সারদা চিট ফান্ড মামলায় সিবিআইয়ের সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা আদালত অবমাননার আবেদনের প্রত্যুত্তরে এফিডেভিট জমা করলেন রাজ্যের মুখ্য সচিব মলয় দে, ডিজিপি বীরেন্দ্র কুমার এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। এফিডেভিটের মাধ্যমে শীর্ষ আদালতের সম্ভাব্য অবমাননার জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন তাঁরা।
তাঁদের এফিডেভিটে ওই আধিকারিকরা আদালতকে জানান, কোনো সময়েই সিবিআই তদন্তে বাধা দেন নি তাঁরা, বা কোনো আধিকারিক গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে অসহযোগিতা করেন নি। পুলিশ কমিশনার অবশ্য আদালতকে এও জানান যে ৩ ফেব্রুয়ারি কোনোরকম বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই জোর করে তাঁর সরকারি বাসভবনে ঢোকার চেষ্টা করে সিবিআই। তাঁর এই বক্তব্যকে সমর্থন করেন ডিজিপি।
প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন একটি বেঞ্চ জানায়, এফিডেভিট খতিয়ে দেখার পর জানিয়ে দেওয়া হবে, আবেদনকারীদের ২০ ফেব্রুয়ারি বেঞ্চের সামনে সশরীরে হাজির হতে হবে কি না। আজ, অর্থাৎ ১৯ ফেব্রুয়ারি, শীর্ষ আদালতের সেক্রেটারি জেনারেল এই মর্মে আদালতের সিদ্ধান্ত তাঁদের জানিয়ে দেবেন বলে জানায় ওই বেঞ্চ।
আরও পড়ুন: বয়ান রেকর্ড শেষ, কলকাতা ফিরলেন রাজীব কুমার
কলকাতায় রাজীব কুমারের বাসভবনে সারদা মামলা সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদ করার উদ্দেশ্যে ঢোকার সময় বাধা পেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় সিবিআই। ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং, এবং এর পরেই তিন দিনের 'সংবিধান বাঁচাও' ধর্নায় বসেন তিনি। তাঁর অভিযোগ ছিল, ষড়যন্ত্র করে "অভ্যুত্থান" ঘটানোর চেষ্টা করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ।
সুপ্রিম কোর্ট রাজীব কুমারকে নির্দেশ দেয়, তিনি যেন সিবিআইয়ের সামনে হাজির হয়ে "নিষ্ঠা সহকারে" সারদা চিট ফান্ড মামলার তদন্তে সহযোগিতা করেন। গত ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে টানা পাঁচদিন ধরে মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে রাজীব কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। দেশের শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থার এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বক্তব্য, এই জিজ্ঞাসাবাদের দ্বারা চিট ফান্ড কেলেঙ্কারির নেপথ্যে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের নাগাল পেতে চায় সিবিআই। "অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ নষ্ট করা হয়, অথবা আমাদের কাছ থেকে গোপন করা হয়। আমরা তদন্ত আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। চিট ফান্ড কেলেঙ্কারির নেপথ্যে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র প্রকাশ্যে আনতে চাই," বলেন কলকাতায় সিবিআইয়ের যুগ্ম ডিরেক্টর পঙ্কজ শ্রীবাস্তব।