একের পর এক দুর্নীতির মামলা হাতে। আর, তার কয়েকটি শিক্ষা এবং শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে। এই পরিস্থিতিতে মাস্টার স্ট্রোক দিল সিবিআই। বেশ কিছুদিন ধরেই মামলাগুলো চলছে। এই পরিস্থিতিতে জাল গোটাতে মরিয়া সিবিআই আধিকারিকরা। তাই এবার মামলার যাবতীয় ফাঁক ভরাট করতে তাঁরা উঠেপড়ে লেগেছেন। ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে গোপনে তাঁরা নানা জায়গায় অভিযান চালাচ্ছেন। শুক্রবার রাতে এমনই এক অভিযান চলল সল্টলেকের বিকাশ ভবনে।
বাম আমল থেকেই রাজ্যের শিক্ষা এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে নিয়োগ থেকে নানা ব্যাপারে সল্টলেকের এই বিকাশ ভবনের গুরুত্ব অপরিসীম। একের পর এক দফতর রয়েছে এই বহুতলে। শুক্রবার রাতে গোপনে সেখানেই হানা দিলেন সিবিআই আধিকারিকরা। গাড়ির সামনে সিবিআইয়ের বদলে লেখা ছিল পুলিশ। ফলে, পুলিশের গাড়ি ভেবে কেউ সন্দেহও করেনি। আর, সেই সুযোগে কাউকে কিছু বুঝতে না-দিয়ে নির্দ্বিধায় বিকাশ ভবনে পৌঁছে যান সিবিআই কর্তারা।
ছোট একটি দল। রাত নেমে এসেছে। বিকাশ ভবনে কর্মরত বিভিন্ন বিভাগের কর্মীরা প্রায় সকলেই বাড়ি পৌঁছে গিয়েছেন। আর, গাড়ি থেকে নেমে সিবিআই অফিসাররা সোজা চলে যান ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোরে ওয়ার হাউসে। এই ওয়ার হাউস গোড়াতেই সিল করে দিয়েছিলেন সিবিআই কর্তারা। সেই সিল ঠিকমতো আছে কি না, তাঁরা দেখে নেন। এরপর সিল খুলে ঢুকে পড়েন ওয়ার হাউসের ভিতরে। বেশ কিছু নথি সেই ওয়ার হাউস থেকে নিয়ে, তাঁরা তা সিল করে দেন।
আরও পড়ুুন- নন্দীগ্রামেই মুখ পুড়ল শুভেন্দুর, কৃষি উন্নয়ন সমিতির ভোটে কুপোকাত পদ্ম
এরপরই আসে চমক। বিকাশ ভবন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার বদলে সিবিআই আধিকারিকরা সোজা চলে যান বিকাশ ভবনের পাঁচ তলায়। এখানেই রয়েছে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর ঘর। আর, তার পাশেই সচিবালয়। সেখানে হঠাৎ ঢুকে পড়েন সিবিআই আধিকারিকরা। নিজেদের পরিচয় দিয়ে এরপর তাঁরা রাজ্যের শিক্ষা দফতরের সচিবালয়ের একের পর এক কমপিউটার পরীক্ষা করেন। সেখান থেকে সংগ্রহ করেন নথি। জিজ্ঞাসাবাদ করেন রাজ্যের শিক্ষা দফতরের তিন জোন অপারেটরকে।
এরপর যাবতীয় নথিপত্র নিয়ে তাঁরা রাতের অন্ধকারেই বিকাশ ভবন ছেড়ে বেরিয়ে যান। কী করতে এসেছিলেন? কোন মামলার তদন্তের জন্য এসেছিলেন? লৌহকঠিন মুখে সাংবাদিকদের সব প্রশ্ন এড়িয়ে যান সিবিআই আধিকারিকরা। হাজারো প্রশ্নের পর তাঁরা সিবিআই থেকে এসেছিলেন, এইটুকু ছাড়া রা-কাড়েননি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। তদন্ত চলছে, এই মুহূর্তে সামান্য আঁচটুকুও যে তাঁরা কাউকে দিতে চান না, হাবেভাবে সেকথাই বুঝিয়ে দেন দুই সিবিআই আধিকারিক।