/indian-express-bangla/media/media_files/2025/08/26/bhabani-munda-2025-08-26-18-45-39.jpg)
মহিলা ফুটবলারদের অনুপ্রেরণা ভবানী মুন্ডা
Bhabani Munda Footballer: ভবানী মুন্ডা। এই নামটার সঙ্গে কতজন ওয়াকিবহাল, তা নিয়ে একটা সুক্ষ্ম প্রশ্নচিহ্ন থেকেই যায়। জলপাইগুড়ির কালচিনি অঞ্চলের বাসিন্দা। ৩৩ বছর বয়সি এই মহিলা ফুটবলার শুধুমাত্র ৯০ মিনিটের লড়াইয়ে সাফল্য অর্জন করেননি। পুরুষতান্ত্রিক সমাজের বিরুদ্ধে তিনি বলে বলে গোল দিয়েছেন। জানেন এই মহিলা ফুটবলারের আসল গল্প? না জানলে বাকী প্রতিবেদনটা পড়ে দেখতেই পারেন।
Mohun Bagan Super Giant: বেহালায় বাজল বিষাদের সুর, পাঁচ গোলের মালা পরিয়ে জয় মোহনবাগানের
কে এই ভবানী মুন্ডা?
ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল ফুটবলার হবেন। বয়স যত বেড়েছে, এই খেলার প্রতি তাঁর আবেগ সেই মশালের আগুনকে আরও প্রজ্জ্বলিত করেছে। তবে তাঁর এই যাত্রাপথ একেবারেই সহজ ছিল না। বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল তাঁর পরিবার এবং সর্বোপরি গোটা সমাজ। বলা হয়েছিল, এই ফুটবল খেলতে গিয়ে যদি একবার পা ভেঙে যায়, তাহলে আর কোনওদিন বিয়ে হবে না। সেইসময় বাংলায় মহিলা ফুটবলার ছিল একেবারেই হাতে গোনা। বলতে কোনও দ্বিধা নেই, সেইসময় মহিলাদের প্রধান কাজ ছিল গৃহস্থ সামলানো। কখনও মা হিসেবে, কখনও বা আবার স্ত্রী হিসেবে।
Mohun Bagan Super Giant: 'সিগন্যাল এবার মানতে হবে...', বাঘা ডিফেন্ডার আসতেই উচ্ছ্বাস বাগান শিবিরে
কিন্তু, সমাজের যাবতীয় চোখরাঙানিকে কার্যত লাল কার্ড দেখান ভবানী। মনের মধ্যে এক আকাশ সাহস সঞ্চয় করে নেমে পড়েন মাঠে। কিন্তু, পুরুষতান্ত্রিক সমাজের সমালোচনা থামেনি। এমনকী, শর্টস পরে খেলার জন্য তাঁকে একাধিকবার হজম করতে হয়েছে কটূক্তি। ভবানী সাধারণত খালি পায়েই অনুশীলন করতেন। দিনের শেষে ব্যথা কমানোর জন্য নিজেই পায়ে তেল মালিশ করতেন। কিন্তু, সাফল্যের পথে কখনও থেমে যাননি। যাবতীয় প্রতিবন্ধকতাকে চুরমার করে তিনি নিজের প্রতিভার প্রতি সুবিচার করেছেন।
East Bengal FC: 'আজও টোটো-রিকশায় চাপলে...', কলকাতার ভালবাসায় আজও মুগ্ধ লাল-হলুদের প্রাক্তন ফুটবলার
ফুটবল খেলার পাশাপাশি স্থানীয় একটা চায়ের দোকানে কাজ করতেন ভবানী। প্রতিদিন রাত তিনটের সময় ঘুম থেকে উঠতেন। বাড়ির যাবতীয় কাজকর্ম সেরে যেতেন অনুশীলনে। ওই কঠিন দিনগুলো অতিক্রম করতে পেরেছেন বলেই আজ সাফল্য তাঁর চরণ স্পর্শ করেছে।
East Bengal FC: হারতেই নাকেকান্না ইস্টবেঙ্গলের, রেফারির সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ অস্কার ব্রুজোঁ!
আজ ভবানী মুন্ডার জীবন অনেকটাই বদলে গিয়েছে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তাঁকে দেওয়া হয়েছে বাংলা রত্ন পুরস্কার। বৈশ্বিক সাফল্য অর্জন করলেও তিনি মাটিতে পা রেখে চলতে ভালবাসেন। আর সেকারণেই সমাজের পিছিয়ে পড়া মেয়েদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন ডুয়ার্স ইলেভেন ফুটবল দল। গত বছর বেটার ইন্ডিয়াকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, 'যত বেশি মহিলা ফুটবলার স্বেচ্ছায় এই খেলাকে বেছে নেবেন, তত বেশি করে তাঁরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবেন।' ডুয়ার্স ইলেভেন ফুটবল দল একাধিক টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করেছে। জিতেছে বেশ কয়েকটি পুরস্কার।
ভবানী মুন্ডার চিন্তাভাবনা একেবারে স্পষ্ট। ফুটবল খেলার মাধ্যমেই তিনি মহিলাদের স্বনির্ভর করতে চান। সমাজের পিছিয়ে পড়া মহিলাদের স্বাস্থ্য এবং শারীরিক ফিটনেস আরও বাড়াতে চান। ভারতীয় মহিলাদের তিনি একটাই কথা বলতে চান, 'নিজের স্বপ্নের পিছনে দৌড়োতে থাকো। তোমার একটা শটে যেন সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপান্তরিত হয়।'