/indian-express-bangla/media/media_files/2025/09/03/detention-camps-for-illegal-foreigners-2025-09-03-13-33-01.jpg)
রাজ্যে রাজ্যে ডিটেনশন ক্যাম্প, বড় নির্দেশ কেন্দ্রের
Detention camps:অনুপ্রবেশ ইস্যুতে আরও কড়া অবস্থান কেন্দ্রের। এবার কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে রাজ্যে রাজ্যে গড়ে উঠবে ডিটেনশন ক্যাম্প। আর কেন্দ্রের এই নির্দেশকে কেন্দ্র করে আসরে নেমেছে ইন্ডিয়া জোট। বিরোধীদের অভিযোগ, এই নির্দেশ আসলে কেন্দ্রের এনআরসির প্রস্তুতি।
সম্প্রতি কার্যকর হওয়া অভিবাসন ও বিদেশী আইন, ২০২৫-এর আওতায় বিদেশীদের প্রবেশ, থাকা ও দেশত্যাগ সংক্রান্ত একাধিক নির্দেশিকা জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সোমবার থেকেই কার্যকর হওয়া এই আইনে বিদেশী ট্রাইব্যুনালকে (Foreigners Tribunal) বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে কোনও ব্যক্তির নাগরিকত্ব নিয়ে সন্দেহ হলে এবং তিনি হাজিরা দিতে ব্যর্থ হলে ট্রাইব্যুনাল সরাসরি তাকে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানোর নির্দেশ দিতে পারবে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের জন্য আলাদা ডিটেনশন সেন্টার বা আটক শিবির তৈরির নির্দেশ দিয়েছে। এই নির্দেশ জারির পর থেকেই বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছে—এটি আসলে এনআরসি কার্যকর করার কেন্দ্রের প্রস্তুতি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই ক্যাম্পগুলির উদ্দেশ্য হলো অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের নির্বাসন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত সেখানে রাখা। এর সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য সরকার, জেলা প্রশাসন বা কেন্দ্রীয় সরকার, যেখানে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের মতামতও নেওয়া হবে। নতুন অভিবাসন ও বিদেশী আইন, ২০২৫ অনুযায়ী প্রতিটি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে ডিটেনশন সেন্টার গড়ে তোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখানে ধরা পড়া অবৈধ অভিবাসীদের রাখা হবে, যতক্ষণ না তাদের দেশে ফেরত পাঠানো যায়।
ইতিমধ্যেই অসমে ছ’টি ডিটেনশন সেন্টার চালু রয়েছে। ডিব্রুগড়, শিলচর, তেজপুর, জোরহাট, কোকরাঝাড় ও গোয়ালপাড়ার জেলায় এই কেন্দ্রগুলি রয়েছে। ২০১৯ সালের নভেম্বর পর্যন্ত সেখানে এক হাজারেরও বেশি বিদেশিকে রাখা হয়েছিল, যাদের অধিকাংশই বাংলাদেশি এবং কিছু মায়ানমারের নাগরিক। গোয়ালপাড়ার মাটিয়ায় সবচেয়ে বড় কেন্দ্র তৈরি হয়েছে, যার ধারণক্ষমতা প্রায় ৩,০০০ জন।
নতুন নিয়মে বলা হয়েছে, গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত বিদেশিরা ভারতে প্রবেশ বা বসবাস করতে পারবে না। এছাড়া প্রত্যেক বিদেশিকে ভিসা বা ওসিআই কার্ডের জন্য বায়োমেট্রিক তথ্য দিতে হবে। অবৈধভাবে দেশে ঢুকলে এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে আটক হলে তাদের ধরে তথ্য কেন্দ্রীয় ডাটাবেসে সংরক্ষণ করা হবে।
যদিও সরকার দাবি করছে—এটি কেবল অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ, তবে বিরোধীরা বলছে, সিএএ ও এনআরসি’র সঙ্গে মিলিয়ে এটি সংখ্যালঘু বিশেষ করে মুসলিমদের নিশানা করার পরিকল্পনা। অসমে চূড়ান্ত এনআরসি তালিকা থেকে ১৯ লক্ষ মানুষ বাদ পড়েছিলেন, যাদের মধ্যে অনেকে নিজেদের নাগরিকত্ব প্রমাণে ব্যর্থ হওয়ায় আটক শিবিরে গিয়েছেন।
মানবাধিকার সংস্থাগুলিও এই কেন্দ্রগুলির দুরবস্থা, অতিরিক্ত ভিড় ও মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিরোধীদের মতে, সারা দেশে এনআরসি চালু হলে এর প্রভাব পড়বে লক্ষ লক্ষ দরিদ্র ও সংখ্যালঘু নাগরিকের উপর।