Malda migrant labourer: তিন মাস আগে রাজস্থানে কাজ করতে যাওয়া মালদার এক পরিযায়ী শ্রমিককে সেখানে দুমাস জেল খাটানোর পর বাংলাদেশে পাঠানোর অভিযোগ উঠল প্রশাসনের বিরুদ্ধে। শুক্রবার মালদার কালিয়াচকের ওই যুবকের বাংলাদেশ থেকে করা একটি ভিডিও ভাইরাল করা হয়েছে। (যদিও এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করে নি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা) আর সেই ভাইরাল হওয়া ভিডিও দেখেই নিজেদের বাড়ির ছেলেকে চিনতে পেরেছেন কালিয়াচকের পরিবারের লোকেরা।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে মালদার কালিয়াচক থানার জালালপুর এলাকার ওই যুবককে বলতে শোনা গিয়েছে, তার নাম আমির শেখ (২১) । তিনমাস আগে সে রাজস্থানে নির্মাণ শ্রমিক হিসাবে কাজ করতে গিয়েছিল। এরপর গত ২মাস আগে তাকে বাংলাদেশি তকমা দিয়ে জেলবন্দী করে রাজস্থান পুলিশ। চারদিন আগে বিএসএফের সহযোগিতায় বাংলাদেশের এক সীমান্ত দিয়ে তাকে ওপারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সকাল থেকে এমন ভাইরাল হওয়া ভিডিও নিয়েই তোলপাড় শুরু হয়েছে মালদায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় তিন মাস আগে জীবিকার সন্ধানে রাজস্থানে পাড়ি দেয় আমির। তার সঙ্গে ছিল ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, ঠিকানার প্রমাণসহ ভারতের সমস্ত বৈধ পরিচয়পত্র। তা সত্ত্বেও, কোনও রকম পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই রাজস্থান পুলিশ তাকে "বাংলাদেশি নাগরিক" সন্দেহে গ্রেপ্তার করে। দীর্ঘ দুই মাস জেল হেফাজতে থাকার পর, চার দিন আগে তাকে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। বর্তমানে আমির বাংলাদেশে আটকে। কান্নাজড়ানো কণ্ঠে সেই ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে আমিরকে বলতে শোনা গিয়েছে জানাচ্ছেন, "আমি ভারতীয়, আমাকে আমার ঘরে ফিরিয়ে নিন!" এই ঘটনার পর গোটা জালালপুর শোকস্তব্ধ। পরিবারের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে। মা কাঁদছেন, বাবা নির্বাক।
আমিরের এক কাকা আজমল শেখ বলেন, ভাইপোর ভারতের বৈধ পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও নাগরিকত্ব প্রমাণ করা যদি সম্ভব না হয় তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে। ইতিমধ্যে পুরো বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের দারস্থ হয়েছে আমিরের পরিবার।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আমিরের বাবা জেমস শেখ প্রথম পক্ষের স্ত্রী মৃত্যুর পর দ্বিতীয় বিয়ে করেন। আমির প্রথম পক্ষের ছেলে। তারা দুই ভাই। গোটা পরিবারটি দিনমজুরের পেশার সঙ্গে যুক্ত। আমিরের বাবা জেমস শেখ বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ার ভিডিও দেখে ছেলেকে চিনতে পেরেছি। বাংলাদেশের কোথায় আছে সেটা জানা যায় নি। তিন মাস আগে ছেলে রাজস্থানে কাজ করতে গিয়েছিল। এরপর দুমাস আগে ওকে পুলিশ ধরে জেলে ঢুকিয়ে দেয়। এরপর চারদিন আগে রাজস্থান পুলিশ এবং বিএসএফ বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে। অথচ আমাদের ভারতীয় নাগরিকত্বের সমস্ত পরিচয় রয়েছে। তারপরেও এরকম অত্যাচার করা হচ্ছে। এখন কি করে ছেলে ফিরে আসবে সেটাও আমাদের ভাবনার বাইরে। তাই প্রশাসনকে পুরো বিষয়টি জানিয়েছি।
শুক্রবার ভাইরাল হওয়া ভিডিও দেখে কালিয়াচকের জালালপুর এলাকার ওই পরিযায়ী শ্রমিকের বাড়িতে যান রাজ্য পরিযায়ী শ্রমিক ঐক্য মঞ্চের সম্পাদক আসিফ ফারুক। তিনি বলেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের ভিন রাজ্যে কাজ করতে গেলে যদি এরকম অবস্থা হয়, তাহলে নিরাপত্তা কোথায় । অবিলম্বে প্রশাসনের এবিষয়ে হস্তক্ষেপের আবেদন জানানো হয়েছে। জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া জানিয়েছেন, পুরো বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।