Advertisment

Sukhendu Shekhar Roy: 'দ্রোহকাল, পুঞ্জীভূত ক্ষোভের আউটবার্স্ট', জাগো বাংলার পদ ছেড়ে বিস্ফোরক সুখেন্দু শেখর

Sukhendu Shekhar Roy: মঙ্গলবার তৃণমূলের মুখপত্র 'জাগো বাংলা'র সম্পাদক পদের দায়িত্ব থেকে সরে এসেছেন তিনি। ঠিক তার পরপরই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার মুখোমুখি হয়ে রাজনৈতিক দল, আরজি কর কাণ্ড নিয়ে সমাজের অবস্থান সম্পর্কে নিজের মতামত শোনালেন সুখেন্দু শেখর রায়।

author-image
Joyprakash Das
New Update
Sukhendu Sekhar Roy admits wrong for comment on kolkata police dog squad in RG kar case, আরজি কর, সুখেন্দুশেখর রায়, কলকাতা পুলিশ, ডগ স্কোয়াড

তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়। ফাইল ছবি।

Sukhendu Shekhar Roy: আরজি কর কাণ্ডের পর থেকে ক্রমাগত টুইটের পর এবার ছাড়লেন দলীয় মুখপাত্রের সম্পাদকের পদ। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, "বাংলায় জনজাগরণ চলছে। এমন আন্দোলন আমার ৫৭ বছরের বেশি রাজনৈতিক জীবনে প্রথম উপলব্ধি করছি। মানুষের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ আরজি কর কাণ্ডের পর আউটবার্স্ট হয়েছে।" তবে তিনি 'জাগো বাংলা'র সম্পাদক পদ ছাড়লেও দলেই আছেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। রাজ্যসভার পদ থেকে অব্যাহতি নেবেন বলেও এমন কোনও কথা বলেননি সুখেন্দু শেখর রায়।    

Advertisment

'জাগো বাংলা'র সম্পাদক পদ ছাড়লেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়। তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পর দলীয় মুখপাত্রের সম্পাদক হয়েছিলেন সুখেন্দু শেখর রায়। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ বলেছেন, "ব্যক্তিগত কারণে জাগো বাংলার সম্পাদক পদ ছেড়েছি। এই পদের প্রতি আমি কোনও সুবিচার করতে পারছি না। পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পর আমাকে থাকতে বলল, আমি না করিনি। কাগজটা খুব ভালোভাবে চলছে। সেখানে হস্তক্ষেপের কোনও জায়গা নেই। যেখানে ভালোভাবে চলছে সেখানে আমার থেকে লাভ কি?" তবে সুখেন্দুবাবুর এই পদ ছাড়া নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা ছড়িয়েছে। আরজি কর কাণ্ডের পর থেকেই সোশাল মিডিয়ায় বেশ সরব তিনি। দলের কেউ কেউ তা নিয়ে মন্তব্য করতেও ছাড়েননি। 

প্রশ্ন উঠেছে তাহলে কি এরপর সাংসদ পদ ছাড়তে চলেছেন বর্ষীয়ান তৃণমল নেতা? ইতিমধ্যে দলের অন্দরে ও সোশাল মিডিয়াতেও একাংশ বলতে শুরু করেছেন দলে থেকে এসব না করে এবার রাজ্যসভার সাংসদ পদ ছেড়ে দিন। সুখেন্দুবাবু এই প্রসঙ্গে বলেন, "আমার যেমন মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে। তেমনই ভারতের সব মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে। কারণ এটা সাংবিধানিক অধিকার। সুতরাং তাঁরা তাঁদের মত প্রকাশ করছেন। এখানে আমার কী বলার আছে।" তিনি যে এখনও দলেই আছেন তা-ও স্পষ্ট করেছেন। 

আরও পড়ুন- Kolkata Police commissioner: কলকাতা পুলিশের নতুন কমিশনার মনোজ ভার্মা, বিনীত গোয়েলকে কোথায় পাঠালেন মমতা?

আরও পড়ুন- Swapan Debnath: 'রাত জাগো'র সঙ্গে মদ্যপানে যাওয়া মহিলাদের তুলনা, বেফাঁস মন্ত্রী স্বপন

সুখেন্দবাবুর কথায়, "প্রথমত কেন আমি টুইট করছি, দল তো আমাকে বারণ করেনি। দোষীদের ১৫ দিনের মধ্যে ফাঁসি চাই একথা তো মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন। এই দাবিতে তিনি রাস্তায় নেমে মিছিল করেছেন। দলের অন্যদেরও তা ফলো করা উচিত। এখনও পর্যন্ত যতগুলি টুইট আমি করেছি কোথাও কেউ দেখাতে পারবেন না একটা শব্দও দলের বিরুদ্ধে বা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বলেছি। আমার টুইটের কেউ যদি ব্যাখ্যা দেন তা তো আমার মুখে বসানো যাবে না। আমি তো পরিস্কার ভাষায় লিখেছি।"


তৃণমূলের সাংসদ, বিধায়ক ও নেতৃত্বের একাংশ প্রকাশ্যে আরজি কর ইস্যুতে আন্দোলন নিয়ে ক্রমাগত হুমকি দিচ্ছেন। কিন্তু আন্দোলনের প্রতি নিজের অবস্থানে অনড় সুখেন্দু শেখর রায়। আরজি করের তরুণী চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার বিচারের দাবিতে মানুষের প্রতিবাদ, আন্দোলন দেখে অভিভূত তৃণমূল কংগ্রেসের এই প্রবীণ নেতা। এমন আন্দোলন তিনি কখনও প্রত্যক্ষ করেননি শুধু তাই না, এভাবেও যে অহিংসা, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করতে পারে লাখো লাখো মানুষ তা অভাবনীয়, বলছেন সুখেন্দুবাবু। 

আরও পড়ুন- Hilsa: টন টন মাছ উঠেছে গত কয়েকদিনেই! দারুণ সস্তায় সাধের ইলিশ আর দিন কয়েকেই?

তিনি বলেন, "আমি যে ক'টা আন্দোলন দেখেছি। আমার রাজনৈতিক জীবন ৫৭ বছরের বেশি। আমি খাদ্য আন্দোলন দেখেছি, দু'বার যুক্তফ্রন্ট ভেঙে দিয়ে রাষ্ট্রপতি শাসন দেখেছি, তারপর নকশাল আন্দোলন, কংগ্রেসের ৭২ থেকে ৭৭, বামফ্রন্টের ৩৪ বছর। আমাদের ১৩ বছর। এতগুলি পর্ব দেখেছি। আমার অনুভূতি, একটা বাস জ্বলল না, একটা ট্রাম জ্বলল না, একটা কোথাও ঢিল মারল না। এত মানুষ নেমে গেল রাস্তায়। ১৪ অগাস্ট রিক্লেইম নাইটের ডাকে সারা বাংলাজুড়ে কয়েক হাজার জায়গায় প্রতিবাদ হয়েছে। ভারতে হয়েছে, ভারতের বাইরে বিদেশে মানুষ বেরিয়ে প্রতিবাদ করেছে। অথচ প্রথমে এই রাত দখলের ডাক দেওয়া হয়েছিল কলকাতার হাতে গোনা কয়েকটা জায়গায়। কোনও দল নেই, ঝাণ্ডা নেই। মানুষের স্বতঃস্ফুর্ত আন্দোলন। এটাকেই বলে জনজাগরণ।"  এই সময়কালকে তিনি নাম দিয়েছেন 'দ্রোহকাল'।

আরও পড়ুন- RG Kar Case: সিবিআইয়ের রিপোর্ট দেখে বিচলিত প্রধান বিচারপতি, আরজি কর কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্ট কী বলল শুনানিতে?

তবে এই জনজাগরণ কি শুধুই আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে ক্ষোভপ্রকাশ? স্পষ্ট জবাবে সুখেন্দু শেখর রায় বলছেন, "ক্ষোভ, দুঃখ ও হতাশায় মানুষগুলো তপ্ত, বিদ্ধস্ত হয়ে গিয়েছে। এবার রাস্তায় নামো সবাই। সেখানে রাজনৈতিক দলগুলোকে ঘেঁষতে দিচ্ছে না। রাজনৈতিক দলের কেউ গেলে গো ব্যাক স্লোগান দিয়ে তাড়িয়ে দিচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলির প্রতি এত অনাস্থা! আবার এই লোকগুলোই ৫ বছর অন্তর কোনও না কোনও রাজনৈতিক দলকে ভোট দেয়। এটা কি জনজাগরণ নয়? আরজি করের ঘটনা সেন্টার পয়েন্ট। ক্ষোভটা শুধু আরজি কর নয়। সেটা আমি আবার বলছি। এটা পুঞ্জীভূত ক্ষোভ। এটা আউটবার্স্ট হয়েছে। কিন্তু কোনও হিংসার আশ্রয় নেয়নি আন্দোলন। পুরো শান্তিপূর্ণ আন্দোলন।"

আরও পড়ুন- India-Bangladesh: হঠাৎ কী এমন হল? বাংলাদেশকে কয়েকশো একর জমি দিয়ে দিচ্ছে ভারত

এদিকে, সুখেন্দু শেখর রায় 'জাগো বাংলা' পত্রিকার সম্পাদক পদের দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার পরেই ওই পদে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে আনা হয়েছে। মঙ্গলবার রাজ্যের শাসকদলের মুখপত্র 'জাগো বাংলা'র সান্ধ্য সংস্করণে দেখা গিয়েছে, পত্রিকার সম্পাদকের জায়গায় সুখেন্দু শেখর রায়ের বদলে বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের নাম রয়েছে।  

tmc Sukhendu Sekhar roy TMC MP Jago Bangla Sovondeb Chatterjee RG Kar Case
Advertisment