Advertisment

শহরের এটিএম প্রতারণাকাণ্ডে এবার জালে মূল পাণ্ডা

নানা নামের ওই রোমানিয়ানকে এদিন গোরক্ষপুরের কাছে ইন্দো-নেপাল সীমান্ত থেকে শুল্ক দফতর আটক করেছে বলে লালবাজারের তরফে জানানো হয়েছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
atm, এটিএম

এটিএম প্রতারণার ঘটনায় আটক কিংপিন নানা। ছবি, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

কলকাতার এটিএম প্রতারণা কাণ্ডে অভিযুক্ত পলাতক রোমানিয়ানদের ধরতে আগেই লুকআউট নোটিস জারি করেছিল কলকাতা পুলিশ। সেই লুক আউট নোটিসের কেরামতিতেই এবার জালে ধরা পড়ল ঘটনার কিংপিন। নানা নামের ওই রোমানিয়ানকে এদিন গোরক্ষপুরের কাছে ইন্দো-নেপাল সীমান্ত থেকে শুল্ক দফতর আটক করেছে বলে লালবাজারের তরফে জানানো হয়েছে।

Advertisment

ইতিমধ্যেই শুল্ক দফতরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে কলকাতা পুলিশের টিম। এটিএম জালিয়াতির ঘটনায় দুই রোমানিয়ানকে জেরা করে নানার সম্পর্কে তথ্য পায় পুলিশ। সেইমতো নানা-সহ বাকি রোমানিয়ানদের ধরতে লুকআউট নোটিস জারি করে পুলিশ। আর তাতেই এলো সাফল্য।

অন্যদিকে, এ ঘটনার মাস্টারমাইন্ড আরেক রোমানিয়ান কর্নেলকে এদিন তিহার জেলে গিয়ে জেরা করে পুলিশ। এটিএম জালিয়াতির ঘটনায় কর্নেল নামের এই রোমানিয়ানকে আগেই গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। কলকাতায় এটিএম প্রতারণার ঘটনায় কর্নেল মাস্টারমাইন্ড বলে জানতে পারে পুলিশ। সেইমতো এদিন তাকে জেরা করে বেশ কিছু তথ্য মিলেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। কর্নেলকে জেরা করে এ ঘটনায় আরও ২-৪ জনের সন্ধান মিলেছে বলে লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে।

অন্যদিকে, এটিএম প্রতারণার ঘটনায় এবারও নাইজেরিয়ানরা জড়িত বলে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে এসেছে পুলিশের কাছে। সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, রোমানিয়ানরা জড়িত থাকলেও এ ঘটনায় নাইজেরিয়ানদেরও হাত রয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরে এটিএম প্রতারণার ঘটনার জাল বহুদূর বিস্তৃত। একটা বড় চক্র এর পিছনে রয়েছে বলে মনে করা হয়েছে।

আবার এই ঘটনায় নাম জড়িয়েছে মুম্বই গ্যাংয়েরও। মঙ্গলবার রাতে এলগিন রোডে কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাঙ্কের এটিএমের কাছ থেকে রোহিত নায়ার (৩৫) নামে মুম্বইয়ের এক বাসিন্দাকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। রোহিতকে জেরা করে আরও দু'জনের সন্ধান পায় পুলিশ। সৈয়দ সায়েদ (৩৫) ও সুধীর রঞ্জন (৩১) নামে মুম্বইয়ের আরও দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এলগিন রোডে এটিএমে স্কিমার লাগাতে গিয়ে হাতেনাতে পাকড়াও করা হয় রোহিতকে। পরিচয় বদলে মুম্বই পালানোর সময় সৈয়দকে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করা হয়। অন্যদিকে সিআইটি রোডে এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে সুধীরকে গ্রেফতার করা হয়।

লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, সুধীর প্রথমে হাওড়ার অনুপম হোটেলে ছিল। বাকি দুই ধৃত রোহিত ও সৈয়দ ভবানীপুর এলাকায় রুলেন্ড নামের একটি হোটেলে উঠেছিল। ধৃতদের থেকে দুটি স্কিমার মেশিন, ক্যামেরা, মোবাইল ও ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন, এটিএম প্রতারণা কাণ্ডে কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার দুই রোমানিয়ান

পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, সুধীর রঞ্জন আদতে উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা। সুধীর ইলেক্ট্রিশিয়ানের কাজ করত বলেও জানা গিয়েছে। অন্যদিকে, সৈয়দ ব্রডব্যান্ডের কাজ করত বলে জানা গিয়েছে। দু'জনই মুম্বইয়ের মীরা রোড এলাকায় থাকত। রোহিত ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেছিল, যদিও মাঝপথে পড়াশোনা ছেড়ে দেয় সে। থানে এলাকায় রোহিত থাকত বলে লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে। পুণেতে এ ধরেনের অপরাধে প্রথমে গ্রেফতার হয়েছিল রোহিত। যে ঘটনায় ওয়ান্টেড তালিকায় নাম রয়েছে সৈয়দেরও। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৩-২০০৪ সাল থেকে ধৃতদের পরিচয় থাকলেও, গত এক থেকে দেড় বছর ধরে এ ধরনের অপরাধে তারা জড়িত।

কসবার অ্যাক্সিস ও ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্ক, এলগিন রোডে কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাঙ্ক এবং নিউ মার্কেট এলাকায় আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের এটিএমে স্কিমার লাগানোয় যুক্ত ছিল এরা। প্রায় শ'খানেক গ্রাহকের ডেটা এরা হাতিয়েছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। কসবার একটি শপিং মল থেকে কেনাকাটাও করেছিল। ফোরাম মল থেকে ল্যাপটপ কিনেছিল, যে ল্যাপটপেই ডেটা হাতানোর প্রমাণ মিলেছে বলে খবর।

cyber crime ATM
Advertisment