Bangla Awas Yojana: আবাস যোজনায় পাকা বাড়ি পাওয়ার তালিকায় নাম উঠলেও সেই নাম কাটিয়ে ফেলতে চাইছেন তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা! এই কথা তাঁরা বিডিও-কে জানিয়েও দিয়েছেন। এমনই ঘটনা ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলায়। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই জোরদার চর্চা ছড়িয়ে পড়েছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা বিষয়টিকে 'গিমিক' বলে কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছেন।
আবাস যোজনায় বাড়ি প্রাপকদের নামের তালিকা ধরে যাচাই প্রক্রিয়া শুরু হতেই রাজ্যের জেলায় জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে ক্ষোভ-বিক্ষোভ। এই আবহে তৃণমূল পরিচালিত পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম ২ ব্লকের গঙ্গাটিকুরি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান গোপাল হাজরার নাম আবাস যোজনার তালিকায় নথিভুক্ত থাকার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। পাকাবাড়ি থাকা সত্ত্বেও গোপাল হাজরার নাম বাংলা আবাস যোজনার তালিকায় থাকা নিয়ে সমালোচনার বন্যা বইতে শুরু করে। এই অবস্থায় বিতর্ক এড়াতে প্রধান গোপাল হাজরা ব্লকের বিডিও-কে লিখিতভাবে জানিয়ে দেন, তিনি সরকারি আবাস যোজনার পাকা বাড়ি নেবেন না।
এমন ঘটনা শুধুই যে গঙ্গাটিকুরি পঞ্চায়েতের প্রধানের সঙ্গে ঘটেছে এমন নয়, একই পথে হেঁটেছেন গলসি ২ ব্লকের মসজিদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও এক সদস্যও। একই পথের শরিক কাটোয়া ১ ব্লকের খাজুরাডিহি গ্রাম পঞ্চায়েতের আরও দুই সদস্যও। এঁরা সবাই নিজের নিজের ব্লকের বিডিও-কে জানিয়ে দিয়েছেন, সরকারি আবাস যোজনার তালিকায় নাম থাকলেও তাঁরা আবাস যোজনার পাকা বাড়ি নেবেন না। এলাকার গরিব মানুষের জন্যই তাঁদের এই 'ত্যাগ' বলে জানিয়েছেন
এই জনপ্রতিনিধিরা।
আরও পড়ুন- West Bengal By-Election Voting Live: দেগঙ্গায় ISF প্রার্থীকে ঘাড়ধাক্কা, পুলিশের সামনেই BJP এজেন্টকে খুনের হুমকি, কাঠগড়ায় তৃণমূল
খাজুরাডিহি গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য ভবতোষ দেবনাথ এবং অপর সদস্য রজনী সরকারের স্ত্রী শ্যামলী সরকারের নাম এবারের আবাস যোজনার তালিকায় জ্বলজ্বল করছিল। তা নিয়ে এলাকায় জোরদার সমালোচনা শুরু হয়ে যায়। তারপরেই আবাস তালিকা থেকে নাম বাদ দিতে নিজেরাই উদ্যোগী হন তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা। ব্লকের বিডিও-কে তাঁদের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েও দেন।
আরও পড়ুন-Mamata Banerjee in Darjeeling: পাহাড় সফরে তুষারচিতার ছানা দেখে আপ্লুত মুখ্যমন্ত্রী, কী নাম রাখলেন মমতা জানেন?
আরও পড়ুন- West Bengal By-Election 2024: গাড়ি ভাঙচুর, প্রার্থীকে আটকে বিক্ষোভ! লোকসভার 'ট্রেন্ড' বজায় বিধানসভা উপনির্বাচনেও
এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণ প্রসঙ্গে মসজিদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মুন্সি মাণ্ডি ও দুই পঞ্চায়েত সদস্যের সাফাই, "২০১৮ সালে যখন সার্ভে হয়েছিল তখন তাঁদের মাটির বাড়ি ছিল। যদিও ধার-দেনা করে পরে তাঁরা পাকা বাড়ি তৈরি করে নিয়েছেন। পুরনো সেই তালিকার সূত্র ধরেই হয়তো ২০২৪ সালের আবাসের তালিকায় ফের তাঁদের নাম ওঠে।"
আরও পড়ুন- Naihati Boroma: ভোট বলে বন্ধ বড়মা'র দর্শন, পিছনের দরজা দিয়ে মন্দিরে TMC প্রার্থী, বেরোতেই বিক্ষোভ
যদিও তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের এই আবাস তালিকা থেকে তাঁদের নাম বাদের বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছে বিজেপি। গলসির বিজেপি নেতা শান্তরূপ দে বলেন, “পঞ্চায়েত প্রধানের মা তো সরকারি আবাস প্রকল্পে বাড়ি পেয়ে গিয়েছেন। তাহলে একই বাড়ির সদস্য হয়ে প্রধান কী করে আবার সরকারি আবাসের বাড়ি পেতে পারেন? এখানে ত্যাগের কিছু নেই। এসব রাজনৈতিক গিমিক ছাড়া আর কিছু নয়।"
জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “দলের পক্ষ থেকে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া আছে যদি কোনও জনপ্রতিনিধির এই আবাসের তালিকায় নাম আসে তাহলে যেন তারা সেই নাম বাদ দেওয়ার জন্য আবেদন করেন। জনপ্রতিনিধি রজনী সরকার, মুন্সি মাণ্ডি প্রকৃতই গরিব মানুষ । তবুও বিবেকের তাড়না এবং দলীয় নির্দেশ এই দুইয়ের কারণেই কেতুগ্রাম ও গলসির পঞ্চায়েত প্রধান সহ তিন পঞ্চায়েত সদস্য সরকারি আবাসের তালিকা থেকে তাঁদের নাম কাটিয়ে দিয়েছেন।"