/indian-express-bangla/media/media_files/2025/06/20/mamata-suvendu-2025-06-20-09-05-04.jpg)
Mamata Banerjee & Suvendu Adhikari: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারী।
North Bengal Disaster: উত্তরবঙ্গ বিপর্যস্ত। মৃত্যু-ধংসলীলায় হাহাকার! এরই মধ্যে বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু, বিধায়ক শঙ্কর ঘোষকে নাগরাকাটায় বেলাগাম আক্রমণে পুরো পরিস্থিতি উত্তাল হয়ে পড়ে। রাজনৈতিক দলগুলির মানুষের পাশে থাকা যখন জরুরি, ঠিক তখন রাজনৈতিক তর্জায় উত্তপ্ত সারা বাংলা। প্রাণঘাতী হামলায় রক্তাক্ত হয়েছেন মালদা উত্তরের বিজেপি সাংসদ। তাঁর চিকিৎসা চলছে শিলিগুড়ির বেসরকারি হাসপাতালে। জখম বিধানসভার বিজেপির মুখ্যসচেতক শঙ্কর ঘোষ। তবে এখনও আক্রমণকারীরা অধরা।
রাজনৈতিক মহলের মতে, পশ্চিমবঙ্গে বন্যা হোক বা প্রাকৃতিক বিপর্যয়, দুর্গাপুজো বা উৎসব রাজনীতির ছোঁয়া ছাড়া সবই যেন অপূর্ণ। তবে নাগরাকাটায় বিজেপি সাংসদ ও বিধায়কের ওপর হামলার ঘটনা অন্য মাত্রা জুড়ে দিয়েছে। তারওপর এই ঘটনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর তৃণমূল কংগ্রেস ও রাজ্য সরকারকে আক্রমণ, তারপর পাল্টা জবাব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। একেবারে চার-ছক্কা চলছে। এরই মাঝে ছোট-খাটো নেতা-নেত্রীরা ব্যাট চালিয়ে খেলছেন কাল থেকেই।
কলকাতা ভেসেছে কয়েকদিন আগেই। সেই জলযন্ত্রনায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রায় ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। উত্তরবঙ্গে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ৩০ ছুঁই ছুঁই। বন্যপ্রাণী ভেসে গিয়েছে জলের তোড়ে। এরই মধ্যে বনজঙ্গল সাফাইয়ের কাজ পুরোদমে চলছিল তারও প্রমান দিয়েছে এই দুর্যোগ। জঙ্গল থেকে ভেসে আসে বড় বড় গাছের গুড়ি। এখানেও বড় ধরনের চোরাই কাঠের কারবার চলছে বলেই অভিযোগ স্থানীয়দের। মানুষের হাহাকারের মাঝে তৃণমূল ও বিজেপি নেতাদের বাক যুদ্ধ চলছে চরমে। আহত সাংসদ-বিধায়কের পাশে দাঁড়াতে ছুটে এসেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরণ রিজিজু, ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। রাজ্য বিজেপির বেশির ভাগ নেতাই রয়েছেন উত্তরবঙ্গে।
আরও পড়ুন- Mirik Disaster:ভাঙা সেতু, বাড়ি-ঘর মেরামতের আশ্বাস মুখ্যমন্ত্রীর, মিরিকে দুর্যোগ পীড়িতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শুভেন্দুদেরও
উত্তরবঙ্গে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্যের প্রতিবাদ করতেই তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্ব একযোগে সোশ্যাল মিডিয়ায় কড়া সমালোচনা শুরু করেছেন। ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচন যেন ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। শুভেন্দুর বক্তব্য, আক্রমণকারীদের গ্রেফতারের কথা বলেননি মুখ্যমন্ত্রী। গ্রেফতার না হলেই আদালতে যাবেন বলে তিনি জানিয়ে দিয়েছে। তৃণমূলের একাংশ এই হামলার নিন্দা করলেও জনরোষ বলেই মন্তব্য করছেন। তৃণমূল জড়িত নয় বলে দলের দাবি।
আরও পড়ুন-Adhir-Mamata: 'বাংলা ডুবছে আর দিদি নাচছে', মুখ্যমন্ত্রীকে নজিরবিহীন আক্রমণ অধীরের
এরাজ্যে উত্তরবঙ্গ বিজেপির শক্ত ঘাঁটি। বিধানসভা বা লোকসভা সবেতেই পদ্মশিবিরের সম্মান বাঁচিয়েছে উত্তরবঙ্গ। রাজনৈতিক মহলের মতে, সেক্ষেত্রে এখানে নিজেদের আধিপত্য রাখতে ময়দানে লড়াই করা ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরাসরি আক্রমণ শানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস ও রাজ্য সরকারকে। তবে বিজেপির একাংশের দাবি, "কেন্দ্রীয় সরকারকে আরও কঠোর পদক্ষেপ করতে হবে। পরে পরে আর কত মার খাব।" সাংসদ-বিধায়কের ওপর হামলার নিন্দা করেছে কংগ্রেস-সিপিএম। তবে বিজেপি ও তৃণমূলের আঁতাতের কথা বলতেও ছাড়ছে না তাঁরা।
আরও পড়ুন-Road accident: লক্ষ্মীপুজোর রাতে ভয়াবহ দুর্ঘটনা, ডাকাবুকো নেতার মৃত্যু, আহত বেশ কয়েকজন
২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের এত আগে প্রাকৃতিক দুর্যোগকে কেন্দ্র করে এমন হিংসাত্মক ঘটনা ঘটে তাহলে এরপর তো অনেক সময় বাকি। এমন মন্তব্য করছে রাজনৈতিক মহল। কংগ্রেসের বক্তব্য, মানুষের পাশে থাকার বদলে ক্ষমতা দখলের লড়াই চলছে।