১১ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করল ইজরায়েল ও হামাস। শুক্রবার ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নিরাপত্তা পরিষদ সংঘর্ষবিরতিতে সম্মতি জানিয়েছে। ইজরায়েলি সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফে তুমুল চাপের ফলে সংঘর্ষ থামাতে বাধ্য হয়েছে ইজরায়েল। ভোররাত থেকেই গোলাগুলি বর্ষণ বন্ধ হয়েছে।
গত ১০ মে ইজরায়েল এবং হামাস জঙ্গিগোষ্ঠী সংঘর্ষে জড়ায়। শয়ে শয়ে এয়ারস্ট্রাইক করে ইজরায়েল। লক্ষ্য ছিল গাজায় হামাসের জঙ্গিঘাঁটি, গোপন সুড়ঙ্গ। পাল্টা হামাস এবং অন্যান্য জঙ্গিগোষ্ঠী গুলি ইজরায়েলি শহর লক্ষ্য করে অন্তত ৪ হাজার রকেট বর্ষণ করে। তবে অধিকাংশই প্রতিহত করে করে দেয় ইজরায়েলের আয়রন ডোম।
এখনও পর্যন্ত দুই পক্ষের হামলায় ২৩০ জন প্যালেস্তানীয় কমপক্ষে নিহত হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে এটাই খবর। অন্যদিকে, ইজরায়েলে ১২ জন নিহত হয়েছেন। তবে ক্ষয়ক্ষতির এখানেই শেষ নয়, গাজার আবাসন মন্ত্রকের দাবি, ১৬,৮০০ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইজরায়েলি হামলায়। তার মধ্যে ১,৮০০ বাড়ি এখন বাসের অযোগ্য এবং হাজার খানেক পুরোপুরি ধ্বংস।
হামাসের মিডিয়া সেল জানিয়েছে, ইজরায়েলি বোমাবর্ষণে ৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ক্ষতি হয়েছে গাজা ভূখণ্ডের শিল্পোদ্যোগ এবং কলকারখানা ধ্বংস হওয়ার দরুন। ২২ মিলিয় ডলার ক্ষতি হয়েছে বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে, ২৭ মিলিয় ডলার কৃষি ও পশুপালন ক্ষেত্রে ক্ষতি হয়েছে। রাষ্ট্রসংঘের শরণার্থী বিষয় দফতর অবিলম্বে গাজা ও অধিকৃত ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে ত্রাণকাজের জন্য ৩৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে বিশ্বের কাছে।
এদিকে, ইজরায়েলে করোনাভাইরাসের জন্য আগেই দেশের আর্থিক বৃদ্ধি প্রথম ত্রৈমাসিকে ৬.৫ শতাংশ সংকোচন হয়েছে। তার উপর হামাসের সঙ্গে সংঘর্ষে ক্ষতির পরিমাণ বেড়েছে। দেশের উৎপাদন সংগঠনের দাবি, ১১-১৩ মে ইজরায়েলের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৬৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। দেশের দক্ষিণ ভাগে হামাসের রকেট বর্ষণে বহু কারখানা ধ্বংস হয়েছে। তেল আভিভ বিমানবন্দরে বহু আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থা পরিষেবা বন্ধ করে দেয়। ইজরায়েলের পর্যটন ও ভারী শিল্পোদ্যোগ ধাক্কা খেয়েছে এই ১১ দিনে।