RG Kar Rape And Murder Case: আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করল সিবিআই। আর্থিক দুর্নীতি মামলায় আজ সন্ধ্যায় আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। সন্দীপ ঘোষের গ্রেফতারির পরই উচ্ছ্বাস দেখান লালবাজারের সামনে বিক্ষোভরত জুনিয়র চিকিৎসকরা।
Advertisment
আরজি কর কাণ্ডে টানা ১০-১২ ঘন্টা ধরে সন্দীপ ঘোষকে প্রতিদিন জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। এরই মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। আর এবার সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতারই করল সিবিআই। সোমবার সিবিআই ক্রাইম ব্রাঞ্চ আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষকে জিজ্ঞাসাবাদ করছিল। তাঁকে আটক করে নিজাম প্যালেসে নিয়ে যায় সিবিআইয়ের 'অ্যান্টি করাপশনের অফিসাররা'।
উল্লেখ্য, এদিন আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকে সিবিআই। সিজিও কমপ্লেক্সে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল। এরপরেই আজ সন্ধ্যেবেলা সিজিও কমপ্লেক্সে এসে ক্রাইম ব্রাঞ্চের দপ্তর থেকে তাঁকে বের করে নিয়ে যায় সিবিআই এর 'অ্যান্টি করাপশন উইং'।
Advertisment
দুর্নীতি ইস্যুতে গ্রেফতার সন্দীপ ঘোষ
সিবিআই এর অ্যান্টি করাপশন উইং -এর পক্ষ থেকে আরজিকর হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতি মামলা তদন্ত চালানো হচ্ছিল। সূত্রের খবর, সেই তদন্তে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্যই সন্দীপ ঘোষকে আটক করল সিবিআই এর অ্যান্টি করাপশন উইং। উল্লেখ্য, নিজাম প্যালেসে এদিন সন্ধ্যায় সিবিআইয়ের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। বিপুল সংখ্যায় কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল নিজাম প্যালেস চত্বরে।
আরজি কর-কাণ্ডের পর পেরিয়ে গিয়েছে ২৩ দিন। রোজই প্রতিবাদে পথে নামছেন সাধারণ মানুষ। পিছিয়ে নেই বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরাও। সোমবার পথে নামেন জুনিয়র ডাক্তাররা। বিচারের দাবিতে সোমবার লালবাজার অভিযানের ডাক দেন জুনিয়র ডাক্তাররা। দুপুর ২টোয় কলেজ স্কোয়ার থেকে মিছিল করে লালবাজারের উদ্দেশে রওনা দেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে পদত্যাগ করতে হবে।
জুনিয়র ডাক্তারদের মিছিল আটকাতে সবরকম প্রস্তুতি সেরে রাখে কলকাতা পুলিশ। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন রুখতে লালবাজারের সামনে বসানো হয় ভারী, চওড়া ব্যারিকেড। যাতে সেই ব্যারিকেড ভেঙে এগোতে না পারেন আন্দোলনকারীরা। নবান্ন অভিযান থেকে শিক্ষা নিয়েই এবার এমন অভিনব প্রস্তুতি পুলিশের। আন্দোলনকারীদের রুখতে টিয়ার গ্যাসের সেল নিয়ে তৈরি থাকে পুলিশ।
এদিকে, লালবাজারের আগেই মিছিল আটকে দেওয়ায় আন্দোলনকারীরা ফিয়ার্স লেনের সামনে পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের কুশপুতুল পোড়ান। তাঁদের দাবি, লালবাজারে কমিশনারের সঙ্গে তাঁদের দেখা করতে দিতে হবে। আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিরা কমিশনারকে ডেপুটেশন দিতে চান। বিনীত গোয়েলকে ইস্তফা দিতে হবে। না-হলে তাঁরা যাবেন না। মিছিল এগোতে না দিলে সেখানেই বসে থাকবেন তাঁরা। এরপর রাস্তার ওপরেই অবস্থানে বসে পড়েন আন্দোলনকারীরা। এরই মাঝে পুলিশ জানিয়ে দেয় মিছিল আর এগোতে দেওয়া হবে না।
ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেছেন, 'আজ পর্যন্ত যত মিছিল হয়েছে, ফিয়ার্স লেনেই আটকানো হয়। এটাই নিয়ম। আজও মিছিল এগোতে দেওয়া হবে না। ওঁরা যদি শান্তিপূর্ণ অবস্থান করতে চান, করুন।' পুলিশ জানিয়েছে, কেবলমাত্র জুনিয়র ডাক্তারদের ২০ জন প্রতিনিধিকে ভিতরে যেতে দেওয়া হবে। তবে পুলিশের কথা মানবেন না বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের দাবি, মিছিল এগোতে দিতে হবে, নয়তো কমিশনার না আসা পর্যন্ত অবস্থান আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তাঁরা।
সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে এর আগে ভুরিভুরি অভিযোগ ওঠে। তাঁর বিরুদ্ধে আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু, তখন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি রাজ্য প্রশাসন। এরপর হাসপাতালে চিকিৎসক খুনের পর প্রাক্তন ডেপুটি সুপার একই অভিযোগ জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। কলকাতা পুলিশও দুর্নীতির অভিযোগে পৃথক মামলা রুজু করে। শেষ পর্যন্ত হাইকোর্ট দুর্নীতির তদন্তভার তুলে দেয় সিবিআইয়ের হাতে। সেই মামলাতেই গ্রেফতার হলেন সন্দীপ ঘোষ।