West Bengal Tab Scam: ট্যাব কেলেঙ্কারি সামনে আসতেই তোলপাড় পড়ে গিয়েছে রাজ্যজুড়ে। নবান্নের নির্দেশে এই কেলেঙ্কারির পর্দা ফাঁস করতে আসরে পুলিশ। জেলার-জেলায় শুরু হয় ধরপাকড়। পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশও ট্যাব কেলেঙ্কারিতে যুক্ত এক অভিযুক্তকে
জালে পুড়েছে। ধৃত হাসেম আলি মালদার বৈষ্ণবনগরের বাসিন্দা। ধৃতকে জেরায় চক্রে যুক্ত বাকিদের খোঁজ পাওয়ার চেষ্টায় পুলিশ।
পুলিশ সুপার সায়ক দাস জানিয়েছেন, ট্যাব কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমে জানা যায়, জুলাই মাসে হাসেম আলি একটি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে 'বাংলার শিক্ষা' পোর্টাল অ্যাকসেস করে। হাসেম নিজেও একটি অ্যাকাউন্ট মডিফাই করেছিল। এই কাজে হাসেম যে মোবাইলটি ব্যবহার করতো সেটিও পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে। এই ঘটনায় হাসেমের সঙ্গে আরও কয়েকজন জড়িত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা পুলিশের।
এদিকে মালদা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈষ্ণবনগরের কৃষ্ণপুর এলাকার বাসিন্দা ধৃত হাসেম আলি। তার বৈষ্ণবনগরের এমএলএ মোড়ে রাস্তার ধারে ছোট্ট একটি সাইবার ক্যাফে রয়েছে। উচ্চমাধ্যমিক পাশ ওই যুবক যে বিশেষ কায়দায় পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্ট হ্যাকেও পারদর্শী তা জেনে হতবাক পুলিশ। ধৃত হাসেম আলির কাছ থেকে একটি সার্টিফিকেটও বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন- Salt Lake Incident: মায়ের সঙ্গে স্কুটিতে বাড়ি ফিরছিল একরত্তি পড়ুয়া, এক মহূর্তেই সব শেষ...!
আরও পড়ুন- Digha: পর্যটকরা আহ্লাদে আটখানা হবেনই! বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে ভাসুন দিঘায়, বিনোদনের নয়া ইভেন্ট চালু কবে?
ট্যাবের টাকা না পাওয়াদের তালিকায় পূর্ব বর্ধমান জেলার ৮৫ জন স্কুল পড়ুয়া ছিল। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা জেলা স্কুল দফতরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। মুখ্যমন্ত্রীর কানে এই খবর পৌঁছোতেই ট্যাবের টাকা না পাওয়া পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে ফের টাকা পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয় প্রশাসনকে। পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক আয়েশা রানি জানান, জেলার ২৮টি স্কুলের ৮৫ জন পড়ুয়া ট্যাবের টাকা পায়নি। তাঁদের মধ্যে ৮৪ জন পড়ুয়ার টাকা ইতিমধ্যেই তাঁদের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে। যে সব পড়ুয়ার ট্যাব কেনার টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছিল সেই সব পড়ুয়ারাই মূলত ট্যাবের টাকা পেয়েছেন।
আরও পড়ুন- Manoj Mitra: প্রয়াত মনোজ মিত্র, শোকবার্তায় কী লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী?
এখানে উল্লেখ্য রাজ্য সরকারের ’তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদের দশ হাজার টাকা করে দেওয়া হয় । বর্ধমান সিএমএস স্কুলের পড়ুয়াদের এক অ্যাকাউন্টের টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে ঢোকে। বিষয়টি নজরে আসতেই শিক্ষা দপ্তরের পাশাপাশি সাঁইবার থানার দ্বারস্থ হয় প্রতারিত স্কুল কর্তৃপক্ষ। বর্ধমান শহরের সিএমএস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মিন্টু রায় জানান, এবছর তাঁদের স্কুলের ৪১২ জন পড়ুয়ার জন্য ট্যাবের আবেদন করা হয়। কিন্তু স্কুলের ৪১২ জনের মধ্যে ২৮ জন পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে ট্যাবের টাকা ঢোকে নি। তারপর স্কুলের পক্ষ থেকে গোটা বিষয়টি জানানো হয় ডিআই,অতিরিক্ত জেলাশাসক (শিক্ষা), ডিপিওকে।পাশাপাশি পুলিশের সাঁইবার থানাতে অভিযোগ দায়ের করা হয়।
পূর্ব মেদিনীপুরেও স্কুলপড়ুয়াদের ট্যাবের টাকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তদন্তে নেমে পুলিশ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করেছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপার সৌম্যদ্বীপ ভট্টাচার্য বলেন, “উত্তর দিনাজপুর থেকে তিনজন অভিযুক্তকে আমরা গ্রেফতার করেছি। গোটা ঘটনায় তদন্ত এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। কোনওভাবে ওই পোর্টাল হ্যাক করা হয়েছে নাকি এবং ভিন রাজ্যের দুষ্কৃতীরা যুক্ত কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অ্যাকউন্টগুলি ফ্রিজ করে টাকা ফেরতের চেষ্টা চলছে।”
এদিকে সরকারের পাঠানো ট্যাবের টাকা নিয়ে এই দুর্নীতি ইস্যুতে এবার মুখ খুলেছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি বলেছেন, "দোষীরা কিছুতেই ছাড় পাবে না। প্রশাসন দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।"
আরও পড়ুন- Biman Bose Hospitalised: গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে বিমান বসু, এখন কেমন আছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান?