Malda News: দিল্লিতে মালদা চাচোলের পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবারের ওপর অত্যাচার পুলিশের। এমনকি কোলের শিশুকেও আক্রান্ত হতে হয়েছে বিজেপি শাসিত রাজ্যের পুলিশের হাতে বলে অভিযোগ।
রবিবারের এই ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের টুইট বার্তা প্রকাশ্যে আসতেই রীতিমতো হৈচৈ পড়ে গিয়েছে। সোমবার সকাল থেকেই চাচোল থানার ফিরোজাবাদ এলাকার ওই পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব এবং সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ কর্তারা।দিল্লি পুলিশের এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে চাচোল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন নির্যাতিত ওই পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবার।
এদিন আক্রান্ত পরিযায়ী শ্রমিক মুক্তার খানের এক বোন মুক্তারী খাতুন জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই তার দাদা, বৌদি, সাজেনূর পারভিন, পাঁচ বছরের ভাইপো এবং বৃদ্ধ বাবা-মা, দিল্লির গীতা কলোনিতে রয়েছেন। সেখানে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন তাঁরা। দাদা মুক্তার নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কর্মরত রয়েছে। গত শনিবার বাংলাদেশী অভিযোগে দাদা বৌদিকে তুলে নিয়ে যায় দিল্লী পুলিশ। সেই সময় বৌদির কোলে ছোট ভাইপো ছিল। ওদেরকে মারধর করা হয়েছে। তারপর থেকে আতঙ্কিত হয়ে রয়েছি আমরা।তিনি আরও বলেন, এখনও পর্যন্ত বৌদিকে ছাড়লেও দাদাকে আটকে রেখেছে দিল্লি পুলিশ। আমরা চাইছি দ্রুত যাতে পরিবারের সকলেই ফিরে আসে।
এদিকে এই ঘটনায় নিন্দা প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী টুইট বার্তার পর চাচোলে তৃণমূল বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ বলেন, বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের ওপর যেভাবে অত্যাচার চলছে, তা কোনভাবে বরদাস্ত করা যায় না। দলনেত্রী ইতিমধ্যে একুশের সভা মঞ্চ থেকে এব্যাপারে প্রতিবাদ ও আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক দিয়েছেন। সেই মতো আমরা কর্মসূচি শুরু করেছি ।অন্যদিকে প্রায় আট দিন পর হরিয়ানার গুরুগাঁওয়ে পুলিশের হাত থেকে থেকে ছাড়া পেলেন চাচোল মহকুমার হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকার সাতজন পরিযায়ী শ্রমিক। আর এই খবর সোমবার সকালে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার রাঙ্গাইপুর ও ঠাকুরটোলা গ্রামে ছড়িয়ে পড়তেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন পরিবারের লোকেরা।
এদিন সকালেই হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়ন দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী তাজমুল হোসেন নিজে গিয়েই হরিয়ানায় পুলিশের হাতে আটক পরিযায়ী শ্রমিকদের ছাড়া পাওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন। উল্লেখ্য গত সপ্তাহের সোমবার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার রাঙ্গাইপুর ও ঠাকুরটোলা এলাকার সাতজন পরিযায়ী শ্রমিককে বিজেপি শাসিত হরিয়ানার গুরুগাওয়ে বাংলাদেশী সন্দেহে সেখানকার স্থানীয় পুলিশ আটক করে।সেই খবর পেতেই কান্নায় দুশ্চিন্তায় ভেঙে পড়ে পরিবারের লোকেরা। পরিবারের লোক অভিযোগ করে ডিটেনশন ক্যাম্পে তাদের আটকে রেখে অত্যাচার করা হচ্ছে। হরিয়ানার পুলিশ কমিশনারকে ফোন করেন হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক তাজমুল হোসেন। শ্রমিকদের মুক্তির জন্য পদক্ষেপ নেয় জেলা প্রশাসন। তারপরেই রবিবার তারা মুক্তি পায়।
ওই সব পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবারের বক্তব্য, যেভাবে বাংলাভাষীদের ওপর অত্যাচার চালানো হচ্ছে ভিন রাজ্যে , তাতে আর বাড়ির ছেলেদের কোনোমতেই বাইরে যেতে দেওয়া যাবে না। কিন্তু এলাকায় থেকে যাতে শ্রমিকেরা কাজ পায়, সেই ব্যবস্থা করারও দাবি জানিয়েছেন ওইসব পরিবারের লোকেরা। রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়ন দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী তাজমুল হোসেন বলেন, এই রাজ্যেই কাজ রয়েছে। রাজ্য সরকার ক্ষুদ্র ব্যবসার জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা লোন দিচ্ছে।এই শ্রমিকরা চাইলে এখানেই থাকতে পারবে। তিনি ব্যবস্থা করে দেবেন।