India-Pakistan Relations: পাক সেনাবাহিনীর হাতে আটক হুগলির রিষড়ার বাসিন্দা BSF জওয়ান পূর্ণকুমার সাউ। গত কয়েকদিন ধরে টানা BSF কর্তাদের সঙ্গে আলোচনাতেও স্বামীর মুক্তি নিয়ে দুশ্চিন্তা কাটছিল না স্ত্রী রজনীর। সোমবার পাঠানকোটে স্বামীর কর্মস্থলের উদ্দেশে রওনা অপহৃত জওয়ান পূর্ণমকুমার সাউয়ের স্ত্রীর। বোন ও খুড়তুতো ভাইকে সঙ্গে নিয়ে সোমবার পাঠানকোটের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন তাঁর স্ত্রী রজনী।
হুগলির রিষড়ার বাসিন্দা বিএসএফ জওয়ান পূর্ণমকুমার সাউ। পাঞ্জাবের ফিরোজপুর সীমান্তে ডিউটি করছিলেন তিনি। কর্তব্যরত অবস্থায় ক্লান্তি অনুভব করায় একটি গাছের নিচে গিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন তিনি। ভুলবশতই পাক ভূখণ্ডে থাকা ওই এলাকায় ঢুকে পড়েছিলেন তিনি। সেখান থেকেই পাক রেঞ্জার্সরা ওই ভারতীয় জওয়ানকে আটক করেছে।
পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর হাতে স্বামীর আটক হওয়ার খবর রিষড়ার বাড়িতে এসে পৌঁছোতেই চূড়ান্ত উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় ভুগতে থাকে ওই জওয়ানের পরিবার। ঘোরতর উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন আটক জওয়ানের স্ত্রী রজনী সাউ। ছেলেকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগতে থাকেন বৃদ্ধ বাবা-মা। গতকালই কল্যাণী থেকে বিএসএফের কয়েকজন শীর্ষকর্তা গিয়ে দেখা করে এসেছেন পূর্ণমের পরিবারের সঙ্গে। পূর্ণমকে ছাড়াতে সেনাস্তরে সব রকমের আলোচনা চলছে বলে তাঁরা জানিয়েছেন তাঁর পরিবারকে। তবে এতেও দুশ্চিন্তা কাটছিল না না পরিবারের।
আরও পড়ুন- Kolkata News Live: 'বাংলার পুলিশ পাকিস্তানের দালাল', মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে সোচ্চার অর্জুন সিং
ওই BSF জওয়ানের অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রী স্বামীকে ফিরে পাওয়া নিয়ে ঘোর দুশ্চিন্তায় ভুগতে থাকেন। পাঠানকোটে তাঁর কর্মস্থলে বিএসএফ কর্তাদের সঙ্গে তাঁর ফোনে কথা হয়েছে। প্রথমটায় তাঁরাও রজনীকে জানিয়েছিলেন তাঁরা সব রকম ভাবে সে দেশের সেনাবাহিনীর কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে পূর্ণকুমার সাউকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে রজনী চাইলে পাঠানকোটে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন বলেও তাঁরা জানিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন- Digha Jagannath Temple: বুধেই জগন্নাথ ধামের উদ্বোধন, আলোর মালায় দিঘা সাজাল চন্দননগর
তারপরেই পাঠানকোটের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার জন্য মনস্থির করে ফেলেছিলেন রজনী। সোমবার দুপুরে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে পাঠানকোটের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন- Kolkata Metro: কাজ দেখে সন্তুষ্ট CRS, কলকাতার এই পথে মেট্রোর দৌড় সময়ের অপেক্ষা!
এদিকে, শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই বিএসএফের সঙ্গে ওই জওয়ানকে ছাড়ানো নিয়ে কথা বলেছেন। পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি। এবার পাঠানকোটে স্বামীর কর্মস্থলে গিয়েই সরাসরি বিএসএফের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন রজনী। প্রয়োজনে দিল্লিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দফতরেও তিনি দরবার করবেন বলে জানিয়েছেন।
এই মুহূর্তে ভারত-পাক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। পহেলগাঁওয়ে বর্বরোচিত জঙ্গি হামলার নেপথ্যে পাকিস্তানের হাত থাকার 'প্রমাণ' এসেছে ভারতের গোয়েন্দাদের হাতে। পাকিস্তানকে 'জবাব' দেওয়াও শুরু করেছে ভারত। সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে পাকিস্তানের নাগরিকদেরও সে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। পড়শি দেশের বিরুদ্ধে আরও একগুচ্ছ কড়া পদক্ষেপ করেছে ভারত। মোট কথা, নৃশংস জঙ্গি হামলার পর থেকে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক দারুণ তিক্ততার পর্যায়ে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন- Birbhum News: থানার মধ্যেই হাড়হিম করা ঘটনা! তরুণীর উপর অ্যাসিড হামলা
এই আবহে সেদেশের সেনার হাতে আটক বিএসএফ জওয়ানের উদ্ধার নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। তবে বিএসএফ কর্তারা হাল ছাড়তে নারাজ। দফায় দফায় হয়েছে ফ্ল্যাগ মিটিং। বিএসএফের তরফে সে দেশের সেনাবাহিনীর কর্তাদের সঙ্গে বারবার ওই জওয়ানের মুক্তি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তবে এতেও আশ্বস্ত হতে পারছেন না আটক জওয়ানের পরিবার। এবার তাই পাঠানকোটে গিয়েই সেখানকার বিএসএফ কর্তাদের সঙ্গে স্বামীকে ফেরানোর ব্যাপারে আলোচনা করবেন রজনী।