এসেছিলেন ন্যাটো জোটসঙ্গীদের উত্সাহিত করতে। তাঁদের সাহস জোগাতে। রাষ্ট্রনায়ক থেকে সেনানায়ক, সকলের সঙ্গে গুচ্ছের বৈঠকও করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। কিন্তু, তাঁর সফর চলাকালীনই পোল্যান্ড সীমান্তবর্তী লভিভ থেকে ভেসে এল ভয়াবহ বিস্ফোরণের শব্দ। এতদিন ইউক্রেনের কিয়েভ, মারিউপোলের মতো অন্যপ্রান্তের শহরকেই নিশানা করছিল রাশিয়া। সেই সব শহর লক্ষ্য করেই ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ছিল। যুদ্ধের ৩১ দিনের মাথায় তাদের হামলার সীমানা আরও বেড়ে লভিভে পৌঁছে গিয়েছে। এর আগে লভিভকে লক্ষ্য করে টুকটাক ক্ষেপণাস্ত্র অবশ্য রাশিয়া ছুড়েছে। কিন্তু, শনিবারের শব্দটাই বলে দিল, এবারের ক্ষেপণাস্ত্রে বিস্ফোরক পদার্থ বেশি ছিল। বিস্ফোরণের পর কুণ্ডলী পাকানো কালো ধোঁয়াকে আকাশ ঢাকতে দেখা গিয়েছে।
আর, এসব শুনেই পোল্যান্ড ছাড়তে হল মার্কিন প্রেসিডেন্টকে। ফিরে গেলেন আমেরিকায় নিজের বাসস্থান ওয়াশিংটনের হোয়াইট হাউসে। এর আগে পোল্যান্ডের ওয়ারশ-য় ম্যারিয়ট হোটেলে বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ইউক্রেনের বিদেশমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছাড়াও বৈঠকে কিয়েভের শীর্ষ আধিকারিকরাও ছিলেন। রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণের পর এই প্রথম তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ওয়ারশ-এর নারোডোয়ি স্টেডিয়ামে ইউক্রেনের শরণার্থী এবং শরণার্থীদের সহায়তাকারী স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গেও তিনি কথা বলেন। বিস্ফোরণের পর লভিভের প্রশাসনিক কর্তা ইগর জিঙ্কেভিচ সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন, লভিভের কাছে তিনটি শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটেছে। তিনি লভিভবাসীকে ঘর থেকে বাইরে বের না-হওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন- ইউক্রেনের পাশাপাশি অন্যত্রও যুদ্ধ ছড়ানোর আশঙ্কা, জাপানের জলসীমায় মহড়া রাশিয়ার
ইউক্রেন যুদ্ধে সরকারি হিসেবে গত ৩১ দিনে ১৩৬টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ইউক্রেনের সেনা এবং মিলিশিয়ারা অবশ্য রুশ বাহিনীর সঙ্গে প্রাণপণে লড়ে যাচ্ছেন। রাজধানী কিয়েভের বাইরে বেশ কিছুটা অঞ্চল ফের রুশ সেনার হাতছাড়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া কেবল ডোনেত্স্ক-এর মতো পূর্ব ইউক্রেনের কিছু অঞ্চলে নিজেদের গতিবিধি সীমাবদ্ধ রাখার চেষ্টা করছে। এমন জল্পনা ছড়িয়েছিল। কিন্তু, সেসব যে আসলে রাশিয়ার ছলনা, ফের তা বুঝিয়ে দিল শনিবার। লভিভের বুকে আছড়ে পড়া ক্ষেপণাস্ত্রই শুধু না। জাপানের জলসীমান্তে এক দ্বীপপুঞ্জে জোর করে সামরিক মহড়া শুরু করেও ইউক্রেন যুদ্ধকে কার্যত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের চেহারা দেওয়ার পথে শনিবার রাশিয়া এগিয়ে দিয়েছে।
Read story in English