলাটি শুরু হতে চলেছে। এই মেলায় মনোহারী থেকে শুরু করে লোহার দোকান, খাবারের দোকান এবং বাচ্চাদের বিনোদনের জন্য বিভিন্ন ধরনের নাগরদোলা রয়েছে। পাশাপাশি এই মেলা বর্তমানে কাঠ ও মিষ্টির মেলা নামেও প্রসিদ্ধ হয়েছে। শুধু জেলা নয় ভিন রাজ্য থেকেও কাঠ ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন কাঠের আসবাবপত্র নিয়ে এসে পসরা সাজায় এবং বিক্রিও ভালো হয়।
মেলা পরিচালন কমিটির এক সদস্য জানিয়েছেন করোনার জন্য গত দু'বছর ভালোভাবে মেলা হয়নি। তবে গত বছর থেকে চালু সেটের মেলাটি নতুন ভাবে চালু করা হয়েছে। ব্যাপকহারে ভিড় এবং বিক্রি হয়ে থাকে এই মেলায়। আগেই মেলাটি মহানন্দা নদীর তীরে হতো। বর্তমানে এটির স্থান পরিবর্তন হয়ে পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের একটি ফাঁকা মাঠে করা হচ্ছে।
মুর্শিদাবাদ থেকে আসা এক মিষ্টি ব্যবসায়ী তিলক হালদার বলেন, "আমার দোকানে অন্তত ১৫ রকমের মিষ্টি আছে। এই মেলায় লাল মিষ্টির কদর বেশি। আগে এক টাকা পিস হিসেবে বিক্রি করতাম। এখন ৩ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত পিস রয়েছে। ২০ টাকা, ২৫ টাকা , ৫০ টাকার বিভিন্ন মিষ্টিও রয়েছে। মেলাতে ঘুরতে আসা অধিকাংশ মানুষই মিষ্টি খেতে ভালোবাসেন। তাই ধীরে ধীরে এই মেলায় মিষ্টির প্রচলন ব্যাপক হারে বেড়ে গিয়েছে।"
পুরাতন মালদা পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা মেলা পরিচালন কমিটির কর্মকর্তা বৈশিষ্ট্য ত্রিবেদী বলেন, "দীর্ঘদিন ধরেই কার্তিক মাসের শুরুতেই চারু শেঠের মেলাটি পরিচালিত হয়ে আসছে। পুলিশ ও প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই এই মেলাটি করা হয়। বৃহস্পতিবার থেকে এই মেলা চালু হচ্ছে। কাঠের উপকরণ ও রকমারি মিষ্টির জন্যই মালদার চারু শেঠের মেলা আজও বিখ্যাত রয়েছে রাজ্যজুড়ে।"