প্রতীক্ষার আর ১১ দিন। তারপরেই শুরু আইসিসি বিশ্বকাপের দ্বাদশতম সংস্করণ। ইংল্যান্ড আর ওয়েলসে বসছে বাইশ গজের মেগা কার্নিভাল। ৩০ মে উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে ইংল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকা। এই প্রতিবেদনে রইল বিশ্বকাপের প্রতিযোগী ১০ দেশের অধিনায়কদেন নাম। তাঁদের হাতেই থাকছে ব্যাটন।
১) বিরাট কোহলি, ভারত: বিরাট কোহলি আজ বিশ্ব ক্রিকেটে প্রতিষ্ঠিত নাম। ভারত অধিনায়ক নিজেই একটা ব্র্যান্ড হয়ে গিয়েছেন। শেষ কয়েক’টা বছর শুধু বাইশ গজে শাসন করেছে তাঁর ব্যাট। চলতি বছর জানুয়ারিতে বাইশ গজে নয়া ইতিহাস লিখেছিলেন বিরাট। আইসিসি-র ত্রিমুকুটে ভূষিত হয়েছিলেন কিং। ইতিহাসের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে আইসিসি-র বর্ষসেরা ক্রিকেটারের (স্যার গারফিল্ড সোর্বাসের নামাঙ্কিত এই পুুরস্কার) পাশাপাশি সেরা ওয়ান-ডে ও টেস্ট ক্রিকেটারের ত্রিমুকুট উঠেছে তাঁর মাথায়। ক্যাপ্টেন হিসেবেও নিজেকে প্রমাণ করেছেন বিরাট। শেষ তিন বছর পঞ্চাশ ওভারের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহককারী বিরাট ২২৭টি ওয়ান-ডে খেলে ১০৮৪৩ রান করেছেন। ৩০ বছরের ক্রিকেটার এবার ডেপুটি হিসেবে রোহিত শর্মা এবং মাঠের মেন্টর হিসেবে পাচ্ছেন এমএস ধোনিকে।
২) ইয়ন মর্গ্যান, ইংল্যান্ড: আয়োজক দেশ ইংল্যান্ড এই টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিট। তাঁদের দায়িত্বে রয়েছেন ইয়ন মর্গ্যান। তিনি আন্তর্জাতিক পর্যায় ইংল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ৩২ বছরের বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান একমাত্র ইংল্যান্ড ক্য়াপ্টেন যিনি চারটি ওয়ান-ডে সেঞ্চুরি করেছেন। ২২১টি ওয়ান-ডে খেলা মর্গ্যান ৯০.১৫-এর গড়ে ৬৯০১ রান করেছেন। এই হিসেব চলতি বছরের মে পর্যন্ত। এই ফর্ম্যাটে দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ICC Cricket World Cup 2019: ব্যাটসম্য়ানদের সতর্কবার্তা শামির, জানালেন তাঁর ভাঁড়ারে কী অস্ত্র রয়েছে
৩) অ্যারন ফিঞ্চ, অস্ট্রেলিয়া: অস্ট্রেলিয়ার টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান অ্যারন ফিঞ্চ এ বছর বিশ্বকাপে দলের নেতৃত্ব দেবেন। মারাকাটারি ক্রিকেটের জন্যই তিনি জনপ্রিয়। ব্যাটিং ইউনিটের পুরোধাও তিনি। ১০৯টি ওয়ান-ডে খেলে ফিঞ্চ ৪০৫২ রান করেছেন। তাঁর স্ট্রাইক রেট ৮৮.১৬। তিনিই সেদেশের দ্রততম ক্রিকেটার হিসেবে ১০টি ওয়ান-ডে সেঞ্চুরির নজির গড়েন।
৪) জেসন হোল্ডার, ওয়েস্ট ইন্ডিজ: আইসিসি টেস্ট ক্রমতালিকায় জেসন হোল্ডার এক নম্বর অলরাউন্ডার। ক্যারিবিয়ান ক্যাপ্টেন ৯৭টি ওয়ান-ডে খেলেছেন। ১৫৭৪ রান করেছেন তিনি। এবছর গুরু দায়িত্ব তাঁর কাঁধেই। উইন্ডিজকে অন্যতম ডার্ক হর্স বলেই মনে করছেন অনেকে।
৫) নিউজিল্যান্ড, কেন উইলিয়ামসন: কিউয়িদের ক্যাপ্টেন কেন উইলিয়ামন তাঁর দেশের ও বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্য়ান। প্রয়োজনে অফ-স্পিন বলও করতে পারেন। ১৩৯টি ওয়ান-ডে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। ৫৫৪৪ রান করেছেন তিনি। ২০১১ ও ২০১৫-র পর এই নিয়ে তৃতীয়বার বিশ্বকাপ খেলবেন তিনি।
৬) দক্ষিণ আফ্রিকা, ফাফ দু প্লেসিস: প্রোটিয়ারা এই টুর্নামেন্টে চোকার্স নামেই পরিচিত। এবছর সেই তকমা ঘোচাতে মরিয়া তারা। দলের দায়িত্বে রয়েছেন ফাফ। আইপিএল টুয়েলভেও দুরন্ত ছন্দেই ছিলেন। মিডল অর্ডার ব্যাটসম্য়ান আর অসাধারণ ফিল্ডার হিসেবেই পরিচিত ফাফ। ১২৪টি ম্যাচে ৫১২০ রান করেছেন তিনি। স্ট্রাইক রেট ৮৮.৫৩।
৭) পাকিস্তান, সরফরজ আহমেদ: বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে নিয়ে অনেকে বাজি ধরেছেন। পাক দলের অধিনায়ক সরফরজ ২০১৭ সালে দলের অধিনায়কত্ব নেন আজহার আলি সরে আসার পর। দেশের হয়ে ১০৫টি ওয়ান-ডে খেলে ২০৩১ রান করেছেন এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান। তাঁর নেতৃত্বেই পাকিস্তান ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতে।
৮) বাংলাদেশ, মাশরাফি মোর্তাজা: মাশরাফি মোর্তাজা এবছর বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবেন। টি-২০ আন্তর্জাতিক ম্যাচেও তিনি সেই দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাঁর দলের অন্যতম নির্বাচক ও প্রাক্তন সতীর্থ হাবিবুল বাশার জানিয়েছেন যে, তিনি মাশরাফির মতো অধিনায়ক দেখেননি। বাংলাদেশকে ৭০টি ওয়ান-ডে ম্য়াচে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
৯) আফগানিস্তান, গুলাবুদ্দিন নবি: আফগান অধিনায়ক গুলবদিন নবি দেশকে নেতৃত্ব দেবেন। ২৮ বছরের এই ব্যাটসম্যান ৫৩টি ম্যাচে ৮০৭ রান করেছেন। আন্তর্জাতিক আঙিনায় অভিষেক করার পরেই আফগানরা বাইশ গজে চমকে দিয়েছিলেন তাঁদের ব্র্যান্ড অফ ক্রিকেটে। এই কয়েক বছরে ক্রিকেট মানচিত্রে নিজেদের আলাদা একটা জায়গা করে নিয়েছেন রশিদ খান, মহম্মদ নবিরা। দ্বিতীয়বার তাঁরা বিশ্বকাপ খেলতে নামছেন।
১০) শ্রীলঙ্কা, দিমুথ করুনারত্নে: এই দলের অধিনায়ক করুনারত্নে। তাঁর কাঁধেই শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড বিশ্বকাপের গুরুদায়িত্ব সঁপে দিয়েছে। অথচ চার বছর আগে তিনি শেষবার পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেট খেলেছেন। যেটা অপ্রত্যাশিত বললেই চলে।