পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ছাউনি লক্ষ্য করে সীমান্তে ভারী আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে রাতভর গুলিবর্ষণ করল আফগান জঙ্গিরা। সীমান্ত বরাবর এই হামলায় তিন জন নিহত হয়েছেন। শনিবার এমনটাই জানিয়েছে পাকিস্তান সেনা। পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্ত হামেশাই সংঘর্ষে উত্তপ্ত থাকে। শনিবার ভোররাতের এই ঘটনাই তার মধ্যে সাম্প্রতিকতম।
পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুর্গম উত্তর ওয়াজিরিস্তান অঞ্চলে সেনা ছাউনির দিকে জঙ্গিরা গুলি চালালে পালটা গুলিতে জবাব দিয়েছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর জওয়ানরা। পালটা গুলিতেও বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছে। তবে, হামলার ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে এখনও বিস্তারিত জানা যায়নি বলেই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে। সম্প্রতি আফগানিস্তানে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে জঙ্গিরা। তার মধ্যে উত্তর কুন্দুজ প্রদেশে শুক্রবার এক মসজিদে বিস্ফোরণ হয়। তাতে ৩৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে পাশেরই এক মাদ্রাসার বেশ কয়েকজন পড়ুয়াও আছে।
জঙ্গিদের এই ধারাবাহিক হামলা এখন আফগানিস্তানের তালিবান শাসকদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে। গত আগস্টেই আফগানিস্তানে ক্ষমতায় এসেছে তালিবান জঙ্গিরা। দীর্ঘ ২০ বছর আফগানিস্তানে কাটানোর পর তড়িঘড়ি যুদ্ধ বন্ধ করে মার্কিন এবং ন্যাটোবাহিনী আফগানিস্তান থেকে চলে যায়। সেই দিনই আফগানিস্তানের শাসন ক্ষমতা দখল করে তালিবান জঙ্গিরা।
ক্ষমতায় এসে নয়ের দশকের শেষের দিকের মতোই আফগানিস্তানে কঠোর ধর্মীয় বিধি চালু করেছে তালিবান। নিরাপত্তা নিয়ে অতিরিক্ত কড়াকড়ি শুরু করেছে। তা নিয়ে সাধারণ মানুষের অভিযোগের অন্ত নেই। কিন্তু, সেসব ছাপিয়েও তালিবান জঙ্গিদের এখন মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে ইসলামিক স্টেট অফ খোরাসান বা আইএস-কে জঙ্গি সংগঠন। তালিবান এবং পাকিস্তান সেনার ওপর লাগাতার হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে আইএস-কে জঙ্গি সংগঠনের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবারও আফগানিস্তানে ধারাবাহিক হামলা চালায় জঙ্গিরা। লক্ষ্য ছিল, আফগানিস্তানের সংখ্যালঘু শিয়া বাসিন্দারা। এই জঙ্গি সংগঠনের পাশাপাশি, তেহরিক-ই-তালিবান (টিটিপি), ইসলামিক মুভমেন্ট অফ উজবেকিস্তান (আইএমইউ), উইঘুরদের সম্প্রদায়ের সংগঠন ইস্ট তুর্কিস্তান ইসলামিক মুভমেন্ট (ইটিআইএম)-ও আফগানিস্তানে সক্রিয়। তার মধ্যে পাকিস্তান সেনা এবং তালিবানকে এখন সবচেয়ে বেশি ব্যতিবস্ত করে রেখেছে আইএস-কে এবং টিটিপি জঙ্গি সংগঠন। যারা গত কয়েকদিনের লাগাতার হামলার জন্য দায়ী বলে দাবি করেছে।
Read story in English