বাংলার বকেয়া আদায়ে এবার দিল্লি কাঁপাতে মরিয়া তৃণমূল। রাজধানীতে যাওয়ার আগে তাই মোদী সরকারকে নিশানা করে বেনজির হুঙ্কার ছাড়লেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনার অর্থ আটকে দিয়েছে মোদী সরকার। অভিযোগ নবান্নের। ফলে বিপদে লাখ লাখ গরিব মানুষ। দাবি আদায়ে এবার দিল্লির বুকে বঙ্গবাসীর অধিকারের দাবিতে আন্দোলন জোরদার করার চেষ্টায় তৃণমূল নেতৃত্ব। ১০০ দিন প্রকল্পে বঞ্চিত ৫০ লাখ মানুষের চিঠি ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে রাজধানীতে। যাবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ট্রেন বাতিল হওয়ায় বাসে করেই দিল্লিমুখী বাংলার শাসক দলের কয়েক'শ কর্মী, সমর্থকরা। এর মাঝেই বৃষ্টিস্নাত শনিবাসরীয় দুপরে কেন্দ্রকে কড়া কথা শোনালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
কী বললেন অভিষেক?
'বাংলার মানুষের ১০০ দিনের টাকা আটকে দেওয়া হয়েছে। আবাস যোজনার টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র। এটা কী ধরণের স্বৈরাচার? বলছে দুর্নীতি হয়েছে। তর্কের খাতিয়ে মেনে নিলাম দুর্নীতি হয়েছে। কে নিষেধ করেছে দোষীদের শাস্তি দিতে? দু'হাজর, দু'শো' বা কুড়ি জন দোষী। তাহলে কেন লাখ লাখ মানুষের টাকা আটকে দিচ্ছে কেন্দ্র? ওরা বাংলায় ৫০টা অনুসন্ধান টিম পাঠিয়েছিল। কিন্তু দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারেনি। এরপরও টাকা আটকে রাখা আসলে স্বৈরাচারী মানসিকতার প্রমাণ।'
'বাংলার বকেয়া এ রাজ্যের মানুষের মৌলিক অধিকার। এই টাকা আমরা আদায় করেই ছাড়বো। চেয়েছিলাম ১ লক্ষ মানুষকে নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে দিল্লিতে আন্দোলন হবে। প্রথমে তাই রামলীলা ময়দান চেয়েছিলাম। সেখানে অনুমতি দেওয়া হয়নি। ট্রেনে করে বঞ্চিত গরিব মানুষগুলোকে নিয়ে যাওয়ার জন্য ট্রেন বুক করা হয়। কিন্তু রেল টাকা নিয়েও ট্রেন বাতিল করল। ইডি, সিবিআইকে দিয়ে চিঠি পাঠিয়ে তৃণমূলের মনোবল ভাঙা যাবে না। লড়াই আরও জোরাল হবে। ভাবছে এভাবে বাংলার মানুষকে আটকে দেবে। আমি বলছি পারবেন না। এই আন্দোলন তৃমূলের নয়, মানুষের ধরনা হবে। এতেই মোদীজি আপনি ভয় পেয়েছেন। মানুষ গণতান্ত্রিকভাবে এর জবাব দেবে।'
এরপরই হুঙ্কার ছেড়েছেন অভিষেক। বলেছেন, 'মোদীজি আপনি মুর্খের স্বর্গে বাস করছেন। আমরা অন্য ধাতুতে তৈরি। বকেয়া আপনাকে দিতেই হবে। এই দাবি থেকে বাংলা সরছে না।'
২ ও ৩ অক্টোবর তৃণমূলের কর্মসূচি-
বকেয়া আদায়ে ২ এবং ৩ অক্টোবর দিল্লিতে রাজনৈতিক কর্মসূচির আয়োজন করেছে তৃণমূল। ২ অক্টোবর দলের সাংসদ, বিধায়ক এবং পঞ্চায়েত সদস্যরা রাজঘাটে শান্তিপূর্ণ অবস্থান করবেন। ওই দিন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান এবং অঞ্চল সভাপতিরা গান্ধীমূর্তিতে মাল্যদানের ব্যবস্থা করবেন। পাশাপাশি শান্তিপূর্ণভাবে মোমবাতি জ্বালানো বা মোমবাতি মিছিল করা হবে। অন্যদিকে, ৩ অক্টোবর যন্তরমন্তরে প্রতিবাদ জানাবেন বাংলা থেকে যাওয়া ১০০ দিনের কর্মীরা। এই বিক্ষোভ কর্মসূচি লাইভ সম্প্রচারিত করা হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। অভিষেকের ঘোষণা, '৩ তারিখ প্রতিবাদ সভা করব যন্তরমন্তরে। সেই প্রতিবাদ সভার পর আগামিদিন এই লড়াইয়ের দিক নির্দেশিকা দিল্লির মাটি থেকেই ঘোষণা করব।'
আরও পড়ুন- তৃণমূলের ‘মিশন দিল্লি’! নির্ধারিত সময়ে আদৌ পৌঁছোবে বাস? সংশয় চালকেরই