২০২৪ লোকসভা নির্বাচনকে লক্ষ্য রেখে ভারতীয় জনতা পার্টি সর্বভারতীয় স্তরে নয়া টিম ঘোষণা করেছে। নতুন কমিটিতে সহ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক পদে বাংলার কেউ স্থান পাননি। এমনকী সম্পাদক পদেও এই রাজ্য থেকে নতুন কেউ জায়গা পাননি। তিন বছর আগে সর্বভারতীয় সম্পাদক পদে বসেছিলেন ড. অনুপম হাজরা। এবারও সেই পদেই তাঁকে রেখে দিলেন জগৎপ্রকাশ নাড্ডা। দলের অন্দরমহলেই প্রশ্ন উঠেছে তাহলে এই রাজ্য থেকে সাংগঠনিকভাবে কেউ যোগ্য হয়ে ওঠেননি সর্বভারতীয়স্তরে দায়িত্ব নেওয়ার ক্ষেত্রে?
একসময় এই রাজ্য থেকে জাতীয় সম্পাদক ছিলেন রাহুল সিনহা। পরবর্তীতে একইসঙ্গে সর্বভারতীয় সহসভাপতি মুকুল রায় ও সম্পাদক পদে অনুপম হাজরার নাম ঘোষণা হয়েছিল। মুকুল রায় বিধায়ক হওয়ার পর তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। বিজেপি সর্বভারতীয় সহসভাপতি করে সাংসদ দিলীপ ঘোষকে। তার আগে দিলীপ ঘোষ দীর্ঘ দিন রাজ্য সভাপতি ছিলেন। ২০২১-এ টার্গেট নিয়েও এরাজ্যে ক্ষমতা দখল করতে পারেনি পদ্মশিবির। সর্বভারতীয় কর্ম সমিতিতে অনেকে এসেছেন চলে গিয়েছেন কিন্তু সাংগঠনিক বড় পদ পাননি বাংলার অন্য কোনও বিজেপি নেতা। অনুপম হাজরার নামও এবার সর্বভারতীয় সম্পাদক হিসাবে ঘোষণা করল বিজেপি।
২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে প্রবাসে থাকা বাঙালিদের কেউ কেউ এরাজ্যে ভোট ময়দানে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। তবে মাঠে-ময়দানে রাজনীতি যে কতটা কঠিন তা তাঁরা যথেষ্ট টের পেয়েছেন। রাজনৈতিক মহলের অভিমত, বঙ্গ বিজেপিতে এমন কেউ নেই যে নতুন কেউ সর্বভারতীয় স্তরে নাড্ডার সাংগঠনিক টিমে সুযোগ পেল না। স্বঘোষিত কেউ কেউ তো অমিত শাহ, জেপি নাড্ডার অতি ঘনিষ্ঠ বলতেও ছাড়েন না। তাহলে বঙ্গ বিজেপির কেউ নয়া সাংগঠনিক পদে স্থান পেলেন না কেন? তা নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে পদ্মশিবিরে।
আরও পড়ুন- পদ খোয়ালেও চর্চায় দিলীপ! ফিরছেন বঙ্গ রাজনীতিতেই? নাকি ঠাঁই মন্ত্রিসভায়?
অনুপম হাজরা গত ৩ বছর এমন কী কাজ করলেন যে তিনি ফের সম্পাদক পদে থেকে গেলেন? কেন বাংলার 'তাবড়' বিজেপি নেতাদের কেউ সেই সুযোগ পেলেন না? এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে বঙ্গ বিজেপির অন্দর মহলে। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, শুধু মাঠে-ময়দানে নয়, নানা ভাবেই সাংগঠনিক পদে থাকা নেতৃত্বকে কাজে লাগায় দল। দলের স্ট্র্যাটেজি ঠিক করাও অন্যতম কাজ। কীভাবে দল এগোবে তা পরিকল্পনা করার যোগ্য নেতারও প্রয়োজন হয়। সূত্রের খবর, শুধু দলের নয়, প্রধানমন্ত্রীর দফতরের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অ্যাসাইনমেন্ট নীরবে সামলেছেন অনুপম।
তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসা অনেকেই ঘরওয়াপসি করেছেন। মাঝে-মধ্যে কারও কারও ঘরে ফিরে যাওয়ার চর্চাও আকাশে-বাতাসে এখনও চলছে। যদিও অনুপম এই তালিকায় পড়েননি। অনুপম হাজরা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, 'আমার ওপর আস্থা রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও জেপি নাড্ডাকে ধন্যবাদ জানাই। তাঁদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আগামী লোকসভা নির্বাচনে দলের জয়ের জন্য শীর্ষ নেতৃত্ব যে ভাবে নির্দেশ দেবেন সেভাবে কাজ করব।' তবে বাংলার অন্য কেউ কেন কেন্দ্রীয় স্তরে দায়িত্ব পেল না? সে বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি অনুপম।