Book Fair: এজেলার বইমেলায় এযেন উপরি পাওনা। বইমেলায় গিয়ে বিভিন্ন বিষয়ের বই কেনার পাশাপাশি উপরি পাওনা 'অঙ্কের দাদু'র সান্নিধ্য পাওয়া। শুধু সান্নিধ্য পাওয়া বললে ভুল হবে। হাতে-কলমে মেলায় বসেই প্রাক্তন এই অঙ্কের শিক্ষক পাঠও দিচ্ছেন অনেককে। ক'দিনেই মালদা জেলা বইমেলায় এই 'অঙ্কের দাদু' পড়ুয়াদের কাছে রীতিমতো জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন।
মালদা জেলা বইমেলায় 'অঙ্কের দাদু'র দোকানেই ভিড় করছেন বিভিন্ন শ্রেণির পড়ুয়ারা। সহজ-সরল পদ্ধতিতে অঙ্ক শেখার জন্যই এখন মালদা জেলার বইমেলায় 'অঙ্কের দাদু' হয়ে উঠেছেন পড়ুয়াদের কাছে হিরো। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের বাসিন্দা মিহির সমাজদার পেশায় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক । তাঁকে এখন পড়াশোনার জগতে "অঙ্কের দাদু" নামেই ডেকে থাকেন পড়ুয়ারা।
বলাবাহুল্য, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় বিভিন্ন শ্রেণির পড়ুয়াদের মধ্যে অঙ্ক নিয়ে একটু বাড়তি চিন্তা থাকে। অনেকেই সহজে বুঝতে পারে না কীভাবে অঙ্কের সমাধান হবে। অনেক বইয়ের অঙ্ক আবারও অনেকের কাছে বোধগম্য হয় না। এই সব কিছুর সমাধান করতে এগিয়ে এসেছেন 'অঙ্কের দাদু'। ছাত্র-ছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে সহজ-সরল ভাষায় অঙ্কের বই লিখে চলেছেন ৭০ বছরের গণ্ডি পেরানো মিহির সমাজদার। তাঁর লেখা বই এখন বিভিন্ন প্রান্তের ছাত্রছাত্রীদের কাছে প্রিয় হয়ে উঠেছে। কারণ বইয়ের সরলতা। আর এই কারণেই এখন অঙ্কের জগতে 'দাদু' নামে পরিচিত বালুরঘাটের প্রাক্তন অঙ্কের শিক্ষক মিহির সমাজদার।
মালদা জেলা বইমেলায় অঙ্কের দাদুর স্টলে ছাত্রছাত্রীদের ভিড়।
দীর্ঘদিন ধরেই তিনি বই লিখে চলেছেন। শিশু শ্রেণী থেকে বিএসসি পর্যন্ত তিনি অঙ্কের বই লিখেছেন। ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার জন্য সিলেবাস মেনেই তিনি বই লিখেন। এখন পর্যন্ত প্রায় ৬৫টি বই লিখেছেন তিনি। সবগুলিই অঙ্কের বই। তবে মিহিরবাবুর লেখা বই কোনও দোকানে কিনতে পাবেন না। শুধুমাত্র রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অনুষ্ঠিত বই মেলাতেই পাবেন।
উল্লেখ্য, মালদা জেলা ৩৫তম বই মেলায় 'অঙ্কের দাদু' স্টল খুলে বসেছেন। ছাত্র-ছাত্রীদের ভিড় লক্ষ্যণীয়। মালদা জেলা বইমেলাতে এলে 'দাদু'র কথা জিজ্ঞেস করলে আট থেকে আশি সকলে বলে দিচ্ছেন দাদুর স্টল সোজা গিয়ে বাম দিকে। এখন বছরভর মিহিরবাবু বই লেখালেখি করেন। বইমেলার মরশুমে তিনি নিজে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় আয়োজিত বইমেলাগুলিতে ঘুরে ঘুরে স্টল দিয়ে বই বিক্রি করেন। বর্তমানে এটি তাঁর নেশা।
রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তার বইয়ের কদর রয়েছে। বিগত কয়েক বছর ধরেই তিনি এই বইগুলি বিক্রি করছেন। বর্তমানে চাহিদা ব্যাপক হারে। মিহিরবাবু জানিয়েছেন, একজন অঙ্কের শিক্ষক ছিলেন। সে সময় ছাত্র-ছাত্রীদের সমস্যা উপলব্ধি করেছিলেন তিনি। অঙ্কের বিষয়ে অনেকেরই নানা সমস্যা-জটিলতা দেখা দিয়েছিল। তখন থেকেই সহজ সরল ভাষায় বই লেখার চিন্তাভাবনা। অবসর নেওয়ার পর থেকেই শুরু করেন এই বই লেখার কাজ। এখনও তিনি লিখেই চলেছেন এই বই।
স্কুলস্তর বা কলেজস্তরের সিলেবাস পরিবর্তন হয়। সিলেবাস পরিবর্তন হলে তিনিও তাঁর বইয়ের পরিবর্তন করেন ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার জন্য। অবসরের পরে ছাত্র-ছাত্রীদের এমন সহজ সরল বই উপহার দেওয়ার জন্যই এখন তিনি রাজ্যজুড়ে 'অঙ্কের দাদু' নামে পরিচিত।