RG Kar Movement-SSC: আরজি করে তরুণী চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের মামলা হাইকোর্টের কাছ থেকে স্বত:প্রণোদিত ভাবে হাতে নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি চলছে। যথারীতি শুনানির আগের দিন রাত্রি জাগরণ কর্মসূচি চলেছে বাংলায়। এদিকে এসএসসি মামলাও হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে। এসএসসি আন্দোলনকারীদের অভিজ্ঞতা, "আন্দোলন আদালতে গিয়ে থমকে যায়। তারিখের পর তারিখ পড়তে থাকে। পাশাপাশি এই আন্দোলনকারীদের বক্তব্য়, "চিকিৎসক পড়ুয়াদের পাশে সিনিয়র চিকিৎসক ও সমাজের একটা অংশ প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিদেনপক্ষে, আমাদের পাশে অধ্যাপক, শিক্ষক সমাজ যদি দাঁড়াত! আমরাও তো শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতি ও যোগ্যদের নিয়োগ নিয়ে ন্যায্য আন্দোলন করছি।"
দীর্ঘ সময় ধরে এসএসসি চাকরি প্রার্থীরা আন্দোলন করছে। তাঁদের সঙ্গে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও পৃথক ভাবে বৈঠক করেছে আন্দোলনকারীরা। এখন মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে। আন্দোলনকারী শহিদুল্লাহ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, "আমরা তো ২ বছর ধরেই সমাজের লোকেদের বলে এসেছি আমাদের পাশে দাঁড়ান। আমরা তো অনবরত দুর্নীতির কথাই বলে এসেছি। আমাদের অভিজ্ঞতার জায়গা থেকে বলছি, যখনই কোনও সামাজিক আন্দোলন বিচারের কাঠগোড়ায় যাচ্ছে। তখন সেই আন্দোলন স্তিমিত হয়ে যাচ্ছে। ভারতের বিচার ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন করাটা হয়তো অসমীচিন। কিন্তু বাস্তবটা তো আমাদের মানতেই হবে। বিচার ব্য়বস্থার যাঁতাকলে যখনই কোনও একটা ইস্যু চলে যাচ্ছে সেই আন্দোলন স্থিমিত হয়ে যাচ্ছে। আদালতের দোহাই দিয়ে রেহাই পেয়ে যাচ্ছে। ভারতীয় বিচার ব্যবস্থা দীর্ঘ প্রক্রিয়া। দ্রুত সমাধানের কোনও পথ নেই। আরজি কর কাণ্ডও বিচারের যাঁতাকলে পিষ্ট হবে।"
২০১৬ সালে এসএসসি পরীক্ষা হয়েছিল। তার আর হয়নি। এদিকে এসএসসি চাকরি প্রার্থীদের আন্দোলন ১২৭৪ দিনে পড়ছে। নিয়মিত গান্ধীমূর্তির পাদদেশে তাঁরা ধরনা অবস্থানে বসতেন। এখন তাঁরা মঙ্গল, বৃহস্পতি ও শনিবার অবস্থানে বসছেন। চাকরি প্রার্থীদের বয়স বেড়ে যাওয়ায় অন্য কাজ খুঁজছেন। প্রথম থেকে আন্দোলনে যুক্ত আছেন চাকরি প্রার্থী স্বরূপ বিশ্বাস। বাবা রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। কল্যানী বিশ্ববিদ্য়ালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর। এই বিশ্ববিদ্য়ালেয়র অধীনেই তারপর বিএড। স্বরূপ বিশ্বাস ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, "আমাদের আন্দোলনে শিক্ষিত সমাজের সমর্থন পাইনি। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমাজ আমাদের পাশে দাঁড়ায়নি। দুএকটা সংগঠন এসেছিল। পরে আর তাঁদের দেখা মেলেনি। শিক্ষক সমাজ পাশে দাঁড়ালে আমাদের সুবিধা হত। নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছিল বলেই তো আমরা ওয়েটিং লিস্টে ছিলাম।"
আরও পড়ুন- RG Kar Case: পলিগ্রাফের পর এবার সঞ্জয়ের নার্কো পরীক্ষা, অনুমতি পেল CBI
আদালতের মামলা নিয়ে হতাশ স্বরূপ বিশ্বাস, শহিদুল্লাহরা। তাঁর কথায়, "প্রথমে ভেবেছিলাম সুপ্রিম কোর্টে তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে। বিচার ব্যবস্থার ওপর ভরসা রেখেছি। পরবর্তীতে যখন দেখতে পেলাম আদালতে তারিখের পর তারিখ পড়ছে। এটা সহজে মিটবে না। হাইকোর্ট রায় দিয়ে প্য়ানেল বাতিল করল। টাকা ফেরত দিতেও বলেছিল। সুপ্রিম কোর্টে স্টে হয়ে আছে। তাঁরা যথারীতি স্কুলে যাচ্ছে। দীর্ঘ ৮ বছর জীবন থেকে চলে গেল।" শহিদুল্লাহ বলেন, "আমাদের মামলাগুলোতে দিনের পর দিন তারিখ পড়ছে। সিনেমাতে দেখা যায় না, তারিখ পে তারিখ। সরকার তো জনসাধারণের টাকায় আদালতে লড়াই করছে। আমাদের নুন আনতে পান্তা ফুরানোর অবস্থা, আমরা বহু কষ্টে কোর্টে লড়াই করছি। বিচার দেরি করে অবিচারের মধ্যে ফেলে দিচ্ছে।" আন্দোলনকারীদের আশঙ্কা, "দুর্নীতি করে যাঁরা বহাল তবিয়তে চাকরিটা করছে। আইনের ফাঁকফোকর গলে তাঁদের চাকরিটা টিকে যাবে না তো?"
আরও পড়ুন- Kolkata Metro: পুজোর আগে যাত্রী স্বার্থে অভাবনীয় উদ্যোগ, আয়েসে মেট্রো যাত্রায় দুরন্ত প্রয়াস