RG Kar Incident-TMC: আরজি কর ইস্যুতে রাজ্যব্যাপী তৃণমূল নেতাদের নাগারে হুমকি, হুংকার চলছে। প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব দলের শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ? নাকি এও দলের এক কৌশল? আবার যাঁরা আরজি কর কাণ্ডে দলের বিপক্ষে গিয়ে আন্দোলনকারীদের "ভাষায়" কথা বলছেন তাঁদের ক্ষেত্রেও কিন্তু উদাসীন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, আরজি করের ঘটনায় প্রকাশ্যে রাজনৈতিক লাইন কি গুলিয়ে দিতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস? একদিকে ড্যামেজ কন্ট্রোল, অন্যদিকে হুমকি, আবার শীর্ষ নেতৃত্বের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা! বিগত কয়েকদিন ধরে তৃণমূলের শীর্ষস্তর থেকে একেবারে গ্রামস্তরের নেতাদের মন্তব্যে এমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
আরজি করে তরুণী চিকিৎকের ধর্ষণ ও খুন সংক্রান্ত আন্দোলন নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্বের হুমকির ধারাবাহিকতা আটকাতে ব্যর্থ হলেন স্বয়ং তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ, বাঁকুড়ার সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী থেকে ছোট-বড় একাধিক তৃণমূল নেতার মুখে হুমকির স্বর শোনা গিয়েছে। তৃণমূল নেত্রী ছাড়া কেউ আর এই আন্দোলন নিয়ে কেউ কথা বলবেন না। এবার তো গণরোষ থেকে দেশদ্রোহী কিছু বাদ গেল না। অশোকনগরের স্থানীয় নেতা অতীশ সরকার ছাড়া কারও বিরুদ্ধে তেমন ব্যবস্থা নেয়নি তৃণমূল কংগ্রেস। বাকিদের বিষয়ে নীরবতা পালন করছে। তাহলে নেতৃত্ব কি এব্যাপারে বিশেষ কৌশল নিয়েছে?
মঙ্গলবারই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্ত্রিসভার বৈঠকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, আরজি কর নিয়ে তিনি ছাড়া আর কেউ কোনও মন্তব্য যেন না করে। এর আগে বাঁকুড়ার সাংসদ অরূপ চক্রবর্তীর গলায় শোনা গিয়েছে জনরোষের কথা। এবার জুনিয়র ডাক্তরার নিরাপত্তার কি হাল হবে তা নিয়ে হুঙ্কার ছেড়েছেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবির। আবার আরেক নেতা বাদুরিয়া পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য চন্দন মুখপাধ্যায় দেশদ্রোহীর তকমা সেঁটে দিলেন আন্দোলনকারীদের গায়ে। রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে তাহলে কী শীর্ষ নেতৃত্বের কথা কেউ শুনছে না? নাকি এটাই দলের বিশেষ স্ট্র্যাটেজি।
আরজি কর কাণ্ডে একদিকে তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়ের মাঝেমধ্যেই দলের বিপক্ষে গিয়ে মন্তব্য করা। অথবা সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন কোনও পোস্ট কারছেন যার অন্তর্নিহিত অর্থ তৃণমূল কংগ্রেসের অস্বস্তি বাড়িয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে দল ব্যবস্থা নেওয়া দূরে থাক তৃণমূলের মুখপাত্র জাগো বাংলায় এডিটর হিসাবে রাজ্যসভার এই সাংসদের নাম জ্বলজ্বল করছে। রাজ্যের আর এক বর্ষীয়ান মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় সরাসরি বলেছিলেন, "আরজি কর কাণ্ডে হাসপাতালের ভিতরের লোক জড়িত আছে। বাইরের লোক কোথা থেকে আসবে?" দলে এমন বলার পাশাপাশি ক্রমাগত আরজি কর আন্দোলন নিয়ে হুঁশিয়ারিও চলছে।
আরও পড়ুন- মোবাইল বন্দী গৃহবধূর স্নানের অশ্লীল ভিডিও! হাতে নাতে পাকড়াও যুবক, ইংরেজবাজারে ধুন্ধুমার
আরও পড়ুন- 'পাবলিক মরছে ডাক্তাররা কী করে সুরক্ষিত থাকবে', আন্দোলনরত চিকিৎসকদের বেনজির হুঁশিয়ারি!
আরজি করে চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুন নিয়ে আন্দোলনে তৃণমূল নেতৃত্বের হুমকির ধারাবাহিকতা আটকাতে ব্যর্থ হলেন স্বয়ং তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার তো খোদ দলনেত্রী বলার পর ভয়ঙ্কর কথা শোনা গেল ওই দুই তৃণমূল নেতার বক্তব্যে। বুধবার রাত পর্যন্ত শোনা যায়নি দল তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনও ব্যবস্থা নিয়েছে। যদিও তৃণমূলের একাংশের স্পষ্ট বক্তব্য, এমন মন্তব্য যাঁরা করছে তাঁদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। রাজনৈতিক মহলের মতে, আরজি কর নিয়ে দলের স্ট্র্যাটেজি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।