/indian-express-bangla/media/media_files/2025/09/18/puja-2025-09-18-16-37-39.jpg)
Durga Puja 2025: প্রখ্যাত লেখকের হাতে এই পুজোর সূচনা।
Durga Puja: মা দুর্গার পুজোর আগে এ গাঁয়ে হয় 'মানুষ পুজো'। এমনই অভিনবত্ব পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের অজয় তীরের গোপালপুর উল্লাসপুর গ্রামে। গত বছর পতিতাপল্লীর কয়েকজনকে এনে পুজো করে বিতর্কে জড়িয়েছিল এই পুজো কমিটি। তার আগের বছর সাত বৃহন্নলাকে এনে পুজো করা হয়েছিল।
কখনও কৃষক, কখনও শ্রমজীবী মানুষদের এনে পুজো করা হয় পুজোর মণ্ডপে। এমনই অভিনবত্বের দুর্গাপুজো হয় পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামে।
জঙ্গলমহলের আদিবাসী অধ্যূষিত গোপালপুর উল্লাসপুর সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির আয়োজনে এবারও অভিনবত্বের ছোঁয়া। পূর্ব বর্ধমান জেলার একমাত্র জঙ্গলমহলের গ্রামীণ এলাকার এই পুজোর প্রতিষ্ঠাতা লেখক রাধামাধব মণ্ডল। তাঁর ভাবনায় প্রতি বছরই পুজোর আয়োজনে থাকে অভিনবত্ব। গণদেবতার পুজো করে হয় মাটির মায়ের পুজো।
আরও পড়ুন- Durga Puja 2025:গাংচিল বেশে এসে পুজো নিতেন 'দেবী'! ২৬০ বছরের এই দুর্গাপুজোর পরতে পরতে ইতিহাস!
এই গ্রামে এবারের পুজোর থিম 'বাংলার বইগ্রাম'। বইয়ের প্রচ্ছদ দিয়ে সাজানো শুরু হয়েছে এবারের পুজোর মণ্ডপ। প্রতিমাতেও থাকছে অভিনবত্বের ছোঁয়া। অজয় তীরের গণ্ড এই গ্রাম হারিয়েছে ১১৭৬-এর মন্বন্তরে। বহু পুজো বন্ধ হয়ে গেছে। অজয়ের স্রোতধারা চুরি করে নিয়ে গেছে গ্রাম! সেই গ্রামেই গ্রামের মহিলা, ক্ষেতমজুরদের নিয়ে পুজো শুরু করেন লেখক রাধামাধব মণ্ডল।
প্রখ্যাত সাহিত্যিক রাধামাধব মণ্ডলের বাড়ি এই গ্রামে। তিনিও কৃষক, ক্ষেতমজুর পরিবারের ছেলে। ছোট থেকেই দেখেছেন নিজের গ্রামে কোনো পুজো নেই। গ্রামের সকলে পুজোর সময় অন্য পাশের গ্রামের জমিদারদের পুজো দেখতে যেতে। এক কোণে তারা গিয়ে বসে থাকছে। ইচ্ছে হলে প্রসাদ দিচ্ছে না হলে দূরে দাঁড়িয়ে দেখে, ফিরে আসছেন বিষন্ন মুখে। ছেলেবেলার নস্টালজিক স্মৃতি আবেগতারিত করে লেখককে।
বুকের মধ্যে সেই চাপা যন্ত্রণা নিয়েই লেখক রাধামাধব মণ্ডল শুরু করেন নিজের গ্রামে পুজো। এবারও মহাসমারোহে হচ্ছে পুজো। সরকারি সাহায্য মেলে। পুজো নিয়ে লেখক রাধামাধব মণ্ডলকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, 'এক সময় বন্যা, কলেরায় আমাদের দুটি ছোট ছোট গ্রামের বহুমানুষ বীরভূমের নদী পাড়ের গ্রামে গিয়ে বসবাস শুরু করে। অনেকে মারাও যায় অভাবে, বিনাচিকিৎসায়। ফলে গ্রামের বহু পুজো বন্ধ হয়ে যায়। আমরা তা শুরু করি। আর মানুষের দানে যেহেতু হয় তাই এই পুজোতে মানুষেরই পুজো হয় প্রথম।'
রাজ্য স্তরের বহু অভিনেতা, লেখক, আমলা গ্রামের এই পুজোর উদ্বোধনে ছুটে আসেন। পুজো উপলক্ষে এবারও সাহিত্যের 'সহজ' নামের একটি পত্রিকা প্রকাশিত হবে। রাজ্যের প্রথম সারির বহু লেখক সেই পত্রিকায় কলম ধরেন। পুজোর উদ্বোধনে উপস্থিত থাকেন রাজ্য মহিলা কমিশনের সভানেত্রী লীনা গঙ্গোপাধ্যায়-সহ আরও বিশিষ্ট মানুষজনরা।
লেখক রাধামাধব মণ্ডলের কথায়, 'আমাদের পুজোর পরিচালন কমিটি মহিলাদের হাতে দেওয়া আছে। রাখী মণ্ডল, তুলিকা মণ্ডল, মিতালী কর্মকার, বন্দনা ঘোষ, টুম্পা মেটে, সন্ধ্যা মেটেরা এই পুজো চালান। এবারও পুজোর উদ্বোধন হবে চতুর্থীর দিন দুপুরে। সেদিন থেকেই বাংলার নানা লোকসংস্কৃতির অনুষ্ঠান শুরু হয়ে যাবে। নাটক করবে গ্রামের মেয়েরা। এছাড়াও পুজোতে একনজরে আউশগ্রামের ঐতিহ্য, বাংলা ও বাঙালির গর্বের পাণ্ডুরাজার ঢিবিকে তুলে ধরা হবে।'
/indian-express-bangla/media/agency_attachments/2024-07-23t122310686z-short.webp)
Follow Us