Advertisment

Purbasthali Incident: পুলিশকর্তার 'তোলাবাজ' গাড়িচালককে হাতেনাতে ধরলেন বিধায়ক, নাটকীয় পাকড়াও-পর্ব জানলে চমকে যাবেন!

Purbasthali Incident: দীর্ঘদিন ধরেই থানার আইসি-র এই গাড়িচালকের বিরুদ্ধে তোলাবাজির মারাত্মক সব অভিযোগ উঠেছিল। এককথায় তার দাদাগিরিতে অতিষ্ট হয়ে পড়েছিলেন এলাকাবাসী। শেষমেশ বিধায়কের কানে একথা যেতেই তিনি 'অ্যাকশন' নেন।

author-image
Pradip Kumar Chattopadhyay
আপডেট করা হয়েছে
New Update
TMC MLA caught Purbasthali PS IC driver on charge of extortion: তোলাবাজির অভিযোগে পূর্বস্থলীর আইসির গাড়িচালককে ধরলেন তৃণমূল বিধায়ক

পূর্বস্থলী থানা।

TMC MLA caught Purbasthali PS IC driver on charge of extortion: এক পুলিশকর্তার 'তোলাবাজ' গাড়িচালককে হাতে-নাতে ধরে ফেললেন রাজ্যের শাসকদলেরই এক বিধায়ক। পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর তৃণমূল বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়। ওই তোলাবাজ গাড়িচালককে ধরতে তিনি তৎপর হয়েছিলেন। পূর্বস্থলী থানার আইসি-র সেই গাড়িচালক গোপাল দাসকে 'পাকড়াও' করে পুলিশের হাতেই তুলে দিয়েছেন বিধায়ক। সেই সঙ্গে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত পদক্ষেপ করতেও পুলিশের আধিকারিকদের আবেদন জানিয়েছেন তিনি।

Advertisment

বিধায়ক ও এলাকার মানুষজনের কথায় অনুযায়ী, পূর্বস্থলী থানার আইসির গাড়িচালক গোপাল দাসের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাটে। পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের কোনও পদেই গোপাল চাকরি করেন না। তবু প্রায় এক দশক ধরে গোপাল’ই হয়ে আছেন পূর্বস্থলী থানার আইসির গাড়িচালক। থানার আইসি বদলালেও আইসির গাড়িচালকের পদের বদল হয় না। গাড়ি চালিয়ে সামান্য পারিশ্রমিক পেলেও গোপালের চালচলন ছিল চোখে পড়ার মতো। তার কেতাদুরস্ত আদবকায়দা নিয়ে এলাকায় চর্চা কম ছিল না। 

এলাকাবাসীর অভিযোগ, পুলিশ লেখা নম্বরপ্লেটহীন ঝাঁ চকচকে একটা বোলেরো গাড়ি গোপাল পূর্বস্থলী থানায় খাটায়। সেই গাড়িতেই আইসি চাপেন। শুধু এটুকুই নয়, গোপালের বিরুদ্ধে আরও বিস্তর অভিযোগ রয়েছে এলাকাবাসীর।  নিজেকে থানার ‘ডাকমাস্টার’ বলে পরিচয় দিয়ে গোপাল বালিবোঝাই ট্রাক থেকে শুরু করে বিভিন্ন পণ্যবাহী গাড়ি থেকে মোটা টাকা তোলা আদায় করাতেও নাকি সিদ্ধহস্ত। গোপাল কিংবা তার বাহিনীকে বালি ট্রাক পিছু ১ থেকে ২ হাজার  টাকা না দিলে পূর্বস্থলীতে কোনও বালির ট্রাকের চাকা গড়াতে পারে না। 

আরও পড়ুন- Lottery Fraud Case: লটারি প্রতারণা মামলায় দুরন্ত অ্যাকশনে ED, দক্ষিণ কলকাতার আবাসনে কাঁড়ি-কাঁড়ি টাকা!

অভিযোগের এখানেই মেষ নয়। পূর্বস্থলীর পারুলিয়া এলাকায় নিজের বাড়ি তৈরির জন্য জমি কেনা থেকে শুরু দোকান থেকে ইমারতী দ্রব্য নেওয়া... সবেতেই গোপাল তাঁর 'তোলাবাজি বিদ্যে'কে পুরোদস্তুর কাজে লাগিয়েছে। 
এনিয়ে কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে গোপাল দমিয়ে রাখে, এমনই অভিযোগ এলাকাবাসীর।

আরও পড়ুন- Tab Scam: দক্ষিণ ২৪ পরগনার স্কুলে-স্কুলে ট্যাব দুর্নীতি! বিহারের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে লক্ষ-লক্ষ টাকা

পূর্বস্থলী থানার আইসির গাড়িচালক গোপাল দাসের এই সব দুস্কর্ম নিয়ে পূর্বস্থলীর বাসিন্দারা  ক্ষোভে ফুঁষছিলেন। তাতে ঘৃতাহূতি পড়ে পূর্বস্থলীর কালেখাঁতলা এলাকার একটি হোটেলে 'মধুচক্র'-এর আসর বসা শুরু হলে। গোপাল দাসের তোলাবাজির ডেরা হিসেবে পরিচিতি পাওয়া ওই হোটেলে নিয়মিত মধুচক্র বসার বিষয়টি নিয়ে এলাকার মানুষজন বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় এবং পূর্বস্থলী থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন।

আরও পড়ুন- Kolkata News: সাতসকালে হই হই কাণ্ড কলকাতায়! চাঞ্চল্যকর মৃত্যুতে ধোঁয়াশায় পুলিশও

এমন অভিযোগ পেয়ে বিধায়ক বেজায় চটে যান । এলাকার মানুষজনকে সঙ্গে নিয়ে বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যার বৃহস্পতিবার বেলায় ওই হোটেলে পৌঁছে যান। সেখান থেকে গোপাল দাসকে 'পাকড়াও' করে তিনিই পূর্বস্থলী থানার পুলিশের হাতে তুলে দেন। এরই পাশাপাশি গোপালের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন বিধায়ক। 

আরও পড়ুন- Guru Nannak-Sri Chaitanya: গাছতলায় বিশ্রাম নিচ্ছিলেন গুরু নানক, খানিক দূরেই ছিলেন শ্রীচৈতণ্য, বাংলার এপ্রান্তে সোনার ইতিহাস!

পূর্বস্থলীর বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় বলেন, "পূর্বস্থলী থানার আইসির গাড়িচালক গোপাল দাসের দুস্কর্ম সীমা ছাড়িয়ে ছিল। ওই ড্রাইভারের তোলাবাজি সহ নানা কুকীর্তির জন্য এলাকার মানুষজন অতিষ্ট হয়ে উঠেছিলেন। বিধায়ক হিসাবে আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি। দুস্কর্ম এলাকায় চলতে দেওয়া যায় না। তাই গোপাল দাসকে পাকড়াও করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।" অন্যদিকে, পূর্বস্থলী থানার আইসি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় জানান, গোপালকে থানায়  আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

এদিকে এই ঘটনা নিয়ে অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। জেলা বিজেপি সহ-সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, "বাংলার পুলিশ নিজেই যে তোলাবাজ পোষে সেটা তৃণমূল বিধায়ক নিজে প্রমাণ করে দিয়েছেন। তৃণমূলের রাজত্বে বাংলায় আইনের শাসন বলে কিছু নেই। তাই আইনের রক্ষকরাই ভক্ষক বনে গিয়েছে। এই কারণেই বাংলার পুলিশের ভাবমূর্তি তলানিতে ঠেকেছে।"

TMC MLA Purba Bardhaman Purbasthali
Advertisment