তিন বছরের বেশি সময় ধরে সীমান্ত সংঘাতে জর্জরিত ভারত-চিন। ২০২০ সালে গলওয়ান সংঘর্ষের পর থেকে ইন্দো-চিন কূটনৈতিক চাপানউতোর চলছে। ১৯ দফা সামরিক আলোচনায় দু'দেশ এলএসি-র গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পয়েন্ট থেকে সেনা সরাতে সম্মত হলেও বিতর্কিত এলাকা থেকে চিনা সেনা এখনও সরেনি। যাকে ঘিরে শুরু হয়েছে ফের চর্চা। যদিও বেজিংয়ের দাবি মোদির অনুরোধে আলোচনা শুরু হয়েছিল। এর পালটা জবাব দিয়েছে দিল্লি, বলছে চিনই প্রথমে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক চেয়েছিল।
ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকেও সীমান্ত সমস্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। বিদেশমন্ত্রক সূত্রে এমনটাই দাবি করা হয়েছে। চিনা প্রেসিডেন্ট জিনপিংয়ের সঙ্গে কথোপকথনে ভারত-চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় এখনও জিইয়ে থাকা সমস্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। বিদেশমন্ত্রক সূত্রে জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে ব্রিকস সামিটে সীমান্ত সমস্যা নিয়ে কোনও রকম রাখঢাক না করে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন, সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখা এবং প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখাকে সম্মান করা ভারত-চিন সম্পর্ককে স্বাভাবিক করার জন্য খুবই প্রয়োজন। এই প্রসঙ্গে দু'দেশের রাষ্ট্রনেতা সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে সেনা সরানো এবং শান্তি ফেরানোর ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের নির্দেশ দেবেন বলে সম্মত হয়েছেন।'
এদিকে মাত্র কয়েকঘন্টার ব্যবধানেই ডিগবাজি ড্রাগনের দেশের। চিনের বিদেশমন্ত্রকের এক বিবৃতিতে দুই নেতার মধ্যেই এই ধরণের কোন চুক্তির বিষয়কে মান্যতা দেওয়া হয়নি। একই সঙ্গে বেজিং আরও জানিয়েছে যে প্রধানমন্ত্রী মোদীর অনুরোধেই এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। যদিও এর পালটা জবাব দিয়েছে দিল্লি।
চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্রের জারি করা বিবৃতি অনুসারে "দুই দেশ তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতিতে সামগ্রিক স্বার্থের কথা মাথায় রাখা উচিত এবং সীমান্ত সমস্যাটিকে গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিৎ যাতে যৌথভাবে সীমান্ত অঞ্চলে শান্তি ফিরিয়ে আনা যায়"। পাশাপাশি এক সাংবাদিক সম্মেলনে চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন “সীমানা সংক্রান্ত প্রশ্ন নিষ্পত্তির আগে, উভয় পক্ষকে যৌথভাবে সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা করতে হবে’। যদিও এর আগে বিদেশ সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা বলেন, ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং চিনা প্রেসিডেন্টের মধ্যে কথোপকথন হয়।
৯-১০ সেপ্টেম্বর ভারতে আয়োজিত G20 শীর্ষ সম্মেলনে চিনা প্রেসিডেন্ট জিংপিংয়ের আসার মাত্র কয়েকদিন আগে সীমান্ত সংঘাত নিয়ে চিনকে মোদী বারেবারে সতর্ক করেছেন মোদী। জি-২০ এর মাত্র কয়েক দিন আগে, ৫ থেকে ৭ সেপ্টেম্বর জাকার্তায় আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে মোদী এবং চিনা প্রেসিডেন্টের উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। সেখানেও সীমান্ত সংঘাত ইস্যুতে চিনকে ফের একবার কোনঠাসা করার চেষ্টা করবে ভারত।