Air conditioner safety: এসি গ্যাস লিক করে মৃত্যু! কতটা বিপজ্জনক হতে পারে আপনার ঘরে থাকা সাধের এসি মেশিনটি?
সম্প্রতি দিল্লির একটি বাড়িতে এসি গ্যাস লিক করে মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় দেশ। তবে এটাই প্রথম নয়—ভারত সহ বিভিন্ন দেশে আগেও এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনার খবর সামনে এসেছে। ২০২২ সালে ভারতের একটি হোটেলে এসির গ্যাস লিকের কারণে ৩ জনের মৃত্যু হয়, আবার ২০২০ সালে পাকিস্তানের করাচিতে একই কারণে একটি পরিবারের ৫ সদস্য প্রাণ হারান।
এসি কি সত্যিই বিপজ্জনক?
সাধারণভাবে বাড়ি বা অফিসে ব্যবহৃত এসিগুলি নিরাপদ হলেও, কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে এগুলি বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে, বিশেষ করে যদি—
এসিতে গ্যাস লিক কখন হয়
- বায়ুচলাচল ব্যবস্থা দুর্বল হয়
- এসি পুরনো বা সার্ভিসিং না করা অবস্থায় দীর্ঘদিন থাকে
- কোন পরিস্থিতিতে এসিই হতে পারে প্রাণঘাতী?
- যদি ঘর পুরোপুরি বন্ধ থাকে এবং দীর্ঘ সময় ধরে এসি চলে,
- ঘরের ভিতরে যদি রেফ্রিজারেন্ট গ্যাস জমে যায়
- কিংবা ঘরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে গেলে, শ্বাসরোধ হয়ে মৃত্যু হতে পারে
বিশেষ সতর্কতা কাদের জন্য জরুরি?
- বয়স্ক ব্যক্তি
- শিশু ও নবজাতক
- হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টে আক্রান্তরা
- যাঁরা দীর্ঘ সময় ধরে এসি ঘরে থাকেন
কীভাবে এড়াবেন বিপদ?
- এসি চালানোর সময় ঘরের কিছু অংশ খোলা রাখা উচিত, যাতে বায়ু চলাচল বজায় থাকে
- প্রতি ২-৩ ঘণ্টা অন্তর ৫ মিনিটের জন্য দরজা-জানালা খুলুন
- প্রতি বছর অন্তত ১-২ বার রেগুলার সার্ভিসিং ও গ্যাস লিক পরীক্ষা করান
- রেফ্রিজারেন্ট ভরার সময় শুধুমাত্র অনুমোদিত সার্ভিস সেন্টারের সঙ্গেই যোগাযোগ করুন
কোন গ্যাস সবচেয়ে বিপজ্জনক?
- R-32 (ডাইফ্লুরোমিথেন – HFC)। নতুন ইনভার্টার এসিতে ব্যবহৃত হয়। এটি ওজোন স্তরের খুব কম ক্ষতি করে। এটি আরও শক্তি সাশ্রয়ী। আজকাল এটি নতুন এসিতেও প্রচুর ব্যবহৃত হয় তবে এটিও বিপজ্জনকও হতে পারে।
- R-290 (প্রোপেন): পরিবেশবান্ধব হলেও দাহ্য। ওজোন স্তরের খুব কম ক্ষতি করে। এটি দাহ্য হওয়ায় সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।
- R-134A (টেট্রাফ্লুরোইথেন – HFC)। গাড়ির এসি এবং কিছু পোর্টেবল এসিতে ব্যবহৃত হয়। ওজোনের ক্ষতি করে না, তবে এটিতে বিশ্ব উষ্ণায়নের সম্ভাবনা রয়েছে।
- R-22 ও R-12: পুরনো এসিতে ব্যবহৃত গ্যাস, ওজোন স্তরের জন্য ক্ষতিকর
- NH₃ (অ্যামোনিয়া): বিষাক্ত ও বিস্ফোরক, তাই ঘরোয়া এসির জন্য একেবারে অনুপযুক্ত
- R-32 (ডিফ্লুরোমিথেন) হল একটি HFC (হাইড্রোফ্লুরোকার্বন) রেফ্রিজারেন্ট যা আধুনিকযুগের ইনভার্টার এসিগুলিতে ব্যবহৃত হয়। এটি ওজোন-বান্ধব হলেও দাহ্য। যদি এসি সিস্টেমে লিক থাকে এবং গ্যাসের ঘনত্ব 13-29% পর্যন্ত পৌঁছায়, তাহলে স্পার্ক, লাইটার, সুইচ থেকে আগুন ধরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
যদিও এসি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এক অপরিহার্য প্রযুক্তি হয়ে উঠেছে, তবুও এর নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতন না থাকলে বিপদ ডেকে আসতে পারে যে কোন সময়ে । বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ, বায়ুচলাচল ও সচেতনতা থাকলেই এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব।