চলতি বছরের রেকর্ড-ভাঙা উষ্ণায়নের ঘটনাগুলো একটি বিস্ময়কর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছে। তার মধ্যে গত সোম এবং মঙ্গলবার (জুলাই ৩ এবং ৪), পৃথিবীর সবচেয়ে উষ্ণতম দিন হিসেবে গণ্য হয়েছে। এর মধ্যে গত ৩ জুলাই প্রথমবারের মতো বিশ্বব্যাপী দৈনিক গড় তাপমাত্রা ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করেছিল। সেই রেকর্ড একদিনের মধ্যে ভেঙে যায়। পরদিন, অর্থাৎ ৪ জুলাই দিন আরও গরম হয়ে ওঠে। ৩ জুলাই গড় তাপমাত্রা ছিল ১৭.০১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরের দিন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৭.১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিজ্ঞানীরা অদূর ভবিষ্যতে তাপমাত্রার এমন রেকর্ড-ভাঙা ঘটনা ঘটবে বলে আশা করছেন।
গড় তাপমাত্রা ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস
অবশ্য, ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস গরম নয়। তবে, এটাই ছিল ৩ ও ৪ জুলাই বিশ্বব্যাপী গড় তাপমাত্রা। বিশ্বের অনেক জায়গায়, বিশেষ করে উষ্ণ অঞ্চলে ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস গরম বলে না-ই মনে হতে পারে। কিন্তু, মেরু অঞ্চলের কাছে তো সেটা বিরাট ব্যাপার। একথা ভুললে চলবে না, পৃথিবীর এক বিরাট অংশ এখনও বরফের চাদরে ঢাকা আছে। তাছাড়া গোলার্ধের ব্যাপারও আছে। কোথাও শীত বেশি, তো কোথাও কম। আসলে বলা ভালো যে কোথাও তাপমাত্রা বেশি, আর কোথাও কম। তার মধ্যেই মেরু অঞ্চলের বরফের চাদর, উঁচু পাহাড়ের তুষারস্থল, মহাসাগর- সব জায়গার গড় তাপমাত্রা ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মানে যেখানে জিরো ডিগ্রির নীচে তাপমাত্রা থাকার কথা, সেখানেও। ফলে গোটা ব্যাপারটাই একটা অদ্ভুত পর্যায়ে এসে ঠেকে।
আরও পড়ুন- কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ডেটা সুরক্ষা বিলের অনুমোদন, জানুন বিষয়বস্তু, উদ্বেগ কোথায়?
মহাসাগরগুলোর তাপমাত্রাও বেড়েছে
এর মধ্যে মহাসাগরগুলোর গড় তাপমাত্রা এসে ঠেকেছে প্রায় ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। মহাসাগরগুলো গোটা পৃথিবী পৃষ্ঠের প্রায় ৭০ শতাংশ দখল করে রেখেছে। এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টার্কটিকার বরফের চাদরও। যেখানে তাপমাত্রা সহজেই -৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যায়। পৃথিবী পৃষ্ঠের প্রায় ৮.৩ শতাংশ বরফের চাদরে আবৃত। তার মধ্যে গ্রিনল্যান্ড এলাকা, আর্কটিক অঞ্চল, উত্তর মেরুই প্রায় ১.২ শতাংশ অঞ্চল বরফের চাদরে ঢেকে রেখেছে। পাহাড়ের হিমবাহ এবং সাইবেরিয়ার মত কিছু এলাকা ভূপৃষ্ঠের আরও ০.৫ শতাংশকে বরফের আস্তরণে ঢেকে রেখেছে।