এবার কি তবে বিজেপি-র হাত ধরতে চলেছেন ভাঙড়ের ত্রাস বলে কুখ্যাত আরাবুল ইসলাম? এমন সম্ভাবনা কিন্তু উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। আরাবুল পুত্রকে ট্যাগ করা একটি ফেসবুক পোস্ট থেকে এমন একটা ধারণা তৈরি হচ্ছে।
পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী দিয়েছিলেন ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনের সমর্থকরা। তাঁদের ভোটপ্রচারের মিছিলে গিয়ে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন হাফিজুল মোল্লা। সেই খুনের দিনই রাত্রে গ্রেফতার করা হয় আরাবুলকে। অনেকেই মনে করেছিলেন, পঞ্চায়েত ভোট মেটার পর জামিন পেয়ে যাবেন আরাবুল। কিন্তু তা ঘটেনি। এরপর হাফিজুলের স্ত্রী মুচলেকা দিয়েছিলেন, আরাবুল বা তাঁদের পরিবারের কেউ স্বামীর খুনের ঘটনায় জড়িত নন। সে নিয়ে জেলের ভিতর থেকে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ ওঠে আরাবুলের বিরুদ্ধে। তাও শেষ পর্যন্ত জামিন জোটেনি তাঁর।
এদিকে ভাঙড় আন্দোলনের অন্যতম নেতা অলীক চক্রবর্তী গ্রেফতার হয়ে ৩৫টি মামলায় জামিন পেয়ে গেছেন। জামিন পেয়েছেন ভাঙড় আন্দোলনে যুক্ত অন্যরাও। মুখ্যমন্ত্রী নিজে যাদের বহিরাগত তকমা দিয়েছিলেন, তাঁরা সকলেই এখন মুক্ত।
এই পরিস্থিতিতে আরাবুল পুত্র মহম্মদ হাকিমুল ইসলামকে ট্যাগ করা একটি ফেসবুক পোস্ট বেশ কিছু প্রশ্ন সামনে তুলে দিয়েছে। ওই ফেসবুক পোস্টে আরাবুল ইসলামের জামিন না পাওয়া ও অলীক চক্রবর্তীর জামিন পাওয়ার প্রসঙ্গ তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মাওবাদীদের হয়ে কাজ করার অভিযোগ তোলা হয়েছে। একই সঙ্গে ২০১৯ সালের ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে।
গত ১১ মে ভোট প্রচারের মিছিলে হাফিজুল মোল্লার খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হন আরাবুল ইসলাম। এরপর গত ৬ জুন হাফিজুলের স্ত্রী সাবিনা খাতুন মুচলেকা দিয়ে জানান, তাঁর স্বামীর খুনের ঘটনায় আরাবুল বা তাঁর পরিবারের কেউ যুক্ত নন। এই বয়ানের উপর ভিত্তি করে আরাবুলের আইনজীবীরা আদালতে আরাবুলের জামিনের আবেদন করেন। ১৩ জুন বারুইপুর আদালতে আরাবুলের জামিনের বিরোধিতা করেননি সরকারি আইনজীবী। হত্যা মামলায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সরকারি আইনজীবীর জামিনের বিরোধিতা না করার ঘটনা নিয়ে সোচ্চার হন অন্য পক্ষের আইনজীবীরা। সেদিনও শেষ পর্যন্ত জামিন জোটেনি আরাবুলের।
আরও পড়ুন, Bhangar Update: ভাঙড়ে খুনের ঘটনায় জামিন মিলল না আরাবুলের
এদিকে ৩১ মে ভুবনেশ্বর থেকে গ্রেফতার হন সিপিআইএমএল রেড স্টার নেতা অলীক চক্রবর্তী। তাঁর বিরুদ্ধে ইউএপিএ, তৃণমূল কর্মী খুন সহ মোট ৩৫টি মামলা ছিল। সব কটি মামলাতেই জামিন পেয়ে দুদিন আগে মুক্ত হয়েছেন তিনি।
শাসকদলকে ভাঙড়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে শিরোনামে চলে আসা অলীক জামিন পেয়ে গেছেন, অথচ এক সময়ের তৃণমূলের উঁচু মহলের চোখের মণি আরাবুল জেলে পচছেন, এ ব্যাপারটা শাসকদলের অনেকের কাছেই প্রশ্নচিহ্ন তুলে দিয়েছে। তাঁদের কেউ কেউ বিভিন্ন কারণে আরাবুলকে মুক্ত দেখতে চান। বিজেপি-কে রাজ্যে ন্যূনতম জায়গা না ছাড়তে চাওয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ২০১৯-এর ভোটের জুজু দেখিয়ে আরাবুলকে জেলমুক্ত করা তাঁদেরই গেমপ্ল্যান বলে সন্দেহ করছে রাজনৈতিক মহল।